পাঁচটি কবিতা । ওয়াসিফা জাফর অদ্রি


পলিগ্যামি


অন্য প্রেমিকের দীর্ঘ চুমুতে,
তোমাকে মনে করে ফেললে—
সমস্ত মন খারাপ ফুলে ফেঁপে বিষফোঁড়া হয়ে ওঠে।
তুমি হয়ে ওঠো—
অক্টোবর। শিউলির জন্ম।
হাসনাহেনা। সাপের দুঃখ।

আমি খোঁপা বাঁধি না ব’লে
খোঁপার জন্য আনা
হাসনাহেনা—
সে বুকের ভেতর গুঁজে দেয়,
সে তোমারে আমার বুকের ভিতর গুঁজে দেয়।
এরপর সঙ্গমের অনুমতি দিয়ে
তোমারে বুকে নিয়ে, আমি মিশে যাই তার সাথে।


চক্র


দু’চারটা লোক
স্যান্ডেল ছিড়লে
নতুন কিনতে
পারে না
বলে,
একটা মুচি
বাজার করে
বাড়ি ফেরে। 


বাবা কি ইঁদুর?


ইঁদুর আমাদের কাপড় কেটে ফেললে
বাবা ইঁদুর মারার বিষ আনতেন,
মা সাদা ভাতের সাথে সেই বিষ মাখিয়ে রাখতেন ঘরের আনাচে কানাচে।
বিষমাখা ভাত খেয়ে আধমরা ইঁদুরগুলো হাঁপাতো,
আর তাদের বুক এত জোরে ধুকধুক করতো
যেনো হৃদপিণ্ড বেরিয়ে আসবে এখনই।
আমি পানি নিয়ে দৌড়াতাম ইঁদুরের পেছনে,
ওদের পানি খাওয়াতে।

বাবা শেষবারের মতো অসুস্থ হয়ে পড়লে আর
তার বুক জোরে জোরে ধুকধুক করলে,
মনে হচ্ছিল যেনো হৃদপিণ্ড বেরিয়ে আসবে এখনই।
মা পানি নিয়ে দৌড়াতে থাকে বাবার পেছনে
তাকে শেষবারের মতো পানি খাওয়াতে।

বাবা, তুমি কার কাপড় কেটেছিলে?


কোনদিন বৃষ্টির নাম ক’রে যদি রোদ ওঠে


আমাদের এই পলেস্তারা ওঠা বাড়িটা মন খারাপ নিয়ে, একা একা যে হেঁটে যাবে কোথাও, তারও উপায় নেই। এমন নিরুপায় সকালে, আকাশের বালিশ ফেটে বৃষ্টি পড়লে দেখি— মাটির কানের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে জল। এদিকে রোদ ওঠার নাম নেই বলে, একটা নাম উঠে বসে আছে মনের ভেতর।


মা সংক্রান্ত প্রশ্ন


১.

লোকেরা বলে—
নাক ঘামলে
স্বামী বেশি আদর করে।

এই যে রগরগে সূর্যের তাপে
আমার মায়ের নাক ঘামে,
আমার বাবা কোথায় আছে? 

২.

আমার মা খারাপ স্বপ্ন দেখলেই
আমার নামে সদকা দেন।

ভাবি—
তনু,
রাজন,
নুসরাত,
এদের মায়েরাও কি কখনো সদকা দিতেন?


 ওয়াসিফা জাফর অদ্রি

জন্ম : শীতকালে

শেয়ার