ডার্কচেম্বার
অসুস্থ হলেই ভালো। এখন এমনই মনে হয়।
ধীরে সুস্থে, তর্ক-টর্ক ছেড়ে অন্য কারো ভাবনায়
ঢুকে পড়া যাবে। ডার্কচেম্বারের পাশ দিয়ে জানি
খালি পায়ে হাঁটা প্রয়োজন। যদি ফলস কোনো শব্দে
দুপুরের রোদ ওঠে, আই মিন, ওপরের থেকে
মেঘগুলি সরে যায়, হয়তো দেখেই ফেলতে পারি
একটি পারুল ডাকে ইশারায়, শিস দিয়ে। কাকে?
কিছুটা পার্পল, রেড-ভায়োলেট এই থতমত
মুহূর্তের ফাঁস যেন মিটমিট হাসিতে ছড়ায়।
গুইসাপ তার ধূসরতা নিয়ে এত যে বিব্রত
বেড়ালের গাম্ভীর্যও ভরে গেল নিঃশব্দ ঠাট্টায়।
অনুতাপ
দ্বিরাগমন
চলে গিয়ে ফিরে সে এসেছে। নাগকেশরের বনে
এমন দুলছে হাওয়া, সাপের ফণাও হেলে পড়ে।
ইশারাই আমাদের মাতৃভাষা। বলে কেউ। তবু
কে জানাবে তাকে সম্ভাষণ, এই কুন্দফুল ছাড়া!
ফিরে এসে চলে গেছে তাই। নাগলিঙ্গমের বনে
এত নির্জনতা, পাখিদের স্বপ্নভঙ্গ হয় বুঝি—
এই ভয়ে তির তির করে বয়ে চলে শীতলক্ষ্যা…
ফুল তোলা
ঘ্রাণই তবে ফুলের গর্জন। জারুলের বনে তাই
সুচির স্তব্ধতা। স্তব্ধতার বুকে এই ভাঙা পার্ক।
এইখানে এসো। এসে দ্যাখো, কত নির্ঝঞ্ঝাট বসে
প্রত্যাখ্যান-পত্রগুলি আজ বারবার পড়া যায়—
ঠান্ডা ছায়া ফেলে ক্ষুব্ধ অক্ষরের মুখের ওপর।
কৃষ্ণচূড়া গাছ থেকে খুনের পরিকল্পনা কবে
ঝরে পড়েছিল— ওই লেক জুড়ে ভাসছে। ভাসুক।
জলে না নেমেও কিছু ফুল তুলে আনা যেতে পারে।
বৃক্ষরোপণ
আজ ভোর না হতেই কে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল একা—
কোমরে পিস্তল নেই, অথবা ফুলের তোড়া হাতে।
কেউ ওকে আর ফলো করো না, ডেকো না খামাখাই।
বসে থাকতে দাও ওই লেবুকুঞ্জে, স্তব্ধতার পাশে।
কবরের জায়গাটুকু আগে থেকে মেপে রাখা ভালো।
আরও ভালো নিজ হাতে নিজেরই শিথানে শিউলি পোঁতা।
টিয়ে পাখি তার সব কথা টুকে রাখুক না গাছে—
লিখুক না চিঠি, দিনভর, পাতাকুড়ানির কাছে।
সোহেল হাসান গালিব
সহযোগী অধ্যাপক, সরকারি ফজলুল হক কলেজ, বরিশাল।
কবিতা—
চৌষট্টি ডানার উড্ডয়ন * সমুত্থান, ২০০৭
দ্বৈপায়ন বেদনার থেকে * শুদ্ধস্বর, ২০০৯
রক্তমেমোরেন্ডাম * ভাষাচিত্র, ২০১১
অনঙ্গ রূপের দেশে * আড়িয়াল, ২০১৪
সম্পাদিত গ্রন্থ—
শূন্যের কবিতা (প্রথম দশকের নির্বাচিত কবিতা) ● বাঙলায়ন, ২০০৮
কহনকথা (সেলিম আল দীনের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার) ● শুদ্ধস্বর, ২০০৮।
সম্পাদনা [সাহিত্যপত্রিকা] : ক্রান্তিক, বনপাংশুল ও ওয়েবজিন www.porospor.com
ই-মেইল : galib.uttara@gmail.com