যা ঘটে, ঘটে
“স্বরে অ, স্বরে আ” পড়ে ছাত্র হবো,
একটা গ্রহের, ভেবেছি,
যখন আসি নাই, দেখি নাই
একটা মাছের জীবন ছেড়ে
জাদুবাস্তব দেশ থেকে, যেখানে
নদী “তান ও সুর”-এর সিরিনিটিতে চলতে থাকে।
আল্লাহ যখন ডাকছিলো ঘরে,
“মাছের কাপড় দিবো নাকি পরায়ে?”
যখন আমি আসি নাই, দেখি নাই
অতিলাল ও অতিবেগুনি ছাড়া কিছু,
চুপচাপ আঁশে ভরা মাথা, একটা ধাঁধাঁলো চিন্তা,
আইলার মতো
চোখে নাকে মুখে ঠোঁটে হাতে পায়ে নখে
ঢুকে পড়ে টানা,
জ্বরে পড়ে যাই।
আল্লাহ তুমি দেখো নাই,
সময়ের অটলতা ভাঙুক – অনুরোধ করো নাই,
কারণ, আলাদা আলাদা সব,
লাগতো, কিছু সাদা সাদা ধানের ছইয়ে।
এইভাবে বাঁচার মতো কিছু কথা বলা যায় না।
জেলেদের দলে মিশে
একটা অবলা চরে যাইতে বললা,
এ গলি, ওই গলি যাইতে আসতে
মাছেদের কাপড় পরে
মাছ-মাছ গন্ধ পেয়ে গেলে,
জেলেরা চলে গেলো নদীতে দাঁপাবা বলে।
আমাকে সবাই দেখে দেখে গেছে,
চোখে চোখেও যোগাযোগ না করে,
কেউ এসে একটা চুমুক দিবে কারো সাথে,
এটা একটা মিথ নাকি,
মাটিতে পোঁতানো এলাকা জুড়ে।
কেমন লাগে, কেমন লাগতে পারে,
বেড়াল-বেড়াল ভাতঘুমে
পীতলের থালা হয়ে সেঁটে আছি ওয়ালে, যখন।
ঔচিত্য
কুয়াশা আকাশ ও প্রকৃতির ডিপ্রেশন।
প্রতি শীতে,
বিদ্রোহ হয়ে
ছিটকে পড়ে, জমিনে, উদ্যানে,
উপাদান,
আকাশ ও প্রকৃতির মুক্তির ক্যাম্পেইন,
যেন কুলা থেকে চাল ঝরে পড়ে।
রিকশা চলতেছে,
শাঁই, শাঁই।
কু্ঁজো হয়ে বসে সিটে,
অল্প করে কাঁপতেছি বাহাদুর বাদুড় হয়ে।
আমার গাল গোসল করতেছে শিশিরে
চোখ দুইটা ঘুমায়ে যাচ্ছে বাতাসে
আমি ফিল করতেছি,
জমায়ে আসা অনিন্দ্য মধুরণন
তোমারে নিয়ে।
এই শহরে, মোড়ে মোড়ে
স্পিডব্রেকারে ধাক্কা খাইলে
উঠে যাই, চোখ কচলায়ে,
সবসময়,
তখন বলে উঠছি,
“মামা, আপনার সোয়েটার কই?”
খোদা, তুমি বলো,
বলো আগুনে দিতে!
মেঘের ভেতর ঢুকায়ে দিতে!
খোদা,
আকাশ ও প্রকৃতিরে ডিপ্রেশন দিছো কেন?
উঠায়ে নাও, ভেঙে দাও,
কারণ উচিত, সূক্ষতা ও শুদ্ধতায়
বাঁচুক সব।
মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া
আমাকে,
সবাই,
বলছিলো “মিথ্যা বলা মহাপাপ”।
আমি দেখছি কীভাবে,
কীভাবে চলমান চালচিত্রে মিথ্যারা লেপ্টে থাকে,
ছাড়িয়ে, চড়িয়ে।
মিথ্যা,
মিথ্যারা পিঁপড়াগুলায় পিঁড়ি পাতে,
শেষে,
সরষের মতো দানা
ভূতের মতো কাকতাড়ুয়া
ভাতের মতো ক্ষুধা
আমরা চোখে দিয়ে মরে যেয়ে আবার আসি যেন!
শুধু আসার স্বার্থে,
চলছে, চলবে, বলে বলে।
আমরা আসতে পারতাম তাকাতে,
মাথা তুলে,
সামনে, পিছনে, পাশে,
কবর থেকে উঠে।
কিন্তু লেগে থাকা কাঠের গুঁড়ার সাথে,
ঠেলে ঠেলে, ঘষে ঘষে
বেঁকে যাওয়া গাছে
আমাদের নিত্যতা পূজা করে।
রয়ে বদ্ধ প্রাচীন কোনো গুহায়
বা অতলান্তিকের ডুবোচরে,
কিন্তু, কিন্তু, আমাদের
এখানে এসে তাকানো, উঠে,
একটা আলোর রেখা
একটা মমি আকারে একভাবে,
কেউ কখনো দেখলো বা কেউ কখনো না,
যা হওয়ার হতে পারতো!
ঋতু
যা বোধগম্য ইন্দ্রিয়ে,
একটা বৃদ্ধ গাছের মোটা থামের উপর পড়ে থাকে,
রোদে, শীতে, বৃষ্টিতে।
রোদগুলো জলাশয়বিহীন
শীতগুলো উত্তাপবিহীন
বৃষ্টিগুলোতে বিপ্লব
আমাদের এরপর, চলে চলে যাওয়া,
তুমি, “কোন গগণের তারা”,
লিথারজিক জিজ্ঞাসা!
এবং ছেড়ে,
লাগোয়া ইনভিজিবিলিটিতে
একটা পাখি কোলে তুলে
সাত আসমানের উপরে
কিছু একটা দেখায়, দেখায়।
এবং দেখায় দেখায়,
গোল হতে হতে সমতলের পথে হাঁটে পৃথিবী।
রোদগুলো উত্তাপবিহীন
শীতগুলো জলাশয়বিহীন
তবু বৃষ্টিগুলোতে বিপ্লব ঠিক,
জানি,
অঘরোয়া আভাসে
এখানে, বুক জুড়ে,
হোমো ইরেক্টাস থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স বিচরণ করে।
বিচরণ করে।
গড়ে।
গাঢ় হয়ে৷ গাঢ় হয়ে আসে।
এক হওয়াটা সত্য ছিলো, বিচ্ছিন্নতাবোধে।
যখন তারা আসে
একটা কুকুর খবরদারি করে
নির্জন জনারণ্যে উচাটন হয়ে শুয়ে।
ঘুম ও হাঁটা দুই হাতে,
ঝুঁকে, জুড়ে,
সিঁড়ির পর সিঁড়ি চলে যায় রেখা বেয়ে, অসীমে।
ভোররাতে, আজান পড়তেছে যখন,
বাস্তুহারা বাড়িতে,
হলুদ পোড়া গন্ধের মতো
কে আসলো ছায়ায় ছায়া ফেলে?
তারা আসে,
রোহিনী তারা “জীবনের সই” পাতাতে,
একটা ঝরাপাতায় লেখা,
হে পুরুষ,
তুমি ঘুমায়ে যাও আমার দুর্বাঘাসের তলায়।
রাঈসা সিদ্দিকা
পুরকৌশলের ছাত্রী। কবিতা ভালোলাগার জায়গা, ইতিহাস চিন্তার খোরাক যোগায়৷ জানার, পড়ার আগ্রহ সীমাহীন, সাথে নিজের কিছু সৃষ্টি রেখে যাওয়ার ভাবনা৷