আনিকা শাহ
।। স্বপ্নসংক্রান্ত ।।
০১
আমরা তোমার বাড়ি খুঁজছিলাম। তুমি আর আমি, আমরা হাঁটছিলাম রাস্তায় রাস্তায়, আর তুমি সবার কাছে জানতে চাচ্ছিলা তোমার ঠিকানা। এমনকি তোমার আত্মীয়-স্বজনদের কাছেও। তুমি অবশ্য চিনতে পারছিলা না তাদের কাউকেই। আমাকেও কি চিনতে পারছিলা তুমি? তোমাকে? খেয়াল নাই। তুমি কেবল তোমার ঠিকানা খুঁজছিলা।
০২
আমরা একটা জাহাজে ছিলাম। একটা শহর ছিল জাহাজটায়। গাছপালা, রাস্তা। বৃষ্টি পড়ছিল। আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম শহরে। কোথায় যেন যেতে চাচ্ছিলাম আমরা, কিন্তু পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বাইরে সমুদ্র দেখা যাচ্ছিল। আমরা ভিতরের শহরটায় হারায়ে গেলাম।
০৩
টেবিলের উপর রাখা বোমাটা ফেটে গেল। বিকট শব্দ হল, ছিটকে গেল চারপাশের সব। পরে তোমাকে ফোন করেছিলাম আমি – জানাতে যে আমি মরে গেছি।
০৪
রেস্টোরান্টটায় আমরা ঘুমাচ্ছিলাম। সামনাসামনি চেয়ারে বসে, টেবিলে মাথা রেখে। স্যান্ডউইচগুলা একেকটা দেখতে একেকরকম ছিল, আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না কোনটা খাব। আমরা চলে আসলাম। বাইরে-রাখা বেঞ্চটায় বসার পর থেমে-থাকা বাইকে বসে থাকা লোকটা জিজ্ঞেস করল, তোমরা কী করছিলা? আমরা বললাম আমরা ঘুমাচ্ছিলাম। তারপর তুমি শহরের অপরপ্রান্তে যেতে চাইলা জলপাই খেতে।
০৫
অনেক বড় মাঠ, লম্বা সবুজ ঘাস। আর মাঠের মধ্যে মধ্যে ছড়ানো-ছিটানো ডিম। খরগোশের ডিম। আমি মাঠে দাঁড়ায়ে আছি – ঝুড়ি হাতে, ডিম কুড়াচ্ছি। হালকা গোলাপি-সাদা ডিম। মুরগির ডিমের চাইতে আড়াই গুণ বড় ডিম।
০৬
আই ড্রেম্ট্ ইউ ডাইড। পানিতে ডুবে মারা গেছ। যে বাড়িটায় তুমি থাকছিলা সেটায় সুইমিং পুলমতন ছিল একটা। সেখানে ডুবে মারা গেছ। সুইমিং পুলঅলা জায়গাটা দেখতে গুহার মতো। গুহার ভিতর পানি। না গুহা না ডান্জন্। নিচে পানি আমি উপরে রেলিং ধরে দাঁড়ানো। তোমাকে দেখা যাচ্ছে না কোথাও। ভাবলাম সেইদিনই তো দেখা হল। সেইদিনই দেখা হয় নাই। কিন্তু তাও ভাবলাম। সেইদিনই না-দেখা হলে পর কতকিছু বলা হয় নাই। আমি এসএমএস লিখতে লাগলাম তোমাকে। কিন্তু ওখানে তো এসএমএস যায় না। সেটা তো আমি জানি। তোমার থেকেই জানি। এখন কী করব আমি এলিজি লিখব? কিন্তু তুমি তো মরো নাই!
০৭
ওরা আমাকে কিছুতেই যেতে দিবে না। ‘তুমি তো কন্ট্র্যাক্ট সাইন করেছ। ওখানে তো লেখা ছিল। ‘কিন্তু… তাই বলে… এত…’ ওরা আমাকে কিছুতেই যেতে দিবে না। ‘তুমি কন্ট্র্যাক্ট সাইন করেছ। দেয়ার্জ্ নো ওয়ে আউট।