আত্নহত্যাপ্রবণ ফুলগুলোর কাছে মধুপাখির প্রেমের চেয়ে তোমাদের সুগন্ধির বাক্সটাই জরুরী হয়ে উঠেছিলো, যেখানে লেখা আছে স্নানহীন বগলের ইতিহাস।
অথচ, আমি দৃশ্যের রংগুলোকে আলাদা করে দেখতে চাই ; ক’ফোটা আলো বেশী পড়লে দৃশ্যের কাছে রক্ত ফ্যাকাসে হয়ে ওঠে, আর ক’ফোটা কম হলে রক্তের সাথে পুঁজিবাদী ঈশ্বরের ভালোবাসা বেড়ে ওঠে। দেহের ভেতর একটা নদী আছে। নদীটার পাড় ভাঙছে কেবল। –
“দেহের ভেতর নদী আছে
সেই নদীর ও ঢেউয়ের চাপে
পাড় ভাঙ্গিয়া গেলে পরে
উপায় কিছু রবে না রবে না
নদীর জলে ঝাপ মারিস না,
ও মন আমার নদীর জলে ঝাপ মারিস না…
নদীর জলে নৌকা চলে
তলে চলে মাছ।
প্রেমিক মাছ শিকারি ডুব মারিয়ে
প্রেমেতে হইলো বিনাশ। নদীর জলে ঝাপ মারিস না ”
কেবলই একটি কাঁটাবিহীন ঘড়ির কান্না কানে বাজছে গান হয়ে। সময়ের চিড় ধরার দৃশ্য এবং দৃশান্তরের রংগুলো যাওয়া আসা করছে চোখের সামনে। কেউ কেউ মানুষ হবার দায়ে মানুষ জন্মের দায় এড়াতে পারছে না, আবার কেউ কেউ একটি শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে ভুলে যাচ্ছে কিংবা ভুলে যাবার মুখোশে আড়াল করছে নিজেদের। সব মিলিয়ে সময়টা কুলের লোভে কুল হারাতে বসেছে। বিপন্ন আজ আমাদের মনস্তত্ত্ব, আমাদের মধ্যবিত্ত মনঃস্তাপ আমাদের ঠেলে দিচ্ছে সময়ের কালো কালো রেখা ছুয়ে ফেলার দিকে। আমাদের আলো বন্দি দৃষ্টির চারপাশ জুড়ে আলোহীনতা, আলোর দৈন্যতা। আমরা কেবলই ভুলে যাই পিতামহের পা ফাটা অন্তরের অবয়ব। ভুলে থাকি মৃত্যু মূলত জরায়ূর দিকে ছুটে যাওয়া।
আমরা মরতে গিয়ে বারবার ঘুমিয়ে পড়েছি, অথচ ঘুমোতে গিয়ে একবারও মরছি না। আমাদের ঘুমের ভেতর একটি রং করা মাছ ঢুকে পড়ছে, অথচ শাপলার শালুক ঢুকে পড়ছে না, আর তাই আমাদের ঘুমের সাথে সাথে মৃত্যুর রং কেবলই ফ্যাকাসে হচ্ছে।
—— রাজীব জবড়জং