আপনি ভাবছেন কুকুর একটি শ্বাপদ, আমি কুকুরে যাবো না প্রত্যক্ষে। সিমোন দ্য বোভেয়ার ল্য দ্যজিয়েম সেক্সে স্তন্যপায়ীদের লিঙ্গ তারতম্য’র দুর্দান্ত জৈব ও মননগত কারণের সূত্রেও যাবো না। আমি শুধু মানুষের ভেতরের কুকুর নিয়ে খিল্লি করবো, থুড়ি মানুষের ভেতরে কুকুরের সবটা থাকলে তার প্রতিকূল দিক দেখবো (মার্ক টোয়েনকে পাশে না রেখেই কিছুটা)।
যন্ত্র ত্বরণের যুগে ‘কুকুর-মানুষ’ হয়ে উঠেছেন অ্যাটেনশনসিকার। কুকুরের মতোই মুখে আওয়াজ করে। লেজ নাড়িয়ে বিভিন্ন ছলাকলায় উন্নত প্রভুর সঙ্গ লাভ করতে চায়। প্রথমে বিনীত ও অল্প গতিতে, তারপর তীব্র লেজ নাড়িয়ে এহেন ‘কুকুর-মানুষ’ জাতে উঠতে চেষ্টা করে। ব্যক্তিগতভাবে প্রেম প্রত্যাখান করায় জুলুজুলু ভঙ্গিমার এ প্রকারের ‘কুকুর-মানুষ’র বিবর্তন দেখেছি। এখন এই ‘কুকুর-মানুষ’রা আবার কিছু মানবিক সংস্থার এজেন্ট হয়ে উঠেছেন। তাদের ঘেউ-এ মিশে গেছে কিছু মানবিক পদ্ধতির মিমিক্রি। খাদ্য ও বর্জ্য উভয় দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করে তারা। উন্মুক্ত যৌনতার প্রতি বেশ আকর্ষণ; এদিকে মানবিক সংস্থার এজেন্ট হওয়ায় তা প্রকাশ্যেও আনতে পারে না আবার! সহজ পন্থায় বিশুদ্ধ কুকুর হলেও তারা ভাল করতো, কিন্তু তা না হওয়ায় সমাজিক ভারসাম্য হারিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় ঝামেলা হচ্ছে, ‘কুকুর-মানুষ’রা সংকর; মানে কিছু পাওয়ার ইচ্ছে অবধি সে কুকুর আবার পাওয়া হয়ে গেলে সে মানুষ হওয়ার চেষ্টা করে। অবশ্যি ‘কুকুর-মানুষ’র স্তর ভেদ আছে। আমি প্রধানত এপাড়া ওপাড়া তাড়ানো অতিরিক্ত ঘেউ-ঘেউ এর ঘেঁয়ো কুকুরের কথাই বলছি। এখানে মহাভারতের কুকুর নয়, ‘কুকুর-মানুষ’ই আলোচ্য। অবশ্য প্রবাদে আছে কুকুরের কামড় পায়ের ওপরে ওঠে না, কিন্তু ‘কুকুর-মানুষ’র কামড়ের প্রতিষেধক এখনও বেরোয়নি। তাই তাদের থেকে সম্পূর্ণ কুকুর ও সম্পূর্ণ মানুষদের সতর্ক থাকা আবশ্যক!
২.
গোঁড়ায় গলদ থাকলে গাছ যে ঝুরি নামায় তাতে দোল খেতে পারে না অপোগণ্ডরা। আমরা দোল খাই চিরহরিৎ বনে। নকল দোল। বসন্ত আর শীতের সময় যজ্ঞরচনার জন্য কোনো ঋত্বিককে পাওয়া যায় না! ইতস্তত পাক্ষিক শক্তিকে দ্বিগুণ করে শরীরি অবকাশে স্বস্তি পাই। ওগুলো ছুটির দিন। প্রতিটা বিছানা রচনার থেকে ডিম্বনিঃস্রাব অবধি তারা কী বাঁচিয়ে চলছে নিধান! বন্ধুর গাড়ি থেকে নামলে আমার প্রথম বন্ধু দ্বিতীয় বন্ধুকে বলে- রাত হয়ে গেছে, ওকে একটু এগিয়ে দিস। যেন আমি ঘনঘোর তিলেপড়া জামাকাপড়, রোদ লুকিয়ে আছে বলে বর্ষাকে ভয়।
যদি কাউকে আরতির সময় ডাকি, সে আগুন না দেখে প্রদীপে তেলের পরিমাণ দ্যাখে। একটা সাত্ত্বিক আলো চাই যাতে পাপ পোড়ানো যায়। যার ছাইও থাকবে না, থাকবে না অবয়বও। এতোগুলো মানুষ প্রোটোন্যাপিক (যারা লাল রং চিনতে পারে না) অথচ পুরো দেশটার ট্র্যাফিক সিগন্যাল’ই লাল! এটাই গুরুচণ্ডালী। ভরাডুবির শনির দশায় গোঁজামিলে ক্বাথ খাচ্ছি। কুকুরেরা কাঁই কাঁই করছে, যদি অহি-নকুল সম্পর্করা যৌনবাহানায় গলা টিপে মারে! কিছু জীবের জন্য ঋতু নির্দিষ্ট থাকে। তারা অতি বলার মন্ত্র জানে না; তাই অসময়ে খেলে। কিন্তু মানুষকে শ্রেষ্ঠ করে সমস্ত ঋতু দিয়েছেন প্রভু। ভেবেছেন- এদের গুরু-লঘু দুই মস্তিষ্কই আছে; এরা কার্যকারণ ভাববে। মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে ক্ষমতাই অক্ষমতার নামান্তর। প্রতিটি মাস তাদের ভাদ্র হয়ে গেছে। প্রতি মাসে তারা টুপি পরাচ্ছে উষ্ণশোণিতকে। হ-য-ব-র-ল খেলছে বীজধান প্রকল্প নিয়ে। নিয়ামক উচ্চ রেখে নরম ঘাসের শরীরে বিঁধিয়েছে কান্না।
খিদের অভ্যাস পাচক রস আর পাকস্থলী দুটোকেই চরিত্রহীন করে দেয়। ও মানুষ, যখন রাস্তায় খিদে পায় তোমার, তোমার পাশে বসে কেউ খেলে তুমি কি খাবার কাড়ো? বাড়িতে গিয়ে হাত ধুয়ে প্লেট পেতে স্বীকৃত শান্তিতে খাও, তবে ধর্ষণ কেনো করো? ভোলগা থেকে গঙ্গা– এর চেয়ে অনেক এগিয়েছি আমরা। সুর পাবে, গার্হস্থ্যে পাবে সন্তানের মা, স্বীকৃত শান্তিতে। অপেক্ষা করো, শরীরে কেন এতো হতাশা!
এ বাতাস লুকিয়ে কাঁপছে, কেউ জানে না! ওরা এর ঘাড়ে ওর ঘাড়ে ওঠে কামনায়। ওরা তো অনুপাত শেখেনি। ওদের শব্দরা কেবল ঘেউ-ঘেউ তে আটকে। কিন্তু মানুষ তুমি তো শিখেছো অনুপাত। অনেক শব্দ তোমার, ‘বীজ’গণিতও তোমার’ই বিষয়। তুমি কেন তবে সব ঋতুতে ভাদ্র মাসের কুকুর?