দিঅনে আরবুস : অনাম্নীর ছায়া শিকারী ।। মাহমুদ আলম সৈকত

[২০১২ সালে প্রকাশিত জার্নাল ‘হিস্টোরি অব ফটোগ্রাফি’ -তে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে “The obsessive, self-indulgent, no-holds-barred quality of Diane Arbus’s life, and the helpless, desperate nature of her death, have led to the photographer’s being portrayed as a spectacularly flawed shooting star of photographic history’’.’তিনি আলোকচিত্রী দিঅনে আরবুস। জন্ম ১৯২৩, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইঅর্ক সিটির এক ইহুাদি পরিবারে। ১৯৪১-এ আলফ্রেড স্টেইগ্লিৎস (খ্যাতনামা মার্কিন আলোকচিত্রী)-এর গ্যালারিতে আলোকচিত্রের এক প্রদর্শনীতে আসেন দিঅনে। সেখানেই তিনি এই শিল্প মাধ্যমটির প্রেমে পড়ে যান। আলফ্রেডের হাত ধরেই পরিচিত হন ম্যাথু ব্রডি, টিমোথি ওসুলিভান, পল স্ট্রা-, বিল ব্রাট, ইউজেন এটগেটের মতোন প্রথিতযশা আলোকচিত্রী এবং তাদের কাজের সাথে। ১৯৪৬-এ এসে দিঅনে আর তাঁর স্বামী এলান আরবুস মিলে শুরু করেন ‘দিঅনে এ- এলান আরবুস’, মূলত আলোকচিত্রভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে বেশক’টি স্বনামধন্য পত্রিকার জন্য, উল্লেখযোগ্য  ‘ভোগ’, ‘গ্ল্যামার’, ‘সেভেনটিন’ ‘হারপারস বাজার’ ইত্যাদি। ১৯৫৫ তে এডওয়ার্ড স্টেইসেন ‘ফ্যামিলি অব ম্যান’ শির্ষক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। সেখানে দিঅনের একটি আলোকচিত্র স্থান পায় যেটি একঅর্থে ইতিহাস সৃষ্টিকারী। বলা হয়ে থাকে, ওই একটি ছবিই দিঅনে আরবুসের স্বরূপ তুলে ধরে। ধীরে ধীরে স্বকীয় ও স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে থাকেন দিঅনে। শেষতক খুঁজে পান তাঁর কাজের সিগনেচার ধারা। দিঅনে প্রেমে পড়ে যান সমাজের প্রান্তিক এক জনগোষ্ঠির প্রতি, যাদের আমরা ‘বামন’, ‘অতিকায়’, ‘পৃথুলা’, ‘ভাঁড়’, ‘নগ্নতাবাদী’, ‘তৃতীয়লিঙ্গ’, ‘সমকামী’ নামে চিনে থাকি। ভাবনায় এবং আলাপনে স্বীয় আলোকচিত্র বিষয়ক দর্শনের প্রকাশ করে গেছেন সবসময়। যেখানে আলোকচিত্রের খুটিনাটি বা টেকনিক্যাল বিষয়ের চাইতেও বেশি প্রাধান্য পেত আালোকচিত্রের বিশাল জমিনে দর্শনজাত চিন্তা যা মূলত প্রান্তিক মানুষজনদের কাছ থেকেই তিনি পেয়েছিলেন। মজার বিষয় হল জীবদ্দশায় দিঅনে’র আলোকচিত্রের একটিও প্রদর্শনী হয়নি। অথচ তাঁর মৃত্যুর অব্যবহিত পর হতে শুরু করে এই সেদিনও ২০১৪ সালেও তাঁর আলোকচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছে বিশ্বের সব নামিদামী গ্যালারিতে। এছাড়াও তাঁর তোলা আলোকচিত্র শোভা বাড়াচ্ছে টোকিও, প্যারিস, মাদ্রিদ, মিউনিখ, টরেন্টো, লস এঞ্জেলস, ফ্লোরিডা-র মতন বড় বড় শহরের বিখ্যাত সব সংগ্রহশালায়।  যা-ই হোক, তাঁর সময়ের আলোচিত এই শিল্পী’র শেষটা অবশ্য বেশ যাতনার। ১৯৬৮ সালের শেষের দিকে এসে তাঁর শরীরে হেপাটাইটিসের লক্ষণ ধরা পড়ে। এর ফলে তিনি অত্যধিক বিষণ্নতায় ভুগতে শুরু করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই নিজের শরীরে প্রাণঘাতী বারবাচুরিয়াস ড্রাগ পুশ করেন, পাশপাশি রেজর দিয়ে ফিনকি কেটে ফেলে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুতিথিতে তাঁকে স্মরণ করছি তাঁরই কথামালা দিয়ে।]

 

ফটোগ্রাফি বিষয়ক আপনার ভাবনার কথা জানতে চাই শুরুতেই।

ফটোগ্রাফি একটা দুষ্ট প্রকৃতির বিষয়, আমি বরাবর এমনই ভেবে এসেছি। ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে এই ভাবনাটাই আমার সবচে প্রিয়। প্রথম ছবিটা তোলার পরই বেশ দুষ্টুমি ভর করে আমার ভেতর। আলোকচিত্র এমন গোপন এক বিষয় যা গুপ্ত কোনও কিছুর কথা বলে। ও আপনাকে যতটা বলে আপনি তার চাইতেও কম জানেন। ফটোগ্রাফি করতে এসে এই উপলব্ধিটি আমাকে সহসাই তাড়িত করে, যে, আপনি যা দেখতে চাইছেন তার সব কিছু একটা আলোকচিত্রে পুরে দেবেন না বা উল্টো বললে যে আলোকচিত্রটি আপনি পাবেন সেটি আপনার ভাবনার মতন নয়। সবসময়ই আমার মনে হয়েছে আলোকচিত্র যেমন একটি ঘটনার সাথে লেনদেনের ব্যাপার, চলচ্চিত্র তেমন কথাসাহিত্যের সাথে জড়িত। আলোকচিত্র সবসময়ই সত্য কেননা ক্যামেরা বস্তুটি নিতান্তই অবাধ্য। আপনি যা তুলতে চাইবেন ও হয়তো অন্যকিছু তুলে বসে।

আলোকচিত্রের ভূবনে আপনি যেসময় পা রাখেন তখন তো বিষয়আশয়গুলো ততটা অনুকূলে ছিলনা।

ছবি তোলা হল অনেকটা নিশুতি রাতের রান্নাঘরে গড়িমসি করা বা দোটানা’র মতো, ফাঁকতালে ওরিও কুকিজ চুরি করার মতো। ক্যামেরার একটা শক্তি আছে। মানে সবাই জানবে আপনি একটি চূড়ায় অবস্থান করছেন। তারা ভাবে আপনার হাতে জাদু’র মতন কিছূ আছে।

ছবির বিষয়ের সাথে আপনার যোগাযোগ ঘটে কিরূপে?

ধরেই নি-ই কোনও একটা বিষয়ে আমি খুব জানতে আগ্রহী, তবুও কাউকে এটা বলা বেশ কষ্টকর Ñ ‘আমি আপনার বাসায় আসতে চাই, আপনার সাথে কথা বলতে চাই। আমি চাই আপনি আপনার জীবনের ঘটনাগুলো আমাকে সবিস্তারে বলুন।’ লোকজন ঠিকই আপনাকে পাগল ঠাওরাবে। পাশাপাশি তারা নিজেদের কঠিন বর্মে ঢেকে ফেলবেন। কিন্তু ক্যামেরা অনেকটা লাইসেন্সের মতো। অনেকেই আছেন, যারা তাদের প্রতি অখ- মনোযোগ দাবী করেন এবং আমি মনে করি এটা যৌক্তিক দাবী।

আপনার নিশ্চয় ছবি তোলার নিজস্ব করণকৌশল আছে। সেই কৌশল কিভাবে আয়ত্ত্ব করলেন বা সেটা আপনাকে কিভাবে পরিচালনা করে?

আমাকে পরিচালনা করে কোন কোন বিষয়…উম…কৌশল বলতে কি বোঝায়…এটা এক রহস্যময় নিতল থেকে আসা। মানে ধরুন, ছাপার কাগজ বা ছবি ডেভেলপের সাথে এর সংযুক্তিতা আছে হয়তো তবে বেশিরভাগ সময়ই এটা কারুর গভীর নির্বাচন প্রক্রিয়া বা দীর্ঘদিনের অভ্যাসের ফসল যার জন্য তার অপেক্ষা সুদীর্ঘ সময়ের এবং যার অণে¦ষায় সে সবসময় তাড়িত। আপনার অগোচরেই কিছু কিছু ছবি এমন তোলা হয়ে যায় যা সম্ভাব্য অক্রমণাত্মক। পরে যা পদ্ধতিরূপেই দেখা দেয়। ফলে খারাপ বা বাজে ছবি তোলাটাও জরুরি। আপনি এমন একটি ছবি তুলবেন যা এর আগে কখনওই তোলেননি-এই ভাবনা বেশ বদখত। বাজে আলোকচিত্রের বেলায় কি হয়? আপনি যখন দ্বিতীয়বার ওটার দিকে তাকাবেন তখন আপনার মনে হবে, আপনি স্বীকার করতে বাধ্য হবেন- আরে! এ-তো আমার চেনাজানা। আলোকচিত্রের ক্ষেত্রে আলটপকা কাজ করতে আমার ভাল লাগে। আমি সাজিয়েগুছিয়ে ছবি তুলতে পছন্দ করিনা। যদি কোনও বিষয়ের সামনে দাঁড়াই, তখন সেটাকে না সাজিয়ে নিজেকেই বরং গুছিয়ে নিই, তৈরী হয়ে নিই। উৎকৃষ্ট কম্পোজিশন বলতে কি বোঝায়…আমি সত্যিই জানিনা। কখনও মনে হয় মাপ মতন উজ্বলতা থাকলেই সেটা একটা বেশ কম্পোজিশন, কখনও মনে হয় উচাটন থেকে উদ্ভূত কোনও আভা, কখনও মনে হয় নিছক হাসতেখেলতে ভূল করাটাই কম্পোজিশন। মানে, এর সাথে সঠিক বা বেঠিক জড়িত। কখনও আমার ‘সঠিক’ পছন্দ হয়, কখনও ‘বেঠিক’-ই আমার কাছে আরাধ্য।

আর বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে?

চীনারা একটি তত্ত্ব মানেন, সেটা হল, আপনি একঘেয়েমির সময়টা মূলত মোহে কাটান এবং আমি মনে করি কথাটা সর্বৈব সত্য। একটা বিষয়ের কি মানে বা আমার জন্য তা কি অর্থ বহন করে – এসব দিয়ে আমি কখনওই বিষয় নির্বাচন করিনা। আপনাকে কেবল একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে – সেই বিষয়ে আপনার ভাবনা কি, এর মানেই বা কি এসবই কোনও একটি বিষয়ের দৈবচয়ন করার পরের ভাবনা। আমি কখনওই কোনও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ছবি তুলিনি। হয় সেগুলো খুব উৎকৃষ্ট কিছু হয়েছে নয়তো একেবারে বাতিল মাল। আমার কাছে ছবি তোলার চাইতে ছবির বিষয়বস্তু অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল। ছবি ছাপানো বা ছাপানোর জন্যই ছবি তোলার একটা অনুভূতি কাজ করে বটে তবে সেটাই আমার মোক্ষ নয়। কোনও একটা কিছু যেখানে খোঁজার কথা লোকজন সেটা সেখানে না খুঁজে অন্য কোথাও খুঁজতে লাগে এবং লোকজন মূলত এভাবেই বিষয়কে অবলোকন করে। ধরুন আমরা রাস্তায় কাউকে দেখলাম, এখন আবশ্যিকভাবেই আমরা সেই মানুষটির ত্রুটি খুঁজে বার করার চেষ্টা করি।

তাহলে দৈবচয়নের বাইরে যেসকল বিষয়বস্তু চিত্রায়িত হয় বা যারা চিত্রায়িত করেন, সেসবের কাঠামোশৈলী নিয়ে আপনার আপত্তি?

ছবি তোলার জন্য বিষয় বা প্রকল্প  নির্বাচন করাটা বিদ্রুপাত্মক। অধিকাংশরাই এই বিদ্রুপটি ঘটিয়ে ফেলেন। এড়িয়ে যাবার জো নেই। কাঠামো, বিস্তার, তাৎপর্য…আমি কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছেন! কোনও একটি বিষয় আমার কাছে কি মানে বহন করে সেটা দিয়ে আমি কখনওই বিষয় নির্বাচন করিনা, করব না। দৈবচয়নের পর যে বিষয়টি আমার কাছে ধরা দিল, তারপর থেকেই শুরু হয় বিষয়টি নিয়ে আমার অনুভূতি, কি মানে দাঁড়ায় ইত্যাদি।

কোনও একজন আলোকচিত্রীর আলোকচিত্রের স্বীয় ভঙ্গিমা দাঁড়ায় যেভাবে…

উদ্ভাবন অধিকাংশ সময়ই সূক্ষতম ব্যাপার…অনিবার্য বিষয়। মানে, এটি আপনার কাছে প্রকৃতিগতভাবেই আসা, আপনার আত্মপরিচয়। আমাদের সবারই সেই পরিচয়টি বর্তমান। একে আপনি এড়াতে পারেন না। আপনার কাছ থেকে একে একে যখন সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া হবে তখনও কেবল এই একটি বিষয়ই আপনার সঙ্গে থাকবে। আমি মনে করি, অন্যকে মূল্যায়ন করার সময় এই অসম্ভব সুন্দর আবিষ্কারটির কথা আমরা ভাবিই না। যে জিনিসটা জানা গুরুত্বপূর্ণ সেটি আপনার কখনওই জানা হবেনা। আপনি সবসময় উপলব্ধির যাচাইবাছাইয়ের মধ্যে আছেন। আত্ম-প্রবঞ্চনার চাইতে সহজ আর কিছু হতেই পারেনা। প্রতিটি মানুষই আশা করেন যে তিনি যা বিশ্বাস করেন তা-ই সত্য।

আপনার ক্ষেত্রে?

খুব অল্প বয়সেই আমার ভেতর একটা ধারণা গেঁথে গিয়েছিল, যে, এইমাত্র আমি যা বললাম তা পরমুহূর্তেই মিথ্যায় পর্যবসিত হল। এই ভাবনাটা তাড়ানোর আগপর্যন্ত আমাকে প্রায় উন্মাদ করে ফেলত। যদিও আমার এখনকার ভাবনাও এর কাছাকাছিই। সেটা এই, যে কোনও কাজ একবার করে ফেলার পর আপনি অন্য কোথাও যেতে চান। যা পড়ে থাকে তা কেবল চাপা অনুভূতি। আমি কখনও যেখানে যাইনি সেখানে যাওয়াটাই আমার সবচেয়ে প্রিয়।

আলোকচিত্রের বিষয় হিসেবে মানুষ বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বেছে নেওয়ার কারণ?

মনে আছে, ফটোগ্রাফিতে যুক্ত হওয়ার শুরুর দিকে ভাবতাম, সারাবিশ্বে এতোশত দুঃখভারাক্রান্ত মানুষ যাদের সবার কষ্টকে ফ্রেমবন্দী করাটা এককথায় ভয়ঙ্কর। ফলে মানবিকতাকে সাধারনীকরণ করে ফেলে যদি ছবি তুলি তাহলে সেটার একধরনের গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হবে। ব্যাপারটা ওই কমন ম্যান বা ওরকম কিছু একটার মতো। শেষতক আমার গুরু লিসেত্তে মডেল আমাকে এই বিষয়ে খোলাশা করেন। তিনি বলেন – তুমি যতো স্বতন্ত্র হবে, ব্যাপরটা ততই সার্বজনীন হবে।

বিষয় হিসেবে বামন, দৈত্যকায়, তৃতীয়লিঙ্গ, নগ্নতাবাদী, সার্কাসের ভাঁড় বা অভিনেতাদের বেছে নেওয়ার কারণ কি এটাই?

কিম্ভূতদের বেশকিছু ছবি তুলেছি আমি। বস্তুত শুরুই হয় ওদের ছবি তুলে তুলে, তখন সেটা তুরীয় আনন্দের মতোই ছিল। বলা ভালো ওদের পূজো-আর্চা শুরু করি, যাদের কারো কারোর প্রতি অনুরাগটা এখনও তেমনি। তবে ওই বিষয় থেকে সরে আসার পেছনেরর কারণটি এই নয় যে ওরা আমার ভাল বন্ধু। কারণ এই, ওদের সাথে চলতে চলতে লজ্জা ও ভয়ের একটা মিশ্রণ আমাকে ধীরে ধীরে কুড়ে খাচ্ছিল। দেখুন অধিকাংশ মানুষই জীবনভর ক্ষত পুষে বেড়ায়। কিন্তু কিম্ভূতদের জীবন শুরু থেকেই ক্ষতপূর্ণ। জীবন পরীক্ষায় তারা ইতমধ্যেই পাশ দিয়ে ফেলেছে। ওরা অভিজাত, বটেই।

এই জনগোষ্ঠী আপনাকে কতটা টানে?

বিষয় হিসেবে খুব কম মানুষই আছে, চেনা বা অচেনা যারা আমাকে ছবি তোলার জন্য টানে। আমি বরং মুগ্ধ হয়ে তাদের কথা শুনতে ভালবাসি।

ছবি তোলার ক্ষেত্রে আপনার অনুপ্রেরণা?

আমি আমার আলমারি থেকে অবিশ্বাস্য শক্তি পেয়েছি। অনিষ্টকারী শক্তি নয় বটে…আমি যাদের ছবি তুলেছি, তাদের মধ্যে যারা মারা গেছেন এবং যাদের আর কখনওই আগের মতো দেখাবেনা, কেবল এই অনুভূতি। ক্যামেরা খুবই নিষ্ঠুর বস্তু, ফলে আমি আমার বিষয়ের সাথে ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছি। আলোকচিত্রে যা ধরা পড়েনা তেমন বিষয়গুলোর প্রতি ইদাংনী আমার বেশ প্রেম জেগেছে। এক প্রকৃত শরীরবৃত্তিয় অন্ধকার। পুনরায় আধাঁরের দেখা পাওয়া সত্যিই আমার কাছে রোমাঞ্চকর। এইপ্রসঙ্গে যোগ করি ভেতরে ভেতরে যা-ই থাকুক না কেনো নিজেকে সবসময় বিজয়ীরূপেই ভাবুন। এমনকি আপনি যদি পিছিয়ে পড়াদের দলেও থাকেন, নিয়ন্ত্রণের টেকসই আদল আর আত্মবিশ্বাস আপনাকে বিজয়ের আস্বাদই দেবে।

নিজেকে যেভাবে মূল্যায়ন করেন।

বাচ্চা বয়েসে আপনার মা আপনাকে বলে – গরম কাপড় গায়ে চাপাও নয়তো ঠাণ্ডা লেগে যাবে। আপনি যখন বড় হয়ে গেলেন, বুঝতে পারলেন ঠাণ্ডা লাগল কি লাগলনা এবং এর উপর ভিত্তি করে গরম কাপড় শরীরে চাপানোর অধিকার আপনার আছে কি নাই। যা বলা হয় তার কোন কিছুই সবসময় একইরকম মানে দাঁড় করায় না। আমার মনে হয় কোনও বিষয়ের গুনগত মান সম্পর্কে আমার ভেতর একধরনের অচেতন অবস্থা কাজ করে। ব্যাপারটা আমার জন্য যুগপৎভাবে সূক্ষ এবং লজ্জাজনকও। কিন্তু আমি সত্যিই বিশ্বাস করি এমন কিছু বিষয় আছে যা যতক্ষণ পর্যন্ত না ক্যামেরায় ধারণ করছি ততক্ষণ পর্যন্ত অন্যকেউ সেটার স্বাদ নিতে পারবেনা। আমি যা করতে চেয়েছি বা যেখানে যেতে চেয়েছি…ফটোগ্রাফি ছিল তার অনুমতিপত্র।

শেয়ার