নটোরিয়াস নাতিশীতোষ্ণে
কোথায় থাকে এই গরমের মা
কোথায় থাকে বাপ?
নাকি তারা সবাই মিলে পড়ে
তামাম এলিফ শাফাক!
তোমার জন্য গরম হাওয়া
গরমের পর তরতাজা বর্ষা
তারপর আখ্যান আর কবিতা
আখ্যানে গ্রামের পর গ্রাম
কবিতায় গ্রাম দিয়ে
শহর ঘেরাও করলাম।
এরপর কী?
আয়ু মানে বায়ু
তোমার স্পর্শকাতর স্নায়ু
কারে খোঁজে খালি?
তার তল্লাশে থাকি
পিপাসায় ফাটুক ছাতি।
তৃষ্ণায় তোকমা না রুহ আফজা!
ক্ষুধাতে যত লাগাও আলকাতরা
স্বপ্নে যা খুশি আলপনা,
এই নটোরিয়াস নাতিশীতোষ্ণে
এমন গরমই তো আসলি আমরা,
যারা ঘামে ভিজে যায়
কিন্তু জ্বলে ওঠে না
গরমের মা-বাপ তুলে
একটু ঠাণ্ডা হতে
বড়জোর আইসক্রিম
খুঁজতে থাকে!
তুমি শশী হে!
এ হেন চৈতা দিন,
প্রমিতভবনে রাতকে
যামিনী বলতে যেয়ে
উষ্টা খেয়ে
ঘামেরও দাম আছে
ক্যামেরার ক্লাসে।
মিরপুর বললে
কোনো এক কারোর কারণে
এখনও কেন শুধু
১০ নম্বর বুঝি!
অথচ গোলচক্করের মাথায়
ফ্লাইওভারের পাশাপাশি
০২ নাম্বার স্বপ্নেরও আজিব দাস্তান।
এত যত মিউজের মেহফিল
রোজারমজানের দিনে
তোমারই জন্যে
এই কম্প্রোমাইজের কাননে।
কেন এত শনিবার
চাও বা না চাও
সামনে এসে দাঁড়াবেই
শনিবার সকাল,
যেমন বসেছিল শুক্রবার রাত।
কিছু না দেখতে চাইলেও
চোখের পর্দা বরাবর
চলতে থাকবে
দিনব্যাপী দৃশ্যের যোগসাজস।
ঘুমের ভিতর ঘুরে আসছ যে বন
সেখানে তোমারে ছেড়ে গেছে
মেয়েদের মন,
শরীর কুড়িয়ে নিয়ে চাখো
মরা মাছে বরফের চুমু।
এখনও এমন
আচোদা আয়ুর ওপর
কেন খোদার রহমত!
মানুষ তো তা-ই শোনে
যাতে তার কানের আরাম
বাদবাকি যা
গামলা ভরা গানের ময়লা।
শুধু কেন আরও ০১টা শনিবার সকাল?
বরং কষ্টেমষ্টে রাতের স্বপ্নে
বাসিমুখে সেঁধিয়ে থাকো
ক্ষুধা পেলে জাপান যাও
ব্রাশ না করে সুশি খাও,
পয়দা হওয়ার পূর্বেই
মিনিংলেস এই শনিবারের
ঘাড় মটকাও
ডুবসাঁতার
যে তোমাকে খুবলে খেলো
সে একটা সমুদ্র ছিল
চোখের ঢেউয়ে
ভাসাতে ভাসাতে
অন্ধ একটা উপকূল দিল
মরে গিয়ে বেঁচে উঠলে
তার তীব্র চুমুর সন্ত্রাসে
মুহূর্ত মহাকাল হয়ে থাকে
ফুলেদের স্পর্শের অতর্কিতে
কায়ক্লেশ বাঁচা বাতিল করে
হঠাৎ এক সন্ধ্যাগত রাতে
সে তোমাকে নিয়ে গেল ডেকে
তার নিরালা খুনের বনে
কী আছে অটল পাহাড়ি স্বর্গে?
যা ছিল একান্ত আমাদের
নিচু ওই নিজস্ব নরকে।
সানফ্লাওয়ার
প্রায় বছর চল্লিশ বয়সী একটা বডির বাগান
ভ্যান গঘের কাছে বর্গা দেয়া ছিল মনে হয়
আপনি এর যেখানেই পা রাখবেন, দেখে থাকবেন
কাঁটা কানের ছায়ার পিছে পিছে
স্বয়ং সূর্য সেলাই করছে
একটা ফুলের মুখ।
পিয়াস মজিদ
জন্ম: ২১ ডিসেম্বর ১৯৮৪, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
ভিটেমাটি ও বেড়ে ওঠা: কুমিল্লা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে এখন কাজ করেন ঢাকার বাংলা একাডেমিতে। একসময় কবিতার পাশাপাশি গল্প ও প্রবন্ধও লিখতেন৷ এখন কেবল কবিতাতেই থিতু। কবিতাই তার পটভূমি, বর্তমান আর অনিশ্চিত আগামী।
উল্লেখযোগ্য কবিতার বই:
নাচপ্রতিমার লাশ, মারবেল ফলের মওসুম, কুয়াশা ক্যাফে, নিঝুম মল্লার, গোলাপের নহবত, ক্ষুধা ও রেস্তোরার প্রতিবেশী, প্রেমপিয়ানো, মুহুর্মুহু মিউ মিউ, মির্জা গালিব স্ট্রিট, অফ টপিক, এইসব মকারি, এ সকাল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, ভুলে যাওয়া স্কার্টের সিঁড়ি ইত্যাদি।
piasmajid@yahoo.com