ভালুক
আমার অ্যারোগেন্স থেকে জন্মাচ্ছে এক কালো ভালুক
আমি হাত বুলাচ্ছি তার লোমশ শরীরে
তার জিদের আওয়াজ লালামুখর—পৃথিবীতে ঝরছে
আমি তার দাঁতের শব্দ পাচ্ছি
সে ধীরে ছাড়ছে শয়ন
দুই পায়ে দাঁড়িয়ে মানুষের মতো
আমি তার শরীরে হাত বুলাতে বুলাতে নিজের মাংস প্রস্তুত করছি—
শুয়ে পড়ছি পৃথিবীতে।
মৃত্যু তার সমস্ত ক্লান্তি নিয়ে
একটা ছবি আঁকলাম
ছবিতে থাকলো গাছ ও পাখি, নদী আর পথ, হরিণ এবং হরিণী
ক্লান্তি আমার চিন্তা থেকে রটে গেলো ছবিতে
পাখিটা ক্লান্ত হয়ে গেলো গাছের নিকটে
হরিণ হরিণীর কাছে আর
পথ গেলো নদীর দিকে নিজেকে ডোবাতে
সবশেষে মৃত্যু আঁকার পর ছবিটা পূর্ণ হয়ে গেলো
গন্তব্য আঁকা হলো না আর—
ফলে মৃত্যু তার সমস্ত ক্লান্তি নিয়ে এলো আমার দিকে…
আব্বা
টাকা দরকার
আব্বাকে বললাম
গ্রাম থেকে টাকা পাঠায়ে দিলো
স্নেহ পাঠালো
ভরসা পাঠালো
যখন যা দরকার সবই পাঠালো
আব্বাকে দরকার হলো যখন
খোদাকে বললাম
কবর থেকে আব্বাকে পাঠালো না
বাপ না থাকা আমাদের শেখালো
বাপের মতো আপন খোদাও হয় না।
মউতের পর
মউতের পর শরীর থেকে একে একে খসে পড়লো দায়িত্ব ও দায়, আত্মীয়তার ভার, পিছুটান, লাজ আর লেহাজ, ব্যথা-বেদনা, আরাম;
পর পর মন্থরতা, একাকীত্ব, সকল নিদ্রাহীনতা। চোখের পানি শুকায়ে গেলো, উবে গেলো ভয়, সাহসও থাকলো না। এমনকি নিজের নাম!
মউতের পর এতকিছু ঝরে গেলো, খসে গেলো, পড়ে গেলো—অথচ ওজন কমলো কেবল একুশ গ্রাম!
টোয়াইলাইটে
গোধূলি এখানে
আসে ইংরেজি হরফে
তুমি টোয়াইলাইটে
নর্থ এন্ডে
তুমি স্মোকিং জোনে
বইসা আছো
হাতে সিগারেট
পাশে দেশলাই
অল্প খোলা
হা করে
তোমাকেই দেখতেছে
তুমি জ্বালাইতেছো না
যেনো যুদ্ধবিরতি
চলা চিরকাল
পাশের না
মোটামুটি দূরের
টেবিলটাতে
মেয়েটারে দেখে দেখে
ছেলেটার পাশে
নিজেই জ্বলে যাইতেছো তুমি…।
আবির আবরাজ
কবি ও অনুবাদক। কবিতা লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষার কবিতা এবং গদ্য অনুবাদ করে থাকেন। আবির্ভাব, ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ মধ্যরাতে কুমিল্লা জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে। প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র বই: হাওয়া গুমসুম, ফুটো না কুসুম। ধরণ- কবিতা, প্রকাশনী- বৈভব।