অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৫-এ প্রকাশিত হয়েছে কবি তৃণলতা কুরচি-র প্রথম কবিতাগ্রন্থ বকুলের পাপড়িতে ছাতিমের ঘ্রাণ। প্রকাশ করেছে বৈভব। প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব দত্ত। মূল্য ২৮০ টাকা। পাওয়া যাবে ঢাকা বইমেলার বৈভব-এ (স্টল ৫৭৫-৫৭৬)।
বিভাব কবিতা
একদিন জারুলবনে ফুটবে দু’টি নক্ষত্রফুল
তাদের সাজিয়ে কাঁধে
আমরা মালনিছড়া যাব
দূর মেঘালয় হতে বয়ে আসা
সুস্নিগ্ধ বাতাস আর
নক্ষত্রফুলের হাসিতে দুলবে সমগ্র সবুজ
ভুল নামে
কতবার রাতের আরশিতে একজন্ম দূরের শিরীষ গাছের
প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠলে, নাথ বলে ভুল নামে ডেকে উঠি।
যেমন শৈশবে আকাশের জমে থাকা, কোয়া-কোয়া মেঘকে
হাওয়াইমিঠাই ভেবে বহুবার করেছি ভুল।
আজও কায়ার মোহে মায়া চাপা না-দিয়ে
ঘোরের অঘোরে ফোটে সত্যের নৈবেদ্য-ফুল,
নাম তার পদ্ম নয়, কবেকার শুকনো বকুল।
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
রঙের তোড়
রাতের আঁধার ভেদ করে, এক টুকরো নিয়ন আলো গলে পড়লে সবুজ পাতার গায়ে, রাত সুন্দর আলেখ্যদর্শনে, অনন্ত হয়ে তুমিই মনে এসে দাঁড়াও, আমার ভিনসেন্ট। শহুরে কাচের দেয়ালে-দেয়ালে গোপন বিষণ্ণতা শুঁয়াপোকার শরীর নিয়ে, নব্বইটি সূর্যমুখীর খোঁজে হয় নিমগ্ন। কত-শত নিশুতি রাতের রঙসম একবিন্দু কাজল তিল লুকিয়ে, খরগোশের শরীর পালাতে চায় বেগুনি পপিফুলের ঝোপে। তদুপরি ফাগুনের নিশীথ আকাশে, কমপ্লিমেন্টারি রঙের তোড় কখনও দেখাতে দেয় নি, বাঁ-পাশে চাঁদের নিচে একটি তারার হাসি!
৪ মার্চ, ২০২৩
ভালো আছো, বকুল?
কতদিনের প্রতীক্ষায় আকাশ দাপিয়ে ঝরল বৃষ্টি, যেন চাতকের পিপাসায় সৃষ্টিকর্তা অধরে ছোঁয়াল জল। অনেকদিন না-দেখা ফুল তুমি, আজ বড় তারা-তারা লাগে। নিকুঞ্জ শূন্য করে আকাশ-দূরত্বে বাড়ি, অথবা আকাশস্থ তুমি, চাঁদ আর তারায় আবাস। মেঘের-শরীর-গলা বৃষ্টিতে আকাশের তারা ভেজে কি-না আমি জানি না, তোমার গায়ে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে কি-না এও কখনও জিজ্ঞেস করি নি। তবু আজ কেন হঠাৎ জানতে ইচ্ছে হল: তুমি ভালো আছো, বকুল?
১৮ মে, ২০২৩
মাঘীপূর্ণিমার চাঁদ
কোনোদিন, আমার বেহালার শিবরঞ্জনী রাগে
মাঘীপূর্ণিমার চাঁদ কাঁদবে, বকুল
সে-রাতে অঝোর ধারা থেকে দু’একটা ফোঁটা, যদি
নাগালে পেয়ে তোমায়, নিশ্চুপ ঝরে পড়ে ছাতিমায়
জেনো, সেই ফোঁটা আমি, একটা আলিঙ্গনের
প্রতীক্ষায় যে হাজারবার তলিয়ে গেছে তিস্তায়!
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
তৃণলতা কুরচি
কবি
জন্ম ২৫ ফেব্রুয়ারি। জন্মস্থান ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। আদিনিবাস বিক্রমপুর। পড়াশোনা ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর। মূলত কবি। পাশাপাশি মুক্তগদ্যও লেখা হয়।