বিষয় যখন কুত্তার লেঞ্জা, তখন এই জিনিস নিয়া লিখতে বসার মানে যেন দাঁড়াইতেছে ত্যাড়ামি বিষয়ে আলাপ। কেননা, কুত্তার লেঞ্জা ত্যাড়া হয়। আর বলা হয় যে, তেল মাইখা হাজার বছর টানলেও ওই লোকের (কুত্তার) ত্যাড়া লেঞ্জা ত্যাড়াই থাইকা যাবে। তবে লোক হিসেবে কুত্তা ত্যাড়া টাইপ কিনা আমরা জানি না। তার লেঞ্জাই মূল ঝামেলা এই অর্থে যে, তার ত্যাড়া লেঞ্জা এখন মানুষের কাছে ত্যাড়ামির সাদৃশ্যমূলক উপকরণে গিয়া দাঁড়াইছে। লোক হিসেবে কুত্তা মনিব অন্তপ্রাণ, তা আমরা সকলেই বিলিভ করি। প্রথমত, কুত্তার লেঞ্জা নিয়া আলাপ করবার ভয় এই যে, তাতে কুত্তারে আরেকবার নেতিবাচক দেখা হয় কিনা। আমাদের কারোর’ই তেমন ইচ্ছা নাই। বরং আমরা বলি যে, কুত্তার লেঞ্জা ত্যাড়া হইবার সুবাদে তারে বিশেষ ভালো লাগে দেখতে। দ্বিতীয়ত, ত্যাড়ামির আলাপ করতে চাইলে তা তো ত্যাড়ামি শব্দের ওপর ভর কইরাই করা সম্ভব। কুত্তার লেঞ্জা নিয়া আসা লাগে ক্যানো? তৃতীয়ত, আমার মনে হয় পৃথিবীতে মানুষের নাম-নিশানা না থাকলে কুত্তার লেঞ্জা তার সৌন্দর্য ও শৈল্পিক ভঙ্গি থুইয়া এমনভাবে ধরা দিতো না। তো, এই তিনটি অঙ্কের ভিত্তিতে আলাপ চালানো যায়। কুত্তার ত্যাড়া লেঞ্জা নয়, মানুষের ত্যাড়ামিতে ফোকাস দিয়া।
যাহোক, মানুষের ত্যাড়ামি প্রসঙ্গে ঢুইকা পড়ি। আমার ধারণা, ত্যাড়ামি মানুষের একটি প্রাথমিক ফিচার। যা না থাকলে সে ডিশমিশ হইতে থাকতো প্রতিনয়ত। সেই অর্থে ত্যাড়ামি একটি ভারসাম্যতা বিধানকারী ফিচার। ফলে তা ভালো এবং দরকারিও। কিন্তু কথা হলো, এই ভালো নিখাঁদ একজনের’ই ভালো, তার বেশি নয়। কেউ একজন ত্যাড়ামি কইরা মনস্তত্ত্বের খুব নিচে যে একটি মিচকানো সুখ অনুভব করবেন, তা আর অন্য কারো পাওয়ার কথা নয়। মানুষের এই স্বার্থপরতা সভ্যতার বিপরীত হবার ফলে ত্যাড়ামি একই সঙ্গে খারাপও। আর বোধকরি এ খারাপটাই ধর্তব্য। কিন্ত হায়, কুত্তার লেঞ্জার লগে ক্যানো উপমায়ন? এইখানে আইসাই কুত্তারে আন্ডার্মাইন্ড করবার প্রবণতা। যা বাঙালির মধ্যে বিশেষ ভাবে আছে হয়তো।
যা হবার হইছে, মানুষের কথায় কথায়। বরং আলাপ করি দ্বিতীয় উপমায়ন নিয়া। লোকমুখে জানি যে, কুত্তার লেঞ্জা হাজার বছর তেল দিয়া টানলেও তা সোজা হইবার নয়। তেমন’ই মানুষের ত্যাড়ামিও কি এমন? বৃহৎ অর্থে বললে ত্যাড়ামি ব্যাপারটাই কি এমন? যদি ত্যাড়াইলো তবে আর সহস্র বছরেও খুলবার নাম নাই। আশা করি এমন নয়। কেননা তাতে মানুষের বিবেক-বুদ্ধি বড় ভাবে গোয়ামারা খাইয়া যায়। আমাদের বিশ্বাস যে, প্রকৃতিতে আমরা বুদ্ধিমান। ফলে আমাদের এমন অনাবশ্যক ত্যাড়ামি খুব খারাপ দেখায়। তাছাড়া ত্যাড়ামি ব্যাপারটাই তো আসে লোভ, হিংসা, অহং ইত্যাদি স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাঙালপনা থিকা। ফলে মানুষের জন্য ত্যাড়ামি পরিহার্য্যই হইতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হইতেছে মানুষ ত্যাড়ামি চোদাইয়াই গেলো, আর কুত্তা বেচারা তার লেঞ্জা নিয়া ফাঁপরে।
শেষ একটা অযৌক্তিক কিন্তু হইতে পারে টাইপের উপমা-বিশ্লেষণ দিয়া অন্য কথায় যাচ্ছি। তা কুকুরের মনিবভক্তি বিষয়ে, তার ত্যাড়া লেঞ্জার কথা খেয়াল রাইখা। এর থিকা যদি প্রশ্ন তুলি, মানুষ যতো ত্যাড়া তার অন্যপাশে সে আবার মনিবভক্ত কিনা? আমার জীবনের দৃশ্যগুলার মধ্যে এমন একজনকে সার্চ করছি, যে একই সঙ্গে ত্যাড়া এবং ভৃত্য পর্যায়িক। মনে হয় এমনটা সিনেমায় দেখছি। চামচা ত্যাড়ামি কইরা তার মনিবের নাম কইলো না। ফলে গুলি কিম্বা কোপ খাইতে হইলো। এই যে ত্যাড়ামিটা, এইটা কি প্রকারান্তরে মনিবভক্তি নয়? হইতে পারে।
আরেকটা বিষয়, আমরা কি কখনও কোন কুত্তার এমন লেঞ্জা দেখছি যেটি সোজা? আমি দেখছি। ফলে আরো অনেকেই দেখছেন বলে মনে হয়। কিন্তু হঠাৎ একটি কিংবা দুইটি কিংবা সারা পৃথিবীতে গুটিকয়েক কুত্তার লেঞ্জা সোজা হইবার কী গুরুত্ব? গুরুত্ব এই যে, কোন মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিতে ত্যাড়ামি না থাকার চান্স। আমরা হয়তো দেখছি খুব বিনয়ী টাইপের কিছু মানুষ। অথবা কিছু মানুষের কথা শুনছি, যাদের মধ্যে ত্যাড়ামি নাই। আসলেও নাই, বরং তারা সব কথাতেই- হ্যাঁ, হ্যাঁ। এদের অ-ত্যাড়ামি অবস্থাকে কুত্তার রেয়ার সোজা লেঞ্জার সঙ্গে তূলনা করা যাইতে পারে। এতে অবশ্য একটি নতুন আলাপ বের হয়। সেটাই হবে শেষ আলাপ। সেটা করবো, তার আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় যে, কুত্তার লেঞ্জা সোজা থাকার একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে।
নতুন আলাপ যে সকল মানুষের মধ্যে ত্যাড়ামি নাই তাদের বুদ্ধিদীপ্ততা নিয়া। এইখানে বুদ্ধি কমনসেন্সপূর্বক বিবেচ্য। যেমন কারো ত্যাড়ামি না করার সুযোগে যদি অধিকার হরণ হয়, তখন সভ্যতার খাতিরেও তো ত্যাড়ামি করা লাগে। কিন্তু সে যখন তা করে না, সেইটা হয়তো ভয় থিকা করে না। এই ভয়ও তো আরেক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ফিচার। ফলে যে ত্যাড়ামিকরণ কিছু আগেও স্বার্থপরতা হিসেবে দেখা দিছিলো, সে ত্যাড়ামিছাড়ন’ই এখন আরেক ভাবে স্বার্থপর হয়ে উঠতেছে। ফাইনালি আমাদের অনুমান, সব’ই ব্যালেন্সের জন্য। জানি না, কেউ উপর থিকা ত্যাড়ামি কইরা এই ব্যালেন্সের দায়িত্ব নিয়া রাখছে কিনা। আমরা কেবল জানি, কুত্তার লেঞ্জার ত্যাড়া হওয়াটা ব্যালেন্সের জন্যই, তেমনই সেটির হঠাৎ সোজা হওয়াটাও। সেই সঙ্গে আমাদের এই যে আলাপ-বিলাপ, ত্যাড়ামি-অত্যাড়ামি সর্বোপরি সভ্যতার ধারণা ও চিন্তা এসবও তাই।