বৃদ্ধাঙ্গুলি বিসর্জনের দিন
পা বেঁকে গিয়েছিল, পথ না
পিচ্ছিল ছিল, তা-ও না
এ রকম বেলে মাটির পথ ছেড়ে সরে আসে না কেউ।
বৃদ্ধাঙ্গুলি বিসর্জনের দিন কে জানত শাসন করবে তর্জনী
প্রতিবাদের দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে দাঁড়াবে আয়নার আঁধারে
দূরের আলোকবর্ষ পেরিয়ে অন্ধকারে।
বহুদিন বধির ছিল যে আলো
তাকে চোখে পাবার পর আমরা দেখলাম
একটা সকাল তর্জনী হয়ে গেছে।
পাখি জানে উড়তে লাগে দুই
এককে ভেঙে ভগ্নাংশের গণিতশাস্ত্র বলছ পাখির কাছে
পাখি জানে উড়তে লাগে দুই
ভাগের গল্পে মানুষ কোটি কোটি ভ্রুণ
জন্মাবে একজন।
সে জন্মাবে কখন?
মানুষ আর মানুষীর মিলন হয় না বহুদিন
যারা চুম্বক আবিষ্কার করেছিল দেহে
যারা দেহ আবর্তনের দিন মিলিয়ে হতো
উত্তর-দক্ষিণ মেরুবোধ।
প্রান্তিকে শামুক সহবাস, স্থির
একদিন মরে যেত ধীর।
এখন যারা, তারা চুম্বক খুঁজছে
জুড়বে টেকটনিক প্লেট।
দূরত্ব
যখন দুরত্নের কথা বলছ
বলছ না—
জলের সাথে ঢেউয়ের দূরত্ব
বলছ, ঢেউয়ের সাথে ঢেউয়ের দূরত্ব।
শেকড়ের সাথে তার পাতার নিবিড়তার চেয়ে কোনো নিবিড়তা নেই
অথবা প্রেম কাঠঠোকরার ঠোঁট
ঠুকরে ঠুকরে গাছের মাংস
চলছে নীরের নির্মাণ।
একলা হবার নেশায় মানব জন্ম হয়
এত মৃত্যু দেখি,
তবু মনে হয় ফুরিয়ে না যাক পৃথিবীর আয়ু।
তার ব্যাপনে মিশে আছে ভ্রুণ
জন্মাবে মুখ, সুখ, অসুখ
তারা ধরবে পাহাড় মুঠোয়
সমুদ্র নেবে শুষে।
এরপর একলা হবে
একলা হতে হতে দেখবে
একলা হবার নেশায় বারবার মানব জন্ম হয়
দড়ি
মুড়ির ভেতর দাঁতের আওয়াজ হয়ে বাজছ।
উপচে পড়ছ অসতর্কে উথলে ওঠা দুধ।
তুমিই কি’না দেখাতে চেয়ে নিঃশ্বাস
বন্ধ করে আছ ফুসফুস
কী দম তোমার!
তিমির আত্মঘাতী প্রেম বালুচরে কঙ্কাল হয়ে আছে
অথচ জানতে—
সোনার কাঠি রুপার কাঠির অদল বদলে
পাল্টে যেতে পারত সব।
আমাদের হাত ফসকে উড়ে যাওয়া গ্যাসবেলুন জানে
নীল দিয়ে ঘেরা আছে আকাশের ফাঁকি।
আর আমরা জানি
আমাদের একজন দড়িটা ধরে রাখিনি ।
তাসনুভা অরিন
জন্মঃ ২ অক্টোবর ১৯৯০, রাজশাহী
স্থায়ী ঠিকানাঃ মিরপুর ঢাকা
ইমেইলঃ orin.tasnuva@yahoo.com
পড়াশোনাঃ ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর
(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় )
পেশাঃ শিক্ষকতা ( ঢাকা কমার্স কলেজ )
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ও প্রকাশকালঃ
ত্রিকালদর্শী বেলপাতা, প্রথমা প্রকাশন – ২০১৯
জলপাই বিষাদ পায়রা, বৈভব প্রকাশনী – ২০২১
নূহের নৌকায় জোড়া খরগোশ, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী- ২০২৩
পুরস্কার – প্রথম কবিতা বই “ত্রিকালদর্শী বেলপাতা” এর পাণ্ডুলিপির জন্য প্রথমা প্রবর্তিত “জীবনানন্দ দাশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০১৮”