হিন ও বিন
আমাদের তেঁতুল গাছে জিন
জিনের তেঁতুল গাছে হিন
হিনের তেঁতুল গাছে বিন।
তারপর আর কোনো গাছ নেই।
সেই (নেই গাছ) গাছের শেকড়ে ভালোবাসা
আর মগডালে আযাযিল ফেরেশতা।
আযাযিল ফেরেশতা
হিন ও বিনদের পৃথিবীতে মানুষ নামের ফেরেশতাদের বসবাস।
ওগো পৃথিবীর ফেরেশতারা!
আযাযিল ফেরেশতারা।
ডাব সমাচার
গুল্মলতা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অভিশাপ দেয়
ধরণির বুকে তাই ধুতুরা গাছ গজিয়েছে
ভেসে আসা নবজাতকের কান্না চাপা পড়ে যায়
মিকাইলের দায়িত্বপ্রাপ্তিতে।
মেঘের সাথে মেঘের ঘষাঘষিতে, কামে, মিলনে বৃষ্টি নামে
ধরণি ঘেমে নেয়ে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে।
ডাবগাছের ডাব গুনে রাখা হলে প্রতিদিন একটি একটি কমে
এ পাড়া পুষ্টিপ্রাপ্ত হয়।
ডাবগাছের সথে ঘুমিয়ে পড়া পৃথিবীর অনেক যোগসাজশ আছে।
আনন্দবাজারে দুর্গা পূজা দেখে এসো
কোনো এক প্রতিমার বক্ষদেশ ডাব দিয়ে বানানো।
গঙ্গাফড়িংয়ের দিন
সময়টা এমন ছিল যে
চলতি পথে মানুষজনের শরীরের ওপর বৃক্ষ পতিত হতো (সাইক্লোন এলে)
অন্তত বৃক্ষের ছায়া পড়ত। (সাইক্লোন না এলে)
গোল গোল রক্তচক্ষুদেখে কারোর ভয় লাগত না
সবাই বিকালের আকাশে একটি বিক্ষিপ্ত রক্তাক্ত আয়না দেখে অভ্যস্ত।
সে আয়না আজ গুম
দেবতারা নিজেরাই ব্যর্থ অপপ্রয়াসে লিপ্ত
ইতিহাস তাই বন্ধকি সম্পত্তি।
আমরা যারা প্রাচীনে পড়ে থাকি তো পড়েই থাকি
এখানে স্বপ্ন ভুল হলে মৃত্যুদণ্ড
শুকনো ফুল দেখে কারো রাগ হয়
ব্যাঙের সর্দি হয়।
একজন ফুলওয়ালার গল্প বলতে চাই
যার অনেকগুলো ফুল ছিল
ডায়েরিভর্তি শুকনো ফুল।
ফুলের স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়ে গ্যাব্রিয়েল প্রজাপতি নিয়ে জেগে ওঠে।
এ কারণে গ্যাব্রিয়েলের মৃত্যুদণ্ড হয়
এভাবে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বেঁচে থাকে
সাজা আর কার্যকর হয় না।
এখানে স্বপ্ন ভুল হলে মৃত্যুদণ্ড
শুধু মাস্টারবেশনে কোনো দণ্ড নেই।
নতুবা বাকিরা শব্দ পান করে একেকটি সেলফি হয়েছে।
হে মাবুদ, আমাদের সেলফি থেকে বের করে নিয়ে আসো
মুক্তি দাও।
আমরা ধানক্ষেতের আইলে গঙ্গাফড়িং পুষতে চাই।
মিনার্ভার আশীর্বাদ
পকেটে ছিল মিনার্ভার আশীর্বাদ
আর বোতলবন্দি জ্যোৎস্না।
জমে গেছে,
ছিপি খুললেই রাত।
যুদ্ধসাজ খুলে ফেলেছিল মিনার্ভা
বহু আগে,
শুধু আমার হাত ধরে
পূর্ণতা পাবে বলে।
তোমার চোখে আমলকী পানি দেখে
ভেবেছিলাম টলমল নদী।
ছেড়েছিলাম মিনার্ভার হাত।
বিচ্ছুরণ
বিচ্ছুরণ
বিচ্ছুরণ
আলোর বিচ্ছুরণে চলে গেলে রাত।
সাথে মিলিয়ে গেল
বোতলবন্দি জ্যোৎস্না ও মিনার্ভার আশীর্বাদ।
নদীর নাম কর্ণফুলী
পুনরুজ্জীবনের পথের সব সরণি স্থগিত
অগ্রগামী দলের হাতে আবেদনপত্রের সঙ্কলন।
গ্রামোফোনের গীত শেষ
তবুও অবশিষ্টাংশ হিসেবে বেজে চলে মধ্যবর্তী লয়।
প্রতীকীবাদীরা খুবই রেসিস্ট
পুরাতনের পাহাড় থেকে নেমে এসে পাগলামি করে।
আর বলে ‘সমুদ্রের গুঞ্জন’
আর নদীর নাম কর্ণফুলী।
আমাদের শুধু
ভদকা
মর্গের গীত
আর
ইলিশ মাছ,
প্লেটের ওপর পিৎজা,
আর আছে
প্রেমিকার সঙ্গে
প্রবঞ্চনাময় একটি সন্ধ্যা।
অফ দ্য রেকর্ড
বেছে নাও
সবুজ পাতার অন্ধকার,
সুরের একটি নদী
অথবা
উৎকট মাংসপিণ্ডের দাসত্ব।
অফ দ্য রেকর্ডে
অনায়াসে উত্তর দিতে পারো।
বাতাস নির্জনই থাকবে
শুধু আঘাতপ্রবণ তারাগুলো খসে পড়বে।
সুখে থেকো মাথিন
মাথিনের প্রেম কাহিনী শুনে আপ্লুত হয়ে পড়ে একদল বিষণ্ন তরুণ। তারা ধিরাজকে ধিক্কার দেয়। মাথিনের কূপের দ্বারে দাঁড়িয়ে নিচে উঁকি দেয়। সেখানে বিষণ্নতার হাসি। অথবা পুরনো অশ্রু। অথবা বহু বছর ধরে মাইয়োসিস কোষ বিভাজনের মতো করে বেড়ে গিয়ে সেখানে এখন গভীর জল। অথাবা কে জানে ভেতরটা হয়তো শুকনো।
আমরা প্রস্তরফলকে পড়তে থাকি মাথিনের প্রেম কাহিনী। সাথে ছিল প্রেমিক পুরুষ বাবলা। তার মাথায় এখন শুধুই মাথিন। রাখাইন রাজকন্যা। সে রাজকন্যার খোঁজে রাখাইন গ্রামে যায়। ফিরে আসে এক বোতল পাইং নিয়ে। তার কাছে বারবার পাইং হয়ে ফিরে আসে মাথিনের স্বপ্ন।
আমাদের মনে পাইং ভীতি ও মাথিনের প্রেম বহুকাল পরে পাহাড়ি চেহেরায় হাজির হয়।
সুখে থেকো মাথিন!
কামরুল রুমী
জন্মঃ চট্টগ্রাম জেলার পতেঙ্গায়, ১৯৮৯ এর ২১ এপ্রিল
‘ভ্যানিটি ব্যাগে জাফরান’ প্রথম কাব্যগ্রন্থ
প্রচ্ছদঃ রাজীব দত্ত
প্রকাশকঃ ফেস্টুন (লিটলম্যাগ)