টোকাই-কথা ।। রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়

আপনারা কেউ টোকাইকে চেনেন?

টোকাই হলো আট-ন’বছরের একটা ছোট্ট ছেলে যে রাস্তাতেই থাকে। ওর মাথাটা গোল। সেই গোল মাথার সামনের দিকে ছোটোরা প্রথম ঘাস আঁকতে শিখলে যেমনটি আঁকে—ঠিক তেমনি কয়েকগাছি খোঁচা-খোঁচা চুল। সামনের উঁচু দাঁতটা কখনো কখনো দেখতে পাওয়া যায়। খালি গা। অপুষ্টিতে ভোগা পেটটা একটু যেন ফোলা। আর সেই ফোলা পেটের ওপর একটু উঁচু করে চেকচেক খাটো লুঙ্গিটি কষে বাঁধা। কখনো আবার সেই লুঙ্গিটি খুলে ফেলে সে ল্যাংটা হয়ে বসে থাকে। আবার কখনো হয়তো ভোটের সময় বিলি করা নেক বড় সা্ইজের জামা তার গায়ে। মাঝে মাঝে কাঁধে ঢাউস একটা কাগজ-কুড়োনোর বস্তা। সে ডাস্টবিন ঘেঁটে খাবার খায় আবার কাগজ, লোহালক্কড় এগুলোও কুড়োয় বা ‘টোকায়’। আর এই টোকানো শব্দটি থেকেই তার নাম টোকাই। 

টোকাই বাংলা কার্টুনের এক বিখ্যাত চরিত্র। বাংলাদেশের চিত্রকর রফিকুন নবী পেইন্টিং-এর পাশাপাশি ‘রনবী’ ছদ্মনামে কার্টুনও আঁকেন। টোকাই তাঁরই হাতে গড়া। রনবী টোকাই আঁকতে শুরু করেছেন ১৯৭৮ সাল থেকে। বাংলাদেশের সরকারি ট্রাস্টের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘বিচিত্রা’-য় এই এক-খোপওয়ালা কার্টুনগুলি পরপর প্রকাশিত হতে থাকে। টোকাই কখনো শুয়ে বা বসে থাকে ডাস্টবিন বা রাস্তার বড় পাইপের গায়ে হেলান দিয়ে বা তার ভেতরে। কখনো গাছের গুঁড়িতে হেলান দিয়ে। কোনোবার পার্কের মাটিতে বা কাঠের বেঞ্চিতে। সাইকেল ভ্যান বা ঠ্যালাগাড়ির পিঠে। ফুটপাতে, ইটের পাঁজায়, বৃষ্টিতে জমে যাওয়া কোমর-সমান জলে।  কুকুর প্রদর্শনী, চারুকলা প্রদর্শনী এমনকি একুশে বইমেলার সামনেও দেখা যায় তাকে।

কার্টনে টোকাই গরীব, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত সব স্তরের ছোটও ছেলে-মেয়ে এবং ভদ্রলোক-ভদ্রমহিলাদের সঙ্গে কথা বলে। কথা বলে জ্যোতিষি, দোকানি ও রাস্তার ভবঘুরেদের সঙ্গে। কথা বলে গরু, ছাগল, কাক, কুকুর আর মশার সঙ্গেও। এরা টোকাইয়ের সঙ্গে কথা বলে শুদ্ধ বাংলায় আর টোকাই উত্তর দ্যায় ঢাকাইয়া বাংলাতে। রঙিন প্লাসটিসিনের মতো যে ভাষাটিকে বেঁকিয়ে-চুরিয়ে চমৎকার রসিকতা করা যায়। একটি ছোটো নমুনা দিই। ধুতি-পাঞ্জাবি-চশমাচোখে এক ভদ্রলোক টোকাইকে রাস্তার একটি ল্যাম্পপোস্টে হেলান দিয়ে বসে থাকতে দেখে প্রশ্ন করলেন, ‘কীরে, তোরা পেটটা আজ বেশি ফোলা-ফোলা লাগছে যে?’ সঙ্গে সঙ্গে টোকাইয়ের উত্তর, ‘আইজ বিশ্ব শিশুদিবস আছিল তো, তাই মেলা বক্তৃতা খাইয়া ফালাইছি!’ টোকাই রাস্তায় থাকে, কিন্তু সে ভিখিরি নয়। সে সমাজের সবচেয়ে নীচে পড়ে থাকা থেঁতলে যাওয়া, দুমড়ে যাওয়া মানুষদের প্রতিনিধি। তাই সে কখনো ‘আমি’ বলে না— বলে, ‘আমরা’। নিজের ওই জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে সে তার অস্তিত্ব নিয়ে, তার চারপাশের অবস্থা নিয়ে গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের স্কোয়ার-কাটের মতো সূক্ষ্ন বিদ্রুপ আর ব্যঙ্গ মেশানো রসিকতা করে। আর মানুষ তাকে আদর করে নিজের মনের মণিকোঠায় বাবু হয়ে বসার জন্যে নিজের সবচেয়ে প্রিয় ফুলফুল বিছানার চাদরটি যত্ন করে পেতে দেয়। তাকে ভালবেসে তারা ‘বিচিত্রা’-য় অনেক অনেক চিঠি লিখতে শুরু করে। প্রথম দিককার কার্টুনগুলিতে টোকাই ছিল ন্যাড়া মাথার। পাঠকরা প্রশ্ন করতেন টোকাই প্রতিদিন মাথা চেঁছে ফেলার পয়সা পায় কোথায়? কাজেই রনবী তার গোল মাথার সামনের দিকে কয়েকটি খোঁচা-খোঁচা চুল এঁকে দিলেন। অনেক চিঠি আসত শীতকালে টোকাইকে জামাকাপড় পরানোর অনুরোধ জানিয়ে। পথে-ঘাটে টোকাইয়ের মতো দেখতে কোনো ছেলেকে দেখলে পাঠকরা ঘটনাটি জানিয়ে চিঠি লিখতেন। সামাজিক কোনো অবক্ষয় নজরে এলে চিঠি দিয়ে সে ব্যাপারে টোকাইয়ের মন্তব্য জানতে চাইতেন। তাঁরা তাঁদের টোকাইকে আরো বেপরোয়া, আরো দুঃসাহসী হিসাবে দেখতে চাইতেন। ওকে জিতিয়ে দিয়ে আসলে নিজেকেই জিতিয়ে দেবার চেষ্টাটাই করতেন ওঁরা। আর এই ধারাবাহিক জনপ্রিয়তার জন্যই টোকাইয়ের সমস্ত কার্টুন আজ বাংলাদেশের ‘প্রতীক’ প্রকাশনা থেকে তিন খণ্ডের বই হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে, বিশেষ করে কলকাতার কোনো বইয়ের দোকানে এ-বইগুলি পাওয়া যায় বলে আমার জানা নেই। আ গেলেও তা ওখানকার মতো এতো সহজলভ্য নয়। তাই টোকাইয়ের এ বাংলায় যতটা জনপ্রিয় হওয়া উচিত ছিলো, সে ততোটা হয়নি। কিন্তু যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক ছিলো কারণ টোকাইয়ের কার্টুনগুলির পটভূমিকা তো প্রধানত শহুরে।


টোকাইকে নিয়ে তৈরি হলো আস্ত একটি গদ্যের বই। যা শুধু অভাবনীয় নয়, চমকপ্রদও। আর বেরলোও কিন্তু কলকাতা থেকে— টোকাইয়ের নিজের দেশ ঢাকা থেকে নয়।


আমাদের মতো এবাংলার অতি সাধারণ পাঠকদের সঙ্গে টোকাইয়ের ছোট্ট হাতটি ধরে যিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তিনি কিন্তু চিত্রকর রফিকুন নবী নন। না, রনবীও নন। তিনি কলকাতার, না বরং বলা উচিত ভারতবর্ষের একজন শীর্ষস্থানীয় কার্টুন-বিশেষজ্ঞ— শুভেন্দু দাশগুপ্ত। মানে আমাদের প্রিয় মানুষ শুভেন্দুদা। শুভেন্দুদা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নিয়ে পড়ানোর সুবাদে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন সেই পড়ানোর রসদ সংগ্রহ করতে। গিয়েছিলেন ঢাকায়। ভাগ্যিস গিয়েছিলেন কারণ সেখানে গিয়েই তো তাঁর টোকাইয়ের সঙ্গে আলাপ। আলাপ রনবীর সঙ্গে। ঢাকায় রনবীর সঙ্গে তাঁর আড্ডা হলো কয়েকবার। অনেক কথাই হলো কার্টুন নিয়ে। টোকাইকে নিয়ে। শুভেন্দুদা এতটাই ভালোবেসে ফেলেছিলেন টোকাইকে যে তাকে নিয়ে নানান সময়ে চারখানি অপূর্ব গদ্য লিখে ফেলেছিলেন। যাদের শিরোনামগুলি হলো, ১. টোকাই আঁকা ২. কার্টুনে ‘ছোটোলোক’ টোকাই ৩. টোকাই একটা আশ্রয় এবং ৪. কার্টুনে গ্রামের ছবি : টোকাই। এছাড়া খুব সহজ করে লিখেছিলেন টোকাইকে নিয়ে রনবীর সঙ্গে তাঁর দুটি সাক্ষাৎকার। এই চার আর দুই মোট ছ-টি গদ্যই হলো বেতের ডালাটিতে যত্ন করে সাজিয়ে রাখা, গোড়ায় একফোঁটা সবুজ ছোয়ানো ধবধবে সাদা বকফুলগুলির মতো টাটকা ও জীবন্ত।এগুলি পড়লে আর তার সঙ্গে টোকাইয়ের বেশ কিছু কার্টুন পরপর দেখলে আমরা টোকাই সম্বন্দে একটা রক্ত-মাংসের ধারণা মনে মনে তৈরি করতে পারি। এর সঙ্গে উপরি হিসেবে শুভেন্দুদা আরো তিনখানি লেখা জোগাড় করেছিলেন। যার প্রথমটি হলো টোকাইকে নিয়ে রনবীর লেখা একটি মনছোঁয়া গদ্য। যার শিরোনাম— ‘টোকাই’। দ্বিতীয়টি রফিকুন নবী নামে লেখা, ঢাকায় আর্ট কলেজের দিনগুলিতে ছাত্র ইউনিয়ন, ব্যানার, ফেস্টুন, কার্টুন-আঁকা সব মিলিয়ে মিশিয়ে এক আশ্চর্য ঝরঝরে স্মৃতিকথন। যার শিরোনাম— ‘বদলায়নি কিছুই’। আর তৃতীয় বা শেষ লেখাটি হলো ঢাকার ‘প্রদ্যোৎ’ পত্রিকার তরফে ফোরকান আহমেদ সাহেবের নেওয়া রফিকুন নবীর একটি সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ। আর এই সমস্ত লেখাগুলিকে দু-মলাটের মধ্যে জড়ো করে শুভেন্দুদা তৈরি করেছিলেন টিনটিনের মতো বড়সড় মাপের (মানে যাকে ছাপাখানার ভাষায় ওয়ান ফোর্থ ডিমাই বলে) একটি সাদাকালো ঝকঝকে পেপারব্যাক বই। নাম দিয়েছিলেন ‘টোকাই আর রফিকুন নবী’। ২০১২ সালে ‘মনফকিরা’ প্রকাশনা বেরনোর পরপরই কলেজ স্ট্রিটের ‘দে বুক স্টোর’-এ মেজদা (পরেশবাবু)-র কাছ থেকে এক গরমকালের বিকেলে বইটি কিনে এনেছিলাম বাড়িতে। তারপর উল্টে-পাল্টে কতবার যে পড়েছি তার কোনো হিসেব নেই। ওপরের নামপত্রটি শুভেন্দুদার ক্যালিগ্রাফির মতো চমৎকার হস্তাক্ষরে মার্কার পেন দিয়ে লেখা। ছাপা ভালো। পাতা ভালো। বাঁধাইও মন্দ না। কিন্তু একটাই মুশকিল। সর্ষের তেল, পোস্তবাটা আর পেঁয়াজকুচি দিয়ে চামরমণি চালের গরম ভাত যত্ন করে মেখে, গালে পুরে চোখ বুঁজে চিবোতে চিবোতে একটি-দুটি কাঁকর কষের দাঁতের ফাঁকে পড়লে মন যেমন চঞ্চল হয়— তেমনি বেশ কিছু ছাপার ভুল মনটাকে চঞ্চল করে দিচ্ছিলো।

IMG_20160617_0002

আমাদের কাছে বাংলা ভাষায় তৈরি কার্টুন সিরিজের অভাব নেই। তার মধ্যে কাফী খাঁ (স্বর্গত প্রফুলচন্দ্র লাহিড়ী)-র ‘শিয়াল পণ্ডিত’ বা ‘খুড়ো’ কার্টুন স্ট্রিপ অথবা অনবদ্য চণ্ডি লাহিড়ীর এক-খোপওয়ালা ‘বুড়ো’ সিরিজের কার্টুনগুলি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু টোকাইয়ের মতো এগুলি কখনোই বই আকারে প্রকাশ হয়নি। শুধু তাই নয়, টোকাইকে নিয়ে তৈরি হলো আস্ত একটি গদ্যের বই। যা শুধু অভাবনীয় নয়, চমকপ্রদও। আর বেরলোও কিন্তু কলকাতা থেকে— টোকাইয়ের নিজের দেশ ঢাকা থেকে নয়। এটা তো আরো আনন্দের। বইখানি পড়ার পর শুভেন্দুদার সঙ্গেএ নিয়ে বহুবার কথা বলেছি। কথা বলেছি টোকাইকে নিয়ে। রনবীকে নিয়ে। জানতে চেয়েছি রনবী দেখতে কেমন? বড্ড কি রাশভারী, নাকি চট করে মিশে যেতে পারেন সবার সঙ্গে? এর সঙ্গে এই বইটির যদিও কোনো সম্পর্ক নেই— শুধু আমার ছেলেমানুষী কৌতুহলের তাগিদেই এত কথা জিজ্ঞেস করা। শুভেন্দুদা আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে প্রথমেই রনবীর একটি রঙিন ছবি বের করে দ্যাখালেন। দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। আরে এতো প্রায় আমাদের হিরণদা— মানে চিত্রকর হিরণ মিত্র। শ্যামলা রঙ, গোলালো মুখ, মাথার সামনের দিকের চুল কিছুটা কম আর পিছনের দিকের কাঁচাপাকা চুল ঘাড়ের কাছে গিয়ে থোকা হয়ে ঘুরে গেছে। দুটো মোটা ভুরুতে সময়ের নুন-মরিচ। নাক, ঠোঁট এবং থুতনি বেশ পুরু। বড় ফ্রেমের চশমাটির নীচে বড়ো বড়ো দুটো চোখ কৌতুকে যেন চিকচিক করছে। মুখে সবসময় একটা ছোটো ফিকফিকে হাসি। দুজনেরই ভারী চেহারা। দুজনেরই হাইট মোটামুটি পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চির মতো। রনবী ১৯৪৫ আর হিরণদা ১৯৪৫। মানে প্রায় কাছাকাছি বয়েস। ছবিতে দেখলাম রনবীর বাঁদিকের ঘাড়ের নীচের দিকটায় একটা তামা-রঙের গোল তিল—ঠিক যেমনটি হিরণদার ঘাড়েও দেখেছি। তবে বাঁদিকে নয় ঘাড়ের ডানদিকে। ছবিতে রনবী যে হাফশার্টটি পরে রয়েছেন তার বেস কালারটি কালো, যেটা আবার হিরণদারও খুব পছন্দের রঙ। শুভেন্দুদার কাছে জানলাম রনবী খুব আড্ডাপ্রিয় এবং চমৎকার রসিকতা করেন। হিরণদাও তাই। সত্যি এতো মিল দুটো মানুষের হয়! হিরণ মিত্র যে চমৎকার কার্টুন আঁকে এতো সবারই জানা। তাহলে রনবী বা হিরণদার মতো দেখতে চিত্রকর হলেই কী তাদের পেইন্টিং এবং কার্টুন দুটো দিকেই সমান ভালোবাসা থাকবে?

শুভেন্দুদার কাছে জেনেছি রনবীর বাড়ির পোশাক একরঙা লুঙ্গির সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের ফতুয়া বা পাঞ্জাবি। বাইরে বেরোলে ফুলপ্যান্টের সঙ্গে রঙচঙে হাফশার্ট পরেন। পায়ে স্ট্র্যপ দেয়া স্যামসন বা চামড়ার চটি। রনবী ছোটোমাছ খেতে ও খাওয়াতে ভালোবাসেন। শুভেন্দুদা-কেয়াদি নানারকম ছোটোমাছের পদ দিয়ে বেশ কয়েকবার ভাত খেয়েছেন ওঁর সঙ্গে— ওঁর বাড়িতে। খেতে খেতে নানান গল্প করেছেন। এও জেনেছি যে ২০১৪-এর আগস্ট মাসে শান্তিনিকেতনে হিরণদার হাত দিয়েই রফিকুন নবীকে সম্মান জানিয়েছিল একটি এন.জি.ও। দুজনে একসঙ্গে আর্টক্যাম্পেও গিয়েছিলেন। আর রফিকুন নবী সেই অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে কলকাতায় শুভেন্দুদাদের ‘কার্টুনদল’-এর প্রদর্শনী দেখতেও এসেছিলেন ‘মায়া আর্ট স্পেস’ গ্যালারিতে। দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। একটি দারুণ সেল্ফ ক্যারিকেচার এঁকে দিয়েছিলেন কার্টুনদলের কমেন্ট বুক-এ। তিনি যে আসবেন আমি জানতাম না। জানলে শুভেন্দুদার মতো একবুক পদ্মার ঢেউ নিয়ে রাত্তিরে গ্যালারি বন্ধ হয়ে যাবার পরও তাঁর অপেক্ষায় ঠিক দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাই আমার সঙ্গে রনবীর দ্যাখা হয়নি। কিন্তু আমি রনবী সম্বন্দে একটা ব্যাপার জানি যেটা আর কেউই জানেন না। শুভেন্দুদা না, বিচিত্রা-র সম্পাদক না, রফিকুন নবী না, ফোরকান আহমেদ না, এমনকী রনবী নিজেও না। সেটা কী জানেন! সেটা হলো কার্টুনিস্ট রনবীর প্রিয় রঙ সাদা। রনবী কিন্তু কোথাও এই কথাটি বলেননি, কিন্তু সাক্ষাৎকারে তাঁর টোকাইয়ের কার্টুনে বেশি সাদা স্পেস রাখার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন যে, ওটা সিম্পলিফাই করার জন্যে, আনুষঙ্গিক বিষয়কে জোর দেওয়ার জন্যে রাখা হয়েছে। কথাটা হয়তো সত্যি। কিন্তু এটার থেকেও অনেক বড় শক্তি হলো— সাদা শান্তির প্রতীক, মুক্তির প্রতীক, স্বাধীনতার প্রতীক ও শুদ্ধতার প্রতীক। আর আমি ছাড়া এই সত্যটা এ পৃথিবীতে আর একজনই মাত্র জানে এবং বিশ্বাস করে। যার নাম হলো টোকাই। হ্যাঁ, টোকাই। 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!

Discover more from

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading