আগারে-পাগারে ভাসে সুহাসিনী কামিনীকাঞ্চন।
ঘুমের বিবাদে স্বপ্ন ভাঙে—শুনি, যামিনীকীর্তন।
কালীতে, ধনুতে ডোবা নৌকা হৈয়ো স্বাতীর বিবর।
কীর্তন গাহিয়া ভোর এনো জালে, কার্তিক ধীবর।
দুনিয়া এবার টিকে গেলে ঘুরমু, করমু বাহাদুরি।
খোদায় আমারে নেয় য্যান শীতের খালিয়াজুরী।
উদাম গতরে লোকে হাঁটে রেডিয়ো বগলে নিয়া।
আমুদে-আমুদে পান খায় বিবি- বাবা জর্দা দিয়া।
এতো যে সরল লাগে খোলা বুকে শিমুলের তুলা,
অনঙ্গ মেয়ের হৃদি সদা লাজে বিবাহে পৃথুলা।
কি যে মনোহর আহা আহ্নিকে গাঙের ধূমপান—
আশিক এসেছে জেনে ধানে কুয়াশার অবদান।
কত না বিয়ান মাঠে সে ধরেছে আলোর নাচন,
হাওরের লোকেরা যেবা বাঁচে ক্ষুদ্র মাছের বাঁঁচন।
১৬ মে, ২০২০
Ω
[লিলিয়া ও রাফিনকে]
বাহিরে ভীষণ থেমে আছে দম—অক্ষম ধিক্কার
আদিম আত্মায় রুয়ে চলেছে হিংসার চারুবীজ।
ঘরের নজরে পর—পুঁজির পো-ক্যাট সিনড্রোমে
ক্রমশঃ মুখের শত অধিকারে সতত মুখোশ—
স্পর্শের বিশ্বাসে কোনো হাত আজ পরোয়া করে না
একান্ত আহূত ছায়া কিংবা তীব্র প্রেতের দোসর।
তবুও লিলিয়া ঝরে কবরের অনেক সন্ধ্যায়—
পুরানা বৃষ্টির ঝাঁপি ঢেকে ফ্যালে বহু অনটন।
তবুও আহত প্রেম সুকুমার মৃত্যুর নিকটে
রাফিনের লাল চোখে ঢলে পড়ে প্রেমাস্তের রবি।
বিয়োগে-বিয়োগে যোগ—গণিতের সূত্র চিরকাল
মেনেছে কী পৃথিবীর সচেতন ধর্ম বিভাজন?
হত্যাই যখন সত্য—অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেয়া
সময় লিলিয়া নেই, লিলিয়া নেই চিৎকারে কাঁদে।
৬ জুন, ২০২০
Ω
আহা! মারমেডের ব্রা হারানোয় সূর্য এলোমেলো!
অল্প খাতিরের মতো বাঁকা দেহখানি বিছানায়
ক্যামন নাভির গানে বুদবুদ ঢঙে নাচে-গায়—
নিষুপ্তর ক্যামেরায়- লঙ শটে ন্যুড ফটোটায়
মেরিলিন সিনড্রোমে স্বাতীমেয়ে ভোয়্যার ছড়ায়।
বাৎসায়ন ইরোটিকা লাগে ভালো যত তারে ছাড়ো—
তোমার নয়নতারা তুমি ওগো দেখাতেই পারো।
যেন শাগালের হাত এঁকে দিছে তরুণী তামাটে—
কোরক স্তনের কাছে বিছাগুলি হাছাহাছি হাঁটে।
মন্থন বিছায়ে শোয় যদি বিবেকের হরকারা—
দেহের আহ্বানে দেহে করে না সন্দেহ মুহূর্তরা।
দ্বিধান্বিত সরোবর সাঁতরিয়ে খুঁজে পেলে ধনু—
কালের ঢাকের তালে শকুন্তলা, তুমিও অতনু।
থ্রিল জুড়ে স্বর্ণচাপা—ভুল চাপে খুনে ঝরে গ্যালো।
২৭ এপ্রিল, ২০২০
Ω
আদিম নালিশ শোনো, ভুলে গেছি ছোঁয়া।
আমারে পাঠাও ওই পাড় পৃথিবীর—
যেখানে তোমার ‘পরে ঝরেছি, অসূয়া।
মুখর দিনের ভারে অলিক নিধির
নখরে শোণিত আজ পরমের নাম—
বরাত রাতের দোয়া, আনত সেজদায়
আহত কামিনী এসে কুড়ালো দুর্নাম।
নামাজ আমার খোদা—হলো না আদায়—
দূরতম শূন্য শ্লোকে গোপন রাখিনি
কী চায় মামুলি আধি, পরের ডাকিনী—
যেখানে তোমার ‘পরে আমারে ডাকার
অশেষ কারণ শোক—উভয়ে নিথর—
তলিয়ে যাওয়া ধ্বনি কেঁপে-কেঁপে কার
প্রেমের শরীরে খোঁড়ে নিখুঁত বিবর?
১০ এপ্রিল, ২০২০
Ω
ভাঁট ফুলে হামা দে’য়া রবির মদিরা—
পাতার সংসারে দ্যাখো শুকায় বু’জিরা।
ছাদ পেটানোর গানে কেউ আলগোছে
উঠানে পায়ের চিহ্ন নিছে সব মুছে।
আর্তির ঘোমটা খোলা তীর্যক দুপুরে
নতমুখ দয়িতার বিছুনের সুরে
বাঁশ নুয়ে ছায়াবনে গোস্তে চাখে নুন—
লাজুক আয়েশে আম্মা রাঁধেন সালুন।
মশলার আচরণ বেজায় বেড়ায়
ঘ্রাণে-ঘ্রাণে রসনার পাড়ায়-পাড়ায়।
চুলায় আম্মার ফুঁ-তে যোহর-অক্তের
নামাজ আছরে যায়—থালায়, ভাতের
লোকমায় পুত্রমুখ দেখে খাদ্যহীন
কাটে তাঁর দিন—আম্মা এতটা গ্রামীণ।
২৯ জানুয়ারি, ২০২০
ইমেইল : the.poet.saint@gmail.com