ইবাদত
শীতের রাতে পাহারা দেবে জলের ধারা?
দেখাও তবে শরীরখানি ক্ষেতের পাশে
কোমল পিঠে হাতের জাদু ভাসবে নাকি
সাহস করে চুলের বেণী টানবে খুলে
ইচ্ছে হলে নাইতে নামা মরণ ঘাটে
মন্ত্র পাঠে সাঁতরে যাবে অল্প পানি
তৃষ্ণা থেকে জন্ম নেবে বিরুপ হাওয়া
কীর্তিনাশা শীর্ণ নদী শান্ত হলে
কানের পাশে ক্লান্ত কথা বলবে শুধু
প্রেম যখনি সেজদারত তোমার পাশে
জগত জুড়ে মুক্তি নাকি এই এখানে
অন্ধ হলে শরীর থেকে বংশ বাড়ে
নেতিয়ে পড়া এমন প্রেমে, ক্লান্ত তুমি!
ঐ উড়ে এক শীতের পাখি যাচ্ছে দূরে
ক্ষেতের পাশে কুন্দ ফুলে গাঁথছে মালা
লেপ্টে রাখো তোমার চুমু মালার পাশে
কল্লোলিত এই নদীটা হাঁটতে থাকো
হাঁটতে থাকো চলাচলের উল্টো পথে
এমন শীতে আমিষভোজে মন মানে না
প্রেম যখনি সেজদারত আমার পাশে
শীত শীত লাগে, দেহে
শরীরে শরীরে মহা সংবরণের রাত আসে শীতে।
কাটাছেড়া রাতে কে যে এত করে মারে
রে হায়, ও প্রেম দেখো শীত এসে যায়।
এত রসে ঘেমে যাই। কোথাকার শীত
সব হাড়গোড় এক করে দিলো আজ।
বুঝি আজ, এসবের কোন মানে নাই
সাধনায় যারে চাই, তার প্রাণ কার তরে হায় হায়
লতিকাখানিতে চুমু দিয়ে বলে, কুহু
কার তরে তার দেহখানি, রোজ হয় সমাপিকা ক্রিয়া
চিরকাল কার তরে কাঁপে পাখি, নব নব শীতকালে।
স্নেহ
বৃষ্টি পেলে মরাটে ঘাস সবুজ হবে, সত্যি নাকি?
আঘাত পেয়ে লুটিয়ে যাবে, দুলতে থাকা ঝুমকো জবা
আসবে কি সে ঝক্কি শেষে, বিরান মনে বাড়িয়ে গতি
সুযোগ পেয়ে জানলা ধরে, শুধু এখন তাকেই ভাবা
এমন ক্ষণে কোথায় যাবে, সারাটা দিন মনের তাপে
জল গড়াবে শয়ন মাঝে, কুপির আলো নিভিয়ে রাতে
এখন শুধু তাকেই ভাবা, বধির যেন ঠোঁটের শিসে
ঔরসে এক বেড়াল ছানা, তবে এখন ভয়টা কিসে!
বাহুর ভাঁজে বাড়বে শুধু, দরদ মাখা পরম শিশু
মাতাল করে রাখবে মাটি, সে কি নিজেই জগত যিশু!
জানি তো এক মাতাল নদী, তোমার মতো তারও হবে
শিশুর ত্বকে তোমার স্নেহ, ধ্রুবতারায় আসবে কবে!
লুটপাট হলে পরে
খুব বদমাশ, শীত বৃষ্টির রাত
মেঘে বিজলীর, শুধু শাদা ঝলকান
ভূমি থেকে দেখি, নিশিভূত উঠে আসে
যার খুণী চোখে, তরবারি ধারা শান
ছাই রঙা নোনা হাওয়াতে, কৃপা হোক.
আদিপাপ, কামনার যত শেরগান
পালানোর দিনে, বুনোঝড় খালি ওঠে
রেণু পেয়ে পাখি বুঝি, ফিরে পাবে প্রাণ
কাঁচা সড়কের ধারে, সুধা এলে ফের
বিবাহের দিনে আসে, সেই আনচান
কুয়াশার ছাটে, যত গাছ বাঁচে, তাকে
দিয়ে দিও, মুঠোভরা কিছু ফুল দান
গোপনের তিলে, ছুঁয়ে রাখা মধুঠোঁট
মায়াযুথে শুধু, হয়ে যাবে হয়রান
জলঘরে যার, তিথিভোলা তোলামুখ
বনপথে তার স্বরে, ভাসে জাফরান
ভাসানের দেবী, কোন পথে ডুবে যাবে
লুট করে নেবে, প্রেমিকের ভীরু জান!
পালকের মতো খসে যাই
বুকে ঝিরঝির কী যে বর্ষা তোর, তুই
ঠাণ্ডা জল, তুই পল্কা দিনে
ঘনতর বেদনার সংবেদনে, তুই
শক্তপোক্ত কি পাহাড়ি মাটি
তৃণজীবী প্রাণটাকে অধিকারে রাখলে,
সিসিফাস কেন যে বলছে কথা
পিঠাপিঠি মেটাফোরে গলে যায় স্নোবল,
টলতে টলতে কে কবিতা পড়ে
নদীঘাট পার হয়ে বালিতে নাম দেখো
লিখছে যারা, তারা অদ্ভুতুড়ে
কোন মহরতে তারা মিললো শেষে,এলো
ভেসে এ বোরোক্ষেতে রক্তজবা
কার কার মৃতদেহ বুকেতে পুষছিস
সে খবর রাখছি জন্মদাগে
সাঁতরাতে ভুলে গেছে ফণা তোলা চোখটি,
তাকে আজ দিচ্ছি পরিত্রাণ
জলভরা মাঠে এক তন্বী আমি, আমি
ভাসতে থাকি তোর উস্কানিতে
নাদিয়া জান্নাত
জন্মঃ ৩১ আষাঢ়,
উত্তর জনপদ, রংপুর।