একগুচ্ছ কবিতা ।। বাপি গাইন

“কবির পরিচিতি একমাত্র কবিতাই হতে পারে। মানুষের পরিচিতি তবু কিছু ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দাবি করে। পরিচিতির খুব কাছে এসে ঝুঁকে দেখি গ্রাম আটকে রয়েছে, ১৯৮৫ ‘র, ৩০ শে এপ্রিলের গ্রাম। বাংলাদেশ বর্ডার লাগোয়া ছোটো ছোটো কলোনী । ‘৭১ এর ভীতু মানুষগুলো এখানে থাকে। সকালে কিছু পুরুষ মাঠে যায়, আর কিছু যায় শহরে আর অধিকাংশ থাকে বিদেশে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে । আর মহিলারা অধিকাংশই এখানে ওখানে ছোট ছোট জটলা করে বিড়ি বাঁধতে বসে আর নিজেদের সুখ দুঃখের গল্প করে। এরকম এক আপাত নিরীহ গ্রাম ট্যাংরা কলোনী, আমার জন্মস্থান। যৌথ ফ্যামিলিতে বড়ো হয়েছি। জেঠিমা ক্ষুদের ভাত মেখে ডাক দিত আর আমরা ভাই বোন দিদিরা সবাই দৌড়ে গিয়ে জেঠিমার চারপাশে গোল করে বসতাম। পিঠে শীতের রোদ। এখন এটা মাঝেমধ্যে উসকে দেবার মতো একটা স্বপ্ন বটে। এখন আমরা আলাদা আলাদা ভালো থাকি। আলাদা আলাদা খারাপ থাকতে হয় এখন আমাদের। একজন না ডাকলে আমরা নিজে থেকে পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই ভুলে গেছি। এখানে দাঁড়িয়ে আমি লেখালিখি করি। ১৩ থেকে ১৪ বছর এরকম কিছু একটা হবে। রুহুল বলছিলো বই প্রকাশের পেছনে গল্প বলতে। আমি গল্প খুঁজতে পেছনে একটু পিছিয়ে যেতে গিয়ে দেখলাম ফেরার রাস্তাটা বড়ো ঘিঞ্জি হয়ে আছে। যাচ্ছেতাই ভাবে সম্পর্কের কঙ্কাল ছড়িয়ে রয়েছে যেখানে সেখানে। পা আটকে যাচ্ছে। এর মাঝখান থেকেই একজন নিদারুন ফুটবল প্লেয়ারের মতো আমাকে একে বেঁকে নিজের জন্মের কাছে পৌঁছাতে হচ্ছে। এই সফরটাই লিখে যাবার চেষ্টা করেছি সবসময়। দু তিন বছর ধরে যাপনগুলোকে এক জায়গায় করে মাকে দেবো ভেবেছিলাম, কিন্তু প্রত্যেকবারই কোনো না কোনো হাওয়া এসে সব এলোমেলো করে দিয়েছে। এবং এতদিন পর হাওয়ার ক্লান্তিকে হাতিয়ার করে সেলিম মন্ডল আমার এই ছিঁড়ে যাওয়া ম্যাপটাকে সেলাই করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে। আর আমি সামান্য স্বস্তিতে আছি আপাতত, মায়ের হাতে তার ছেলেকে তুলে দিতে পারবো ভেবে।” – বাপি গাইন

 

১.

হাসপাতালের সামনে  অস্হির হয়ে উঠেছে তোমার কুকুর
বিকেল, গলার শেকল খুলে দাও।
লাফাতে থাকা একটা বল নিয়ে এসো।
যেকোনো দিকে ছুঁড়ে দাও।
অপেক্ষা করো
আবার ছুঁড়ে দাও।

 

২.

অপদার্থের মতো ঘুম পায়। ঘুম পাশ কাটাতে গেলে গতদিনের  শ্বাসকষ্ট আবার । মাথার অন্ধকার চোখে নেমে আসে। ভূত ভবিষ্যৎ কিছু মনে থাকে না। হাত কাঁপে, পা কাঁপে। হৃদয়ের পাথর পর্যন্ত কেঁপে রাস্তা অবরোধ করে দাঁড়ায়। অবরোধের ভেতর শুয়ে বসে ঘুমোতে ভালোই লাগে তার। ঘুম ভাঙার পর না বলতে পারা একপ্রকার তৃপ্তি চারপাশে হাত পা ছড়িয়ে ফুটে থাকে। খচ্চরকে খচ্চর বলতে ইচ্ছে হয় না তখন। ঘাড়ের ওপর আদর রেখে বলে – সুহৃদ তোমার  সূর্যাস্ত প্রকাশ হয়েছে। জামার বোতাম আটকাও।

 

৩.

ঘর নেই। ঘর বহুদিন হোলো পরিসীমা ক্ষেত্রের বাইরে । নিরানন্দ বসে আছে শোকে। শোকে জামফলের মতো বৃষ্টিতে ভারী হয়ে আছে তার মন। অথচ পড়ে যাচ্ছে না এটা একটা বিজ্ঞান বিরোধী ম্যাজিক। নিরানন্দ বসে বসে অমানবিক  ম্যাজিক দেখাচ্ছে আর দর্শকের ভেতর ঘেমে লাল হয়ে উঠছে কেউ কেউ। শো দেখতে এসেছে টিকিট কেটে, তাছাড়া সকলেই  অন্ধকারে আছে,  তাছাড়া বেরিয়ে গেলেই প্রশ্ন ;  তাই চাইলেই  চেয়ার ছেড়ে উঠে  যেতে পারছে না কোনো দুর্বলতা। শোকে শিশু হয়ে যাওয়া ছাড়া নিরানন্দও পারছে না কিছু বহুদিন থেকে। অল্প অল্প হাওয়া দিচ্ছে। নিরানন্দ দুলছে শূন্য ও মাটির কাছাকাছি। দর্শকের ভেতর উপযুক্ত কারণ ছাড়াই দমবন্ধ হয়ে আসছে ।

 

৪.
ডানা লিখবো  আর লিখবো  কুয়াশা ভিজে ঘরে ফেরার কথা। পায়ের ব্যথা নিয়ে বেশিদূর যাবো না। বুকের দূরত্ব লিখবো যথেষ্ট  বুক দিয়ে। শ্বাসকষ্ট রেখে দেবো রাস্তায়। মাথাকে ততদূর সম্ভব অন্ধকার লিখে দেবো যতদূর সহ্য করতে পারছে মাটি। এই যে উল্লেখযোগ্য হাড় মাংস, সবটুকুই তো শূন্য অধিকার করে আছে। পায়ের স্পর্শটুকু এই পৃথিবীর। স্পর্শ লিখবো সেই আর যত দ্রুত সম্ভব সরে আসব অন্য পথ দিয়ে। এর কোনো ব্যাখ্যা লিখবো না। চুপ একটা উত্তরপত্রের মতো উঠে আসবে প্রশ্নের পাগলাগারদ থেকে।

 

৫.
মন কেমন আছে জিজ্ঞেস করি আয়নাকে। আয়না ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে একটা মানানসই উত্তরের জন্য। তারপর মাথা চুলকোতে থাকে যেন আজ সকালেই স্কুলে আসার আগে এই উত্তরটাই বারবার মুখস্ত করেছে। অথচ প্রশ্নের ঠান্ডা চোখে তাকাবার পর সব স্মৃতি মেধা গোল্লায় গেছে। মাথায় আসছে শুধু অতীতের ভাঙা লাঠি। আর পাঁচদিন জ্বর। জ্বরের ভেতর দেবিরা ফলের প্যাকেট নিয়ে এলেন আর বললেন – উত্তর ভুলে গেলে চোখ নামিয়ে নিয়ো না। যখন বলার মতো কিছুই থাকবে না – বলো মন নেই। বলো অনুভূতি ছুটি নিয়ে অপূর্ব পাহাড়ের ওপারে স্বর্গীয় যাপনে আছে। এখন যা কিছু আছে তা এই অনন্ত চ্যালাকাঠ। তার দাহ্যতা সম্মন্ধে প্রশ্ন করা যেতে পারে। তুমি এই প্রশ্নটাই তাদের করতে বলো এবং সম্পূর্ণ ছাই হয়ে যাওয়া পর্যন্ত তুমি তাদের শিক্ষার্থীর মতো বুকে টেনে নাও।

 

৬.
তোমার সঙ্গেই রয়েছে,  ছুরিটা
অথচ খুঁজে পাচ্ছ না তুমি
সারাক্ষণ সে তোমার মাথার ভেতর ছুটি কাটাচ্ছে
আর তোমাকে সন্দেহজনক করে তুলছে শিকারী কুকুরের মতো
বুনো  একটা গন্ধ তোমাকে উত্তেজিত করে তুলছে এই বৃষ্টিহীন মেঘের দিনে
লম্বা নিংশ্বাস পড়ছে আর রোঁয়াগুলো ফুলে উঠছে ঘাড়ের
সন্ধ্যার রেস্তোরাঁয় একের পর এক গ্লাস শূন্য করে ভাবছ এবার একটা সামনা সামনি হয়ে যাক

ভাবছ হৃদয়স্পর্শী একটা বাক্য ছুঁড়ে মারবে আর একটা প্রতিধ্বনি এসে তোমাকে এলোমেলো করে দিয়ে যাবে খানিক। এতোসব মাথার মধ্যে নিয়ে তুমি তোমার প্রেমিকের সাথে শুতে যাবে ঘরে ফিরে । সারাদিনের সমস্যাগুলো সামলে উঠতে যে তোমার দুটো হাত কম পরে যাচ্ছে  এটা খুব নীচু স্বরে বলবে ও আলোটা কমিয়ে দেবে অন্যহাতে। ছেলেটা অল্প আলো পছন্দ করে। এতে তিনজনের বেশ সুবিধাই হয়। ছুরিটা দুজনের মাঝখানে নিশ্চিন্তে ঠ্যাঙের ওপর ঠ্যাং তুলে দিয়ে সংসার ও তার প্রয়োজন অপ্রয়োজনের হিসেব শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে।

তখন গিয়ে একবার ডেকে দেখাতে ইচ্ছে করে ম্যাডাম, এই আপনার ভেতরের ভয়, সন্দেহের বরফ, যত্নের  ছুরি। একে দুজনের মাঝখানে রাখবেন না। পারলে অন্যকাউকে দিয়ে দেবেন, যাকে আপনি নিজের থেকেও বেশি সহ্য করছেন এতোদিন।

 

৭.
প্রায়শই কথা হয় যেন
শব্দের পাশে শব্দ এমনভাবে এসে দাঁড়ায়
যেন ভিজে বেড়াল
ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় এলো
বারান্দায় আর কেউ এলো না তারপর…

 

৮.
ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার ঘুম ভেঙে যায় – ঘুমন্ত মানুষ
আরো একটা দোলনা খেলা করে
মানুষগুলো কেউ থাকে না
মনে করার মতো যে দু’একটি অল্প ক্ষিদের রাত এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত জানে
তাদের চায়ের কাপকে তবুও ধন্যবাদ দিতে হবে
এই জীবনে তাকে ছুঁয়ে একবার অন্ধ হয়ে যাবার পর

 

৯.
আলোর স্বরূপ ভেঙে মিথ্যে একটা জন্মের ভেতর দাঁড় করিয়ে গেছ ।
আমার অতিরিক্ত গাছ, গাছের মতো দাঁড়িয়ে আছে। যখন কিছু করার থাকে না, মানুষ কি দুম করে একটা বাঁশবাগান কিনে ফেলার কথা ভাবে?
নেশা একটু বাড়িয়ে দেয় সন্ধ্যের দিকে?
পাতা কি ঝরে তার ঘরে ফেরার পথে, আজও রাস্তা ভুল হয় ?
সমস্যা হচ্ছে সেই জল ও গৃহযন্ত্রের প্রথম প্রণয়,
অনিদ্রা যাকে রোজ অল্প অল্প খায় আর ভুল বকে
ভুল, কেউ কারো মাথার দিব্যি দেয়নি এরকম একটা নির্জন দেওয়াল
আর দেওয়ালভর্তি ডানা লুকোনোর শব্দ
শব্দহীন তাকে বুকমার্ক করে রেখেছে ঠোঁটের কাছে,স্নানের কাছে যেরকম সম্ভব ছিলো
সেরকম অসম্ভব রেখেছে।

 

১০.
একটা কামড়ের ওপর চাপা দেওয়া রয়েছে ঠোঁট আয়ু জল প্রশ্ন চিহ্ন
একটা চিহ্নের ওপর দাঁড়িয়ে প্রশ্ন আয়ুকে জল পাঠাচ্ছে ঠোঁটে করে
এবং কিছুটা নিজেও ভিজে যাচ্ছে ভেতরে ভেতরে
আর রুমালকে ব্যবহারও করছে না
উপযুক্ত কারণ ছাড়াই
আদি স্রোত ভেঙে বেরিয়ে আসছে অশ্রুজলের মাছ।

 

১১.
ক্ষুধার্তের কাছে না থাকে খাদ্যের বর্ণ স্বাদ
না থাকে তার পৌষ্টিক গুণাগুণ
সে কেবল পেট পর্যন্ত বোঝে
আহ! পেট, উপচে পরে পিত্তজল
আগুন …আগুন…

 

১২.
১০টা ২৪ তোমাকে তিনবার সর্বনামে ডেকেছিলাম।
 
১১টা ৩০ তাকে শেষবার সঙ্গে নিয়ে হিসেবের অটুট পাড়ায়।
এসময় দায়গ্রস্ত পিতার মতো সবাইকে সবই মানায়।
 
১২টা তাকে চেয়ার টেবিলে বসিয়ে রাখবে – অন্ধকারের বই
কাকে তুমি পাঠ করবে হে উচ্চারণ দ্বিধাবিভক্ত তেমন ওষ্ঠ কই!
 
৬টায় কথা দেওয়া নেই কোনো। অথচ একটা হাওয়াগলি আশেপাশে আছে ঠিক।
তোমাকে পেয়েছে রোদ্দুর আর তোমাকে পেয়েছে ভাতনির্মিত দিক।
 
৭টা তোমার রাস্তার ভীড় আজকে তুমি নিভিয়ে রেখেছ কেন?
এপথে যাবে কবি ও কাঙাল এপথে যাবে অশ্রুলিখিত দেহ।
 
পৌনে ৮টা, কোথায় থাকার কথা ছিলো আর কোথায় তাকে বসিয়ে রেখেছে ১০টার নদীপাড়
এ রহস্য জলের এ রহস্য খোলা পাপ – বুঝলে ১২টা, স্পষ্ট থাকা জলের অধিকার।
 

১৩.
কাগজের পাখি। পাখিকে ওড়াতে পারিনি। না-পারার ভেতর একটা অনেকদিনের হাওয়া। আশেপাশে কোথাও কারো আকাশ আছে হয়তো । আশেপাশে মষ্করা ঘনিয়ে আছে এরকম সন্দেহ হয়। সন্দেহের নূন্যতম ছাদ নেই। যৎসামান্য ছায়া দেখলেই তার ঘুম পায়। ঘুমের ভেতর সে পাউরুটির স্বপ্ন দেখে। গরম, ভাঁজা ভাঁজা পাউরুটি। ঘুম থেকে উঠে জিভে মাখনের গন্ধ খোঁজে সে । গন্ধ নেই। টক একটা দৈনন্দিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্দেহ বড়ো হয়। সন্দেহ লম্বা লম্বা পা ফেলে ক্রমশঃ দূরবর্তী হয় নির্জন দেওয়ালের সাপেক্ষে। আশেপাশে পাখির ছায়া ঘনিয়ে আসে আবার। ঘুম পায়, দু’পা ক্লান্তির আগেই ঘুম পায় খুব।

 

১৪.
আজ একটা কালো শাড়ি পরবে তুমি অনেকদিন পর
আজ ঘরের সমস্ত সকাল তৈরির উপকরণগুলি ইচ্ছে করে বন্ধ করা থাকবে
এবং জানালা
আজ তোমার পাখি পর্বের দিন মনে রেখো
যদিও
হাওয়া প্রবেশের অনুমতি নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি
মৃদু ও মন্হর দিকগুলি খুলে রাখা হয়েছে
 
যদিও কোনো এক অসম্ভবের প্রার্থনায় বড়ো বেশি মার্জিত দেখাচ্ছে তোমার বেড়াল
এবং শাড়িটি তখনও  নামানো হয়নি আালমারি থেকে…
 

১৫.
শান্ত খুনী, তার মাথার ভেতর পরিত্রাণহীন জলের শব্দ
শান্ত খুনী তাকে সামলাতে হয় এজন্ম সেজন্ম পরজন্ম ও তার পাপ পুণ্য সত্য মিথ্যা সমাজ সংস্কৃতি আদিমৃত্তিকা নদীমাতৃক কুমির ইত্যাদি
তাকে পোষ মানাতে হয় আঁচলের এপাশ ওপাশ মাংস পাথর অতিরিক্ত শিশু রাক্ষস
যে হাতে থামাতে হয় তাকে সেই মায়ামন্ত্র হাত সেই অসম্ভব বাকরুদ্ধতা যার ব্যাখ্যা ইচ্ছে করে মুছে দেওয়া হয়েছে সমস্ত কাল্পনিক চরিত্র ও তার শেকড়ের অন্ধকার থেকে
যাকে প্রায়শঃই প্রতিবেশীর হারানো বাছুর ভেবে ভুল হয় এরকম একটুকরো মাঠের এখনও সবুজ অংশ
যাকে আর চোখ বন্ধ করেও উপেক্ষা করা যাচ্ছে না এরকম ঠান্ডা চোখের পাথর
এরকম অতৃপ্ত মাছের জল
যার মাথার ভেতর ঢুকে গেছে
যার ঘুমের অপভ্রংশ ভেঙে বেড়িয়ে আসছে নির্জন জন্তুর দাপাদাপি
 
সেই বিদগ্ধ জন্মভাষা আর কতদূর সাফল্য এনে দিতে পারে দেবী – তোমার আপাদমস্তকে?
বড়োজোর – স্মৃতি সহায়ক একটি বিলম্বিত অধ্যায়।

 
১৬.
গরম রুটির আলো পড়েছে মুখের উপর
অনেকদিন পর আমার রাক্ষস জেগে উঠেছে আবার
আমার পাথর- নিজে থেকেই গড়িয়ে যাচ্ছে
যেদিকে তার যাবার কথা ছিলো না কোনোদিন
 
অথচ স্পষ্ট করা ছিলো-
অতিসবুজ রঙের একটা ম্যাপের ভেতর আমাদের হরিণকে নিরাপদ রাখা হয়েছে।
লেখা ছিলো- জলপানের উপকারিতা লিঙ্গ ও ধর্ম ভেদে ভিন্ন হয় না।
 
যদিও গোলটেবিলের দিন শেষ হয়ে গেছে
যদিও এখন সামান্য পাশে এসে দাঁড়ালেই আমাদের বরফের দিন শেষ হয়।
প্রার্থনার দিন নিজেকে উলঙ্গ দেখতে কার না ভালো লাগে।
 

১৭.
মরা প্রজাপতি উড়ছে
আর প্রজাপতির পিছনে উড়ছে তার ঈশ্বরকাল।
প্রশ্নময় জীব বোঝেনা
মৃত কখনোই ম্যাজিক দেখায় না
হাওয়া আসে, খুব শান্ত কুকুরের বাচ্চার মতো হাওয়া
থাবা দিয়ে অল্প খেলে
তারপর …বাকিটা হুজুগ এসে খেয়ে যায়।

শেয়ার
সর্বশেষ সংখ্যা