লেখা
একদিন ঠিক নিভে যাব
রক্তে ফুরিয়ে যাবে নীল কেরোসিন
ততদিনে তোমার হৃদয়
হয়ে যাবে বিকল ইঞ্জিন
মানুষ অভ্যস্ত হবে
বলবে না আমাদের কথা
খোঁপার কাঁটাও খাবে কীটে
গাছেরা পাবে না আর লতা
নদীতীরে স্মৃতির মেয়েটা
লিখে যাবে এটা ওটা সেটা
লিখে যাবে এটা ওটা সেটা?
পিপাসা
হে রাহুগ্রস্ত ফল, যদি ভুল না করি, জেনো আমি তোমাকে পাড়িনি। ঝরেছো একাই। আমি অমৃত প্রত্যাখ্যানকারী, জানি, অবতার কখনো ফেরান না। মানুষ ফেরান। তাঁরা হাত নেড়ে চলে যান ঋতুপিপাসার দিনে। তবু হে যুবক, আজ বিকেলে আমার গান বেসুরো হলো। নদীপাড়ে গোলাপ শুঁকলো বিপত্নীক কুকুর। বালুচরে মরা ঘাস ওৎ পেতে ছিলো। আমি পিছলে যাবো, আর তুমি, হে যুবক, যদি না হৃদয়ে ফোটাও ভাবফুল, তবে নিশ্চিত তুমি ছিটকে যাবে, শিশ্নসমেত
ঠিকানা
তোমাকে ফিরে পেতে টিভিস্ক্রলে বিজ্ঞাপন দেবো
পৌঁছে যাবে গ্রামে গ্রামে, হৃদয়ে, মেশিনে
হয়তোবা খুঁজে পাবো
তোমাদের বাড়ি যাবো
বালি সাঁতরিয়ে, নদী সাঁতরিয়ে
তোমার বাবা মসজিদে যাবে, মা থাকবে বাড়ি
তিনিও তো নারী
তাই যাবো, ঘুঘুডাকা দুপুরে একদিন
ঠিকানা খুঁজছি, কেউ এসে বলে যাক
টিভিস্ক্রলে বিজ্ঞাপন দিন
বৃন্দাবন
সে জানে কখন যাবো
তাই
আমি আর ওই পথে নাই
আমার কূলের নদী কুলকুল ধ্বনি দিয়া
আমারে বললো, আইসো গো হিয়া
পাছে
আমি ধরা পড়ি পিরিতের দড়ি
যাবোক যাবোক না তার
কাছে
আমারে ডাকিছে বৃন্দাবন
ও লো
পাখি ডাকে ফুল ডাকে ডাকে ঘন বন
ভায়নার মোড়
যে কোনো বর্ষায়
ধীর পায়ে হেঁটে যাই
ভায়নার মোড়ে
মানুষের নখ দেখি
মানুষের চোখ দেখি
শিশুদের ঘোরে
তবুও যশোরগামী বাস থামে না তো
শ্রেণিহীন ঈশ্বর
রাত যায় আসে ভোর
আড়তের কোণে
জলহীন গাঙে কেউ
এনেছে তুলেছে ঢেউ
যেচে রাধামনে
কুমারের জল কালো কেউ বলে না তো
কবর
মনে পড়ে তোমার কবরে
রক্তজবা লাগিয়েছি, প্রীতম
আমার
সেদিন হয়তো ছিলো দাঁড়কাক
ভুলভাল বেলনগরের রোদক্লান্ত ঝিলে
আমরা দুজন মিলে
না-বুঝেই রেখে গেছি আমাদের চোখ
কোথাও দৃষ্টি নেই
আর
এতোটা প্রকাশ্য পরপার
সারারাত ঘন চুল ভিজে যায় জলে
জল
ফুরিয়ে যাবার আগে মেঘ
নিজেরাই হাতাহাতি করে,
আমরা বৃষ্টি দেখি শুধু
ভাবি না বিবর্ণ জল
কেন থাকে জলের ভেতরে।
জলের ভেতর জল, জলের শরীর
জলের বাইরে জল, জলের বাহির
এতো জল কোথা থেকে আসে?
যদি না বাড়াও হাত হৃদয়ের মতো
না-ছোঁও শূন্য ও ঘাসে?