অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৫ এ জাগতিক প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে অদ্বিত অদ্রি অনন্ত-র কবিতাগ্রন্থ কফির বয়াম। প্রচ্ছদবিন্যাস করেছেন কবি নিজেই। ২৫% ছাড়ে মূল্য ২২৫ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা বইমেলা, জাগতিক, স্টল ৫৫১-৫৫২ এ।
কফির বয়াম থেকে পাঁচটি দানা
স্বপ্নপ্রবণ
এই যে, আমার নিকটবর্তী নারীর চিন্তা;
জেনে রাখুন, আমি কল্পনায়ও বিশেষ দক্ষ।
ফ্যান্টাসাইজড মেঘ আমি রাতের বেলায়ও আনতে পারি।
বৃষ্টি যদি দ্যাখেন; মিরর ইমেজ দেখতে পাব। আর;
চোখগুলো প্লিজ খোলা রাখবেন, স্বপ্নপ্রবণ দৃষ্টি যাবে।
বৃষ্টি যেদিন নামবে, নাম বলে দেই কাদের কথা ভাববেন ?
বারান্দায় এসে দাঁড়ালে সেই সুযোগ হতেও পারে।
কবিতা পড়েন না, কবিতা হয়ে স্বশরীরে
হেঁটে বেড়ান ঢাকা শহরে।
হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে
হাঁটা থামাবেন প্লিজ; নতুন কোনো ছন্দ দেওয়া যাবে।
ফ্যান্টাসাইজড দূরত্ব আমি কমায়ে রাখতে পারি
তাই দূরত্বে গেলেও কাছে আসবেন ঠিক।
এই কথাটা মনে রাখবেন।
আজকে ঘুম থেকে উঠবেন, স্বপ্নদৃশ্যের এইসব উদ্ভট কথা
আপনার মনে থাকবে ঠিকই।
আপনি আমাকে খোঁজার আগেই
এই যে, আমার নিকটবর্তী নারীর চিন্তা;
জেনে রাখুন,
আপনি কল্পনায়ও বিশেষ দক্ষ।
নৌকাডুবি
জুন মাস। তীব্র গরম। অসহ্য সকাল…
ঢাকা শহরে আমার যে ব্যক্তিগত বারান্দা— তার কোলে
একটা শিশু-রোদ বসে আছে।
আমি ঠিক তার পাশে এসে বসলাম আর ভাবলাম
প্রাক্তন সকল বৃষ্টির কথা। ফলে, একটা বৃদ্ধ-বৃদ্ধ রোদ
আমার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে দৃষ্টি—
ভাবল শঙ্কার যত মেঘ।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। স্ত্রীর পাশে এসে বসলাম।
বললাম চলো ঘুরতে যাই। সে বলল:
জুন মাস। তীব্র গরম। অসহ্য সকাল…
আমি ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম। ভাবলাম—
ফেলে আসা সেই নদীর কথা; যার গায়ে আমরা
নৌকা ভাসিয়েছিলাম—
মধ্যনদীতে ডুববে না ভেবে।
বৈবাহিক, ডিস্টোপিয়া
যৌথ-আচরণের জীবন হেলেছে ডানে; সামান্য
তরিকায় খরচ ক’রে অঙ্গের খুচরা স্বভাব—
জেনেছি সাবান যে-গতিতে ফুরায়; তার তুলনায়
বেডরুমে হয় কচ্ছপের ক্ষয়।
মূক হয়ে বসে থাকি শূন্যসমান…
গানের কাছে গিয়ে চুপ ক’রে থাকা প্রাণ
গানের গা-ঘেঁষা সে মাত্রই মূক; দৃশ্যমান যা-কিছু
কখনো প্রতিধ্বনির মতো একবার ডুবে
ভেসে ওঠে বিচ্ছিন্নতায়
পুনঃ ও পুনঃ, রায়ে।
চুক্তির চ্যুতি-বদ্ধতার গ্যাপে—
অঙ্গের সরল ভঙ্গি জনিত ত্রুটিতে
জীবন হেলেছে ডানে; সামান্য
ঘাড় কাত ক’রে হেঁটে চলেছে
জোড়াতে নর-নারী।
আশ্চর্য ল্যানটার্ন
কীভাবে তোমাকে বলি
ইদানীং কেমন চিন্তা করি—
নতুন কোনো গান আবিষ্কারের পর
কীরকম বোধ হয় আমার!
ফাঁকা ট্রেনের জানালায় পা ঝুলিয়ে
বসে থাকে ছেলে
ধরে নাও আমি— তোমাকে দেখাব ব’লে
বিবিধ দৃশ্যের অন্তর্গত থাকি।
অথচ তোমার চোখে ধুলো দিয়ে উড়ে গেছে স্মৃতি— অন্তর্ভেদী দৃষ্টির আদিম ক্ষমতাবলি।
একটা আশ্চর্য ল্যানটার্ন নিভু জ্বলে আছে
দূরে; তার দিকে তাকিয়েই
আমাদের সকল ঘোর পরিচালিত হচ্ছে—
আমাদের কথা উচ্চারিত হচ্ছে অধিক
অজানা মানুষের মুখে।
হীনতা নিজেই এক স্বতন্ত্র অনুভূতি
শরীর নাই, ঘা আছে তবু অনেক;
বিচার-বিবেচনা আছে, যার আঙুলের আবার
আছে সুনিশ্চিত তাক্— অপরাধ নাই
দাগ আছে তবু অনেক।
ভ্রান্তি আছে, আছে মাছের মতো
পানিতে ছেড়ে দিলে অস্থিরতা;
কখনো কখনো ডাঙাও আছে— বালু নাই
পায়ের ছাপ
তবু কয়েকপ্রকারে আছে।
দুঃখ নাই, দুঃখের হীনতা আছে অতিরিক্ত।
অদ্বিত অদ্রি অনন্ত
জন্ম: জুন ১ ১৯৯৮, রাজশাহী। ঢাকায় থাকেন। পড়াশোনা ইংরেজি সাহিত্যে।