নির্বাচিত ২৫ কবিতা | কাজল শাহনেওয়াজ


ল্যুনাটিক


অবিস্মরণীয় লতাতন্তুজাল ছড়িয়ে ফিরে এলো
অর্ধেক ডুবে যাওয়া প্রাচীন মহিমা,
জড়িয়ে ছিলো তার গায়ে ঘূর্ণিপাকের জ্যোৎস্না।
রাখতে হাত ছুঁয়ে দেখি, একি
পালিয়ে গেলো জলভূত, মৃত নৌকায়
নগ্ন বাহুর অন্ধকার,
জলই যেন অভ্র হীরের কুঁচি।

কাক যেন উঠে এলো জলের নিলীমায়
মনে হলো সেদিন যেন ভুল করিনি কাকের কালো অন্ধকার ছুঁয়ে,
আজ বুঝি তাই রয়ে গেল নীল আমার অন্তরে।

রাত হলো নীল ফুল প্যান্ট
আমি হলাম পা
আমিই ফাটাবো চাঁদের সীমাবদ্ধতা।
রাতে শিশিরের নাটবল্টু ঝরে যায়।
রাত জেগে তবু চাঁদ দেখি
চাঁদ নয়, আমিই মহারাজা স্বপ্নের ভেতরে।
জয় চাঁদ, জয়।


লোরকার অসতী নারী


গাঁয়ে গঞ্জে হেঁটে হেঁটে পাখির স্বভাব পেয়েছিলো
আমিও তাই আখমাড়াইয়ের রাতে
শিশুকালের গল্প বলতে বলতে পেঁচিয়ে ধরে গলা
আলগোছে একমুঠা ধূলাবৃষ্টি ছড়িয়ে দিলাম
ক্লান্ত ও কম্পনশীল উষর পেশিতে।

বাঙ্গালি মেয়ের উরু, অল্পকিছু স্থুল আর নিতম্বের দিকে
কদমফুলের মতো কিছু ভেজাগন্ধ, শরীরে তার কিছুটা বন্যতা।

যেন চষা খেতে বৌটুবানির ফুল।
অর্ধেক তার মনের ভেতর খেয়ালি স্কুল
বাকি অর্ধেক মৌন আমন্ত্রণ – খোলাচুলের প্রান্তে লুটানো,
পেটিকোটের লম্বা ঝুলে।

কাঁটায় কাঁটায় রক্তাক্ত পা
ডেটলে নয়, আজো আমি গাঁদা পাতার রসে
মুছিয়ে দেই, পরম আক্রোশে।

বৈঁচি ঝোপের আড়ে
মেখে নিলাম পাখির শরীরে
বোধগম্য রেণুর আবরণ।

আখমাড়াইয়ের রাতে
জেগে উঠলো গাঁয়ে গঞ্জে হেঁটে হেঁটে বন্য পাখি
আমার নারী
কিছুটা অদ্ভুদ,
চোখে তার রক্তলাল গলিত চন্দন,
লোকে বলে ও নাকি অসতী!


বৃষ্টি


মিনিটে পনেরশো মেশিনগানের গুলির মতো
ঝাঁপিয়ে পড়লো বৃষ্টি টিনের চালে
যেন বৃষ্টি বাহাদুরপুর জংশনে একটি
রেলগাড়ির অন্তহীন প্রবাহ
যেন বৃষ্টি বানীদের ছোটবোনের অনর্গল কথা বলা।

একটা চারকোনা রুমালের উপর বৃষ্টি পড়ছে খোলা আকাশ থেকে
একটি ঘাসের চাবড়ার উপর বৃষ্টি ঝরছে
সমুদ্র থেকে আসা নুনবর্জিত জলরাশি থেকে।
আবহাওয়া বিভাগের ফানেলের ভিতর বন্দী হচ্ছে
জগৎ জোড়া বৃষ্টি
বৃষ্টি বৃষ্টি বৃষ্টি
আর মুক্তা বিন্দুর মতো জ্বলছে একটি ক্ষত, জ্বলছে একটি
নোনা হাওয়া লাগা রাত।

বৃষ্টি ছিলো কাত হয়ে শুয়ে
বৃষ্টি ছিল চিৎ হয়ে শুয়ে
বৃষ্টি মেঘের চুলের ভিতর বুনো হাঁসের মতো লুকিয়ে ছিলো।
আকাশ থেকে পড়তে পড়তে
পুকুরে বাজালো তবলা
তীক্ষ্ণ নখ দিয়ে ছিঁড়লো গাছের পাতা
তারপর দূরন্ত শিশুর মতো মায়ের কোলে নেতিয়ে পড়লো
সূর্যাস্তের বিষন্ণ আলোতে

তবু বৃষ্টি পড়ছে আমি দেখছি একটি চোখের অন্ভূত দৃষ্টিতে
শাদা দেয়ালের রন্ধ্রহীন ভুতে পাওয়া বাড়িতে
তীরের মত ছুটে আসছে
তবু বৃষ্টি কারখানার ধাতব ঘর্ষণে

মিনিটে পনেরশো গুলির মত
বৃষ্টি এসে বিধছে চাকুরিহীন যুবকের বুকে
বৃষ্টি এসে বিধছে নোনা মাটির বুকে
বৃষ্টি এসে বিধছে কিশোরীর প্রেমহীন পুষ্টিহীন মনে
বৃষ্টি এসে বিধছে শাদা কাপড়ের ভয়ে কাচুমাচু
আমার আব্বার চাকুরে জীবনে…


তুমি দাঁড়িয়ে ছাদে


তুমি দাঁড়িয়ে ছাদে
পাটিসাপটা পিঠার মতো
রেলিং-এর ঘাড়ে তোমার হাত,
যত কাছে আসতে থাকি
বদলে যায় তোমার স্বাদ;
কখনো তুমি চৌকো টিনের বাক্সে রাখা
মালাই আইসক্রীম,
কখনে। লঞ্চে চা-এর সাথে বিক্রি করা
পাকানো কুকিস।

আমি খাবো কি খাবো না ভাবতেই দেখি
এসে পড়েছি স্বপ্ন সীমার ভেতর
রেলিং-এ সুপারী গাছের ফুল
মাতাল গন্ধ ছড়ায়-
সূর্যাস্তের দিকে ফুলেো মেঘের পাউরুটি;
‘কোথার কে’ ‘কোথায় কে’ বলতে বলতে বুনো টিয়ে
হঠাৎ উড়ে চলে গেল মাথার উপর দিয়ে।

চতুর্দিক বদলে গেল তোমার চুলের অরণ্যে
মেঘের দাসী নিপুণ সাজালো চিবুক ব্যাপী
ঠিক বিকেল বেলার কমলা লেবুর রস

শরৎকালীন ধোঁয়া উড়ানো বিকেল থেকে
আমার সাধের খাবারগুলো উঠিয়ে নিলে
তোমার স্বাদু আঙ্গুলগুচ্ছে
আর তা আমার মুখে তুলে দিলে সেই ছাদে দাঁড়িয়ে।


সাইবারনেটিক্স


তুমি এলে ট্রাক্টরের কলকব্জা নড়ে ওঠে
নিঃশ্বাসে কাঁপে ঘাম
তুমি এলে সাইলেন্সার থেকে ভকভক ছোটে

তুমি থাকো যদি চুপচাপ
ধুলো ও কার্বন জমে ইনজেক্টরে
বুঁজে যায় থার্মোষ্ট্যাট ভাল্ব

তুমি না এলে
নড়ে চড়ে ওঠে হিসেবের গভর্নর, বিনা তাড়ায়
ধানখেতে কালো ফড়িং পেশী টানটান করে দাঁড়ায়।


হাইড্রলিক

(আব্বার স্মৃতিকে মনে করে)


আমার হাত স্মৃতির পথ চলা থেকে নেমে এসে
কণ্ঠরোধ করছে আমাকেই বিশাল
একজোড়া হাইড্রলিক হাত

ভারী হয়ে উঠছে পা যেন বহুদিন
রোপা আমনের ক্ষেতে দাঁড়িয়ে ছিলাম
হতবিমূঢ় একজোড়া কাদামোজা পরে

আজ আমার চোখে কুয়াশা অবিকল
অঘ্রাণের খামার বাড়িতে একজোড়া
পুকুরেরই মতো


পরিস্থিতি


আসবে যদি ভাব নিতে তবে পিপা নিয়ে এসো
কালো ওয়েল্ডিং গ্লাস চোখে পরে এসো
সীসার জ্যাকেট পরে এসো
মিলিটারি বুট পায়ে এসো
গ্লাভস নিয়ে এসো

বলাতো যায় না কখন কি ঘটে যায়!


একদিন আনারস


নির্জন জায়গা দেখে আমি একদিন আনারস ক্ষেতে ঢুকে
চুপ করে একটা আনারস হয়ে গেলাম
অনেকগুলি চোখ দিয়ে এক সাথে অনেক কিছু দেখবো বলে।

অনেকগুলি বেদনাকে আমি দেখতে পাচ্ছি অনেকগুলি সম্ভাবনা
দেখছি এগারোটার সূর্য একদিকে টগবগ করে ফুটছে
দেখছি একদিকে বাতাস বইছে ফুলের রেণু নিয়ে
একদিকে শালের অরণ্য। এক দিকে শব্দ। শো শো। কিসের যেন।
সাবলীল বেদনা যখন সৃষ্টিশীল হয়েছিল
নিশ্চয়ই অনেক কিছু মিলে এমন একটা
মহান একাকীতার জন্ম হয়েছিল
বহুদিকে তাকাতে তাকাতে আমি কেবল একের কথাই ভাবলাম।

মনে হয় আমার অনেকগুলি চোখ হলেও একটাই মাত্র চোখ
অনেকগুলি সংবেদন হলেও একটাই মাত্র অনুভব।

দেখি উপরের সাথে নিচের কোন মিল নেই।
কাছের সাথে দূরের কোনো তূলনা হয় না।
দিনের থেকে রাত পুরাটাই আলাদা।
অনেকগুলি চোখ দিয়ে আনারসের মত দেখলে
অনেক রকম ভাবনাকে রূপ নিতে দেখা যায়।
অনেক রকম দেখা যায়। অনেক কিছু দেখা যায়


পশু পালনের দিন


আমারতো ছিলো না পাহাড়ে চড়ার বিদ্যা
তখন আমি নৌকা বাইতে পারতাম
নিজের জন্য একটি খাল খনন করতে করতে
দিন যেতো

আমি বৈঠা তুলে মাঝে মাঝে গান গাইতাম
কয়লা দিয়ে ভুতের ছবি এঁকে বশীকরণ চর্চা করতাম
রাতের বেলা পথে নামতাম পরীর পাখা কুড়াতে।
একদিন আমি উটের পিঠে চড়তে শিখবো বলে ঠিক করি।

উটের জন্য চাই মরুভূমি যেমন গরুর গাড়ির জন্য হারিকেন।
পড়শির বাড়িতে নাই বাবলার গাছ।
হরিণ পালতে দেখি কেওড়া গাছের প্রয়োজন।
কুমিরের জন্য দরকার চোখের পানি।
তিলে ঘুঘুর জন্য এক বিঘা জংগল।
সাপের জন্য তীব্র যৌন ফুল।

ঘুঙুরে রোচেনা মন তবু বুক ভরা ছোট্ট একটা পা খুঁজি
কিছুতেই দেবে না জানি তবু তার আঙ্গুল কখানি খুলে নিতে
রহস্য থেকে নামি, পকেটে রেঞ্চ, হাতে সৌখিন আঙ্গুলদানি।

প্রান্তরের ডাকবাংলায় খুঁজি শিশিরের নিশিথ
হঠাৎ হঠাৎ পাহাড়ি বরফের ডাক, চিলের চিৎকার
কিন্তু কোথায় প্রকৃতির মুখ চেপে ধরার ক্লোরোফর্ম ভেজানো কাপড়
যাতে শে না চেঁচায়?
শক্ত পাকস্থলি কই যাতে পাথরের গিঁট আর ফুলের তীক্ষ্ণ কামড় হজম করতে পারে?

ক্ষুধার চেয়ে গোল, ক্রোধের চেয়েও আন্তরিক
আনন্দের চেয়েও স্বচ্ছ, ভিখারিনির চেয়েও কপালহারা
কি সে কল্পনা ঘোর গাঢ় জ্যামিতি?
জীবনের কালো উচ্চারণ নিহিত কোন প্রতিতূলনায়?

পাহাড় থেকে যা সহজ উঁচু পাহাড় থেকে তা সহজেই দেখা যায়।
আমি আজো পাহাড়ে চড়িনি
নৌকা বেয়ে বেয়ে
চলে যাই – যেখানে নৌকা নাই সেখানে।
যেখানে আমি নাই সেখানে গিয়ে ঘুরে আসি।


হে সর্বশক্তি


আমরা যেন আগামি কাল থেকে পাশবিক গোস্ত খাইতে পারি
কোন রকম জেনেটিক সমস্যা ছাড়া
কয়েকটা দিন ভুরি ভুরি

গপাগপ মাংশের টুকরাগুলি যেন গিলতে পারি
আমাদের সেই দাতহীন মুখ দাও প্রভু

অনেক গোস্ত আমাদের সামনে
আগুনে পুড়েছে
সেই ওল্ড টেষ্টামেন্টের আমল থেকে

সবচেয়ে সুন্দরী বাছুরের রান পুড়ে, হে প্রভু
তোমার সাথে সাথে আমরাও যে খাইতে শিখেছি

আমাদের বাৎসরিক গণমাংশের প্রদর্শনী
সফল হোক

কলিজাকে টুকরা টুকরা করে
রেন্ধে খাই

সবচেয়ে নরোম –
পাছার কাছাকাছি পুট-এর বাবু পেশী
কেন এতো সুস্বাদু?
মাংশের ভাজে ভাজে চর্বির পরত
কেন এত লোল ঝড়ায়?

জীবনের জানিবার শেষ নাহি যেন

যেকোন দামে উন্নত মানের গোস্ত
আমাদের রক্তের চাহিদা
ছুরি কাচি রক্ত
দা কুড়াল লগি বৈঠা
চাপাতি চাপাতি খেলা

এইবার সুলভে পাচ্ছে যারা
তারা যেন
আগামি বছরও এই সুবিধা পায়

আমাদের মাংশ ঠিক রাখো প্রভু
আমাদের রক্ত দেখতে দাও

কলিজা কচকচ করে কাটি
ফুসফুস ফসফস করে ফাটাই
গুর্দা গুরগুর করে চুড়াই

চাপাতি দিয়া হাড্ডিকে হাড্ডা হাড্ডা করি
রান কাটি চপাচপ
পাজর কাটি পাজাপপ
ঘাড় কাটি ঘ্যাচ্চর ঘজং

চামড়া খসাই ভুড়ি ফাসাই
পায়ের ক্ষুর নিয়া পর্যন্ত
রাজনীতি করি

সবশেষে
গরু পুরুষের গর্বের গ্যাজ
ঘ্যাজঘ্যাজ
পেটের ভিতর চালান করে দেই

আমাদের পেটকে সালাম মোবারক!
পেট মোবারক!!
ঈদ মোবারক!!


একপ্রকার কবিতা আবিষ্কার করেছি


একপ্রকার কবিতা আবিষ্কার করেছি
যা দিয়া আমার পার্টিকেল গুলি
আধা তরঙ্গ আধা কণা

আমাদের জগতে নোবেল পুরষ্কার চলে না

যথেষ্ঠ তারাদের দেখি না
আগেকার দিনের
ছোট বড় বিন্দুদের মত

মধুপুরে বাঘের গল্প
জোসনা রাতে
বাঘিনীর সাথে বাঘ
চাষিদের আটকাইয়া পথে
প্রেম করেছিল
৬০ বছর আগে

সে কি চুম্মা সে কি যে গাল কামড়ানো
দুটি চিতার
আমরা লজ্জায় আর ভয়ে
কাঠাল বোঝাই গরুর গাড়িতে বসে
ঠকঠক করে কাপতেছিলাম

হাতিলেট গ্রামে
ছোট ছোট অনেকগুলি মাদ্রাসা দেখি
আনারস ক্ষেতের পাশে

গারো আর মান্দি শিশুরা
গির্জার স্কুলে অংক করছে

বিলে চাটা মাছের জন্য অপেক্ষা করেও
দেখা পেলাম না
ছাত্রলীগের ছেলেটা সঙ্গে থাকতেও
জংগল নাই, তার আগেকার চেহারা নাই


বেশ বেশ আধা চাঁদ


বেশ বেশ আধা চাঁদ চাও তো
আমাকে ছাদে পেয়ে
ভাসাইয়া দেও ঢাকার রাতের কালো আকাশে
আমি মরা শুকনা তেলাপোকা গুড়া গুড়া হয়ে ভেসে যাই

কিচির মিচির করা বাসাবাড়ির জানালা
স্যাক্সফোন বাজাচ্ছে
চড়া আলোক বিচির মাঠে

গল্প করছি কিন্তু কোন
পা ফোলা কমছে না

আমার বৌ হাসনাহেনা তার বোন মাধবীলতা কে সাথে নিয়া
শ্রাবণে বারো তলার ছাদে
রাজনীতির চালে ফেলতে চাচ্ছে আমাকে!

বেলি-চাপা-সন্ধ্যামালতি টগর-গন্ধরাজ-জারুল
আমার ভাইবোন
চাইছে কিভাবে আরো বেশি ঘাস হবে
আমাদের সংসারে

পোকামাকড় কামড়াচ্ছে
আমরা হাসতে চাইছি

রমজানের পর্দা ঘেরা দোকান আছে বলেই
রাস্তায় মৌমাছি কামড়ালে
চুন খুঁজে পাওয়া যায়!

আমাকে ছাদে পেয়ে চুবাইয়া দিলে
তোমাকে কিছু বলব না


রজনী


‘আমরা চিন্তা করি ক্যান?’ পায়জামার রশির গিট্টু লাগাতে লাগাতে রজনীর মনে প্রশ্ন জাগে!
তার দুই ধরণের সালোয়ার আছে।
রশি আর ইলাষ্টিক।
ইলাষ্টিক সালোয়ার সবার জন্য নয়।

রজনী। সেই রকম ভুট্টার খৈ, সারাক্ষণ ফুটতেছে।
কবি কাজী নজরুলের নিজ হাতে বানানো।
ত্যাগিয়া গৃহ কাজ, সুখ সাজ লাগি বনবাস লয়
নব নব ফুল কোলে…আর তার বন্ধুদের
শে খুঁজে নেয় নিজস্ব নিয়মে!

আমি রজনীর প্রেমে পড়েছি।

তার মতো মমি চারপাশে নাই।
তার থাকার কথা চ্যানেল পাড়ায়… বাঙলা নাটকে
শ্যাওড়াপাড়া, কচুক্ষেত, আজমপুর, মিরপুর, কলাবাগানে।
কিন্তু কি করে যে ঢুইক্কা গেল আমার অন্তরে।

চৌখে পড়লো এক চোখ গেল পাখি?
শিয়রে বসে চুপি চুপি চুমিলে আমার লিঙ্গ
তোমার মনে ছিল যত কুৎসিত আবরন
কাতরে কাতরানিতে
সব আমি যে চুষিলাম,

আমার মনের ফোড়া গেলে তার পুজ খাইল
পরিষ্কার করার ছলে
ভাঙা হাড্ডি কামরাইয়া জোড়া লাগাইয়া দিল
কালো রাত্রিগুলি ভরে দিল শাদা বৃষ্টিতে
তারপর তার বুকে শোয়াইয়া
ঘুম পাড়াইল

তারপর বলল:
আমার কাজই হচ্ছে ভালবাসা
চুষে আর চাবাইয়া মজা আর নাই
তাই একেবারে বিচার বিবেচনাহীন
গিল্লা খাই তোমারে… রজনীর লালা দিয়া…

তোমার কাউকে মনে পড়ে না?
সারাদিন শুধু দোকানে দোকানে জামা সেলাই করে বেড়াও!
তোমার সব গপ্প শুনলে আমার কি হবে?
অনেক টাকা থাকলে তোমারে না হয় একজোড়া পাঙ্খা কিন্না দিতাম।

তোমারে আমি চাই মাত্র অল্প… এই ধরো… ২ আনা…
বল কি… আমি তো ভাবতাম, তুমি আমারে মোটেই চাও না…

আসলে ভালবাসার বাটপার
যখন পাবে বলে কান্নাকাটি করতা তখন তুমি দ্বিধায় থরো থরো
আমাদের কি করার ছিলো, বল প্রিয়?
আকাশ গঙ্গায় হস্তিমৈথুন
জ্যোৎস্নায় অবীর্য ছড়ানো?

চাঁদ ই দিতো সঙ্গ, চাঁদ ই ছিলো চোখ গেলে দেবার অস্ত্র
তুই তো ছিলি না, তোর বেণীই আমাকে করেছিল বিবস্ত্র

সালোয়ারের ডুরি বানতে বানতে তুমি কী ভাবছিলা:
চিন্তা কারে কয়?
যে পৃথিবীতে ডুরি খুলেই সব কর্ম সাধন করা যায়
সে সহজ পৃথিবী চলে মধ্যবয়সী প্রেমিকের দ্বারা

তুমি অন্যমনা কারণ তোমার ইলাস্টিকের খোঁজ সবাই পায়না…

তোমার দুধমাখা ত্বকের মধু পান করার জন্য
জন্ম নিতে হয় বারবার বিস্ময়ের ঘরে!

না হয় মন দিতে তুমি পারো নাই
তাই বলে কি নতুন মন তুমি বানায়ে আমাকে দিবা না?


কিভাবে আখ থেকে মদ তৈরি হয়


বিশ বছর পর দেখা হল কিভাবে আখ থেকে মদ তৈরি হয়
জীবননগরের ডালে ডালে গরু দর্শনায়
প্রতিবেশিনী উচ্চকণ্ঠে সামনে এসে দাড়ান
কুড়ি বছর পর

আমাদের ছেলেমেয়েদুটি মথ থেকে প্রজাপতি হয়ে উড়িতেছে
আপনি আখ থেকে ভাল মদ বানাতে পারছেন তো

তাদের যন্ত্রপাতিগুলি পুরাতন
তাদের গাছে ভাল আম হৈবে কিভাবে
তোমরা আম্রপালী লাগাও

হিজিবিজি জীবনে গরুগুলি পুত্রকন্যার চেয়েও আজো দরকারি
সন্ধ্যায় হুড়মুড় খুড়ের ফোসফোসানির
ভিতর থেকে মাথা বের করে
এতটুকু আলস্যের আলো পড়ে চোখে

এতটুকু ছোট ছোট চাকা
ছোটচাকা ছোটছোট কাজ করে
গরুগুলি বর্ডার পারাপার করি
আমাদের ছোটছোট হাতে

আমরা দর্শনায় প্রজাপতি উড়িতে দেখিলাম
বুঝিলাম জীবনের সাধারণ আখ থেকে
উৎকৃষ্ট মদ বানানো কতো দরকার


সারফেস টেনশন


এক টুকরা মাটির চারা
পুকুরের পানির সারফেস টেনশনের উপর দিয়ে
লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে

একবার টেনশন পাকড়াও করছে
একবার সারফেস উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে

একবার শাদা আসছে জীবনে
আরেকবার কালো এসে চুমু খাচ্ছে

একবার চোখের সামনে সেগুনগাছ
আরেকবার পানি ফলের চারা

সন্দেহ এমন একটা পোকা
যে মনের সারফেস টেনশন নষ্ট করে

তোমাকে সে
সারফেস থেকে
ডুবিয়ে দেয়


আমার মা


আমার মা সেই একটা নির্জন রাস্তার ঘ্রাণ
আমাকে হাতে ধরে নিয়ে যাচ্ছে কোথাও
তার শাড়ির পালের বন্দী হাওয়ায়
আমার চোখের তারা অপার হয়ে নাচে

মাটির চুলার পাতিলের নিচের মতো কালো চোখ আমার মার
আমার দিকে সারাক্ষণ তাকিয়ে আছেন
আমি কাঠের লাকড়ি
পুড়ে শেষ হওয়াই আমার পণ
সাত নদী সাতাত্তর ঘাট শেষে
মা আমাকে কি আবার ফিরে পাবেন?

যত সই করেছি চেকবইয়ের পাতায়
ততবার ওনাকে চিঠি লেখি নাই
মা আমাকে ঠিকই চিনে ফেলে
মোবাইলের ডিজিট টিপলেই

মা আমাকে যত জানলো
আয়কর রিটার্ন আমাকে ততো বুঝলো না!


ব্যাঙনি


তুমি সেই প্রাগৈতিহাসিক ব্যাঙনি
যে কিনা বহু ফুট মাটির নিচে সারা বছর বসবাস কর
আর কেবল যৌনমাসে অন্ধকারের উপরে আলোতে উঠে আসো আর
একটা ছোট্ট পুরুষ ব্যাঙকে পিঠে চড়িয়ে
ঘুরতে যাও প্রান্তরের পথে

তুমি দুনিয়া, আমাকে তুমি দারী দেখাতে দেখাতে
হঠাৎই ফেলে দাও বিগব্যাং খাদে
আমিও চমকে উঠি সেই সংবেদে

আমি নরম ব্যাঙ, তুমি শক্ত নারী
একটা বিশেষ কাজের জন্য তুমি আমাকে পিঠে চড়িয়ে
ঘুরে বেড়াচ্ছ
তোমাকে কি ফেরাতে পারি?


বাঁকা চশমা


তোমার সঙ্গ ছাড়া আর কিছুতেই মন টিকে না। কোন প্রিয় খাদ্য নাই, পানিয় নাই।
দোকান নাই, জুতা নাই, জামা নাই, তুমি ছাড়া।

তুমি আবার আসবে, জানি। এসে বলবে অনেক কিছু এনেছি তোমার জন্য।
ব্যাগ ভর্তি নানা রকম উপহার সংগ্রহ করেছো। কিছু আমাকে দিবে।
কিছু জমিয়ে রাখবে। কাল দিব, পরশু দিব বলে। আর এভাবেই একদিন
দেখবো তুমি আরেক হাতের কাছে চলে যাচ্ছ।
আর আমাকে তা দেখতে হচ্ছে একটা বাঁকা চশমা পড়ে।

আবার তোমার সেই রকমসকম। ঘুরে ঘুরে ফতুর হয়ে, আবার আসার পায়তারা।
অনেকগুলি অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করেছো। অনেক ভুল আলিঙ্গন করে এলে।
কিন্তু এবারো কী আমি সেরকম করবো?
তুমি যে ফিরে আসবে, সেই অপেক্ষায় পথে বসে থাকবো?

মন বানাতে আমি এখন পটু হয়ে গেছি।
তুমি চলে গেলে মনটা থাকেনা
ফিরে এলে
পটাপট তৈরি হয় আমার সেই মন

সেই মনটাই আবার কেমন করে ওঠে।


আমি আমার শত্রুর চশমা


আমি আমার শত্রুর চশমা পড়ার পর
এখন বেশ আগের চেয়ে ভাল দেখতে পাচ্ছি

শত্রুর চশমায় একটা আলাদা লেন্স লাগানো থাকে বুঝি
ছয়টা ইন্দ্রিয়ের সতর্কতা সেখানে অনবদ্য
অন্য ভাষায় লেখা সব দর্শন
যা দেখি তার অন্যরকম মানে

তুমি যখন আমার সাথে অনর্গল মিথ্যা বানানো কথা বলতে থাকো
আমি তখন সেই বিশেষ চশমাটা চোখে লাগাই
তখন সব ফকফকা। তোমাকে স্পষ্ট দেখতে পাই

এতো সব করি কেনো?
কারণ তোমাকে আমি ক্ষমা করতে চাই।
বারবার ক্ষমা করতে চাই।
এতে যদি কিছু শাস্তি পাও, সেটা কী কঠিন শাস্তি হবে না?


রোবোকপ


রোবোকপ, অনেক দিন পর
তোমাকে কোলাকুলি করতে দেখলাম
সর্ট কোলাকুলি… একবারই মাত্র, ডানে-ডান বুকে

যদিও তোমার বৌকে দেখলাম না ঈদের মাঠে
মেয়েটাকেও না… মা বা ভাতিজি বা ভাগ্নি কাউকেই তো
নামাজ পড়তে দেখলাম না

দেরিতে ঘরে ফেরার আগে
বন্ধুর সাথে আরও আধা ঘন্টা
হিসাব ছাড়া ছুটি কাটাতে কেমন লাগলো বলতো?

কেমন লাগলো বিকালে নদীর ধারে রংধনু পাশে রেখে
তাজা আকাশের দিকে তাকিয়ে সেলফি তোলা?

স্বজনেরা চলে যাচ্ছে
হে ইফতারের দিন… তোমাদের মতই…

তোমাকে আবার শুন্য করে সন্ধ্যা ফিরে আসবে

তোমার মন খা খা করে উঠছে কি রোবোকপ?
আর কিছুক্ষণ পরেই যে ঈদ শেষ হয়ে যাবে

উৎসব শেষ। চল খোলা বাড়ি রেখে ঢাকা বাড়ি ফিরি।


জ্যোৎস্না রাতের পথে পথে কাটা বিছানো


জ্যোৎস্না রাতের পথে পথে কাটা বিছানো
আমার পথই শুধু এইভাবে
আটকানো!

আর কি যাব না ঐ পথে
যেথা ছায়া এসে শিকারীকে
ঘুষি মারে
ভাঙা চোয়ালের শিহরণে
বনাজি লতা পাতা
শিস দেয়

দূরে গিয়ে
একটা উই পোকার ঢিবি
খুঁজে, তার উপর উঠে
শিয়ালের গলায়
গান গাই
মিশ্র ছন্দে
মনের আনন্দে

প্রতি ১০ বছরে
কমপক্ষে ১২০ টা চাদ
আমি উপেক্ষা করেছি

এখন আমি বলতে চাই
কবিতা লিখতে গেলে
চাদ দেখতে হয় না
চাদ যেতেও হয় না
এমন কি
চাদের পূরানো বানানেও আর
যাবার দরকার নাই


গোফ আছে তাই গোফ রেখেছি


গোফ আছে তাই গোফ রেখেছি
ওটার দিকে এমন কাতুর কুতুর তাকাচ্ছো কেন?
বৃষ্টি আসলে আমি ঠিকই ছাতি খুলতে পারি।

তবে আষাঢ় মাসে কেন মেঘ হলেও বৃষ্টি নামে না
সেকথার উত্তর দিতে পারবো না
হয়ত এতে কারো চক্রান্ত আছে, ষড়যন্ত্র্র ছাড়া চলে না যে
সোভিয়েত ভেঙেছে তাতে কি, কত মানুষের মন যে ভেঙ্গেছে!

এটা আকাশের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়
আকাশটাকে দখলে নিতে হবে
এটা পানির কারসাজি
পানিটাকেও আমার শাসনে চাই
আমার গোফ আছে তাই গোফ রেখেছি
দরকার হলে দেখিয়ে দেবো ভ্রূপাকানো ড্রাকুলা চেহারা

তোমার অস্ত্র্র আছে, তাই তোমাকে বন্ধু ভাবিনা
একদিন তো ওটা আমারই বুকে ধরবে!

তুমি চুপ করে বসো, শোনো, উপদেশ দিও না
তোমাদের কান শুধু কেনাকাটার কথা শোনে
চোখ দেখে সমস্ত কিছুতে মাংসের নাচ
জিহবা শুধু ইট চাটে
তোমাদের কথা আমি শুনবো না
আমার ছবিটা উল্টা করে টাঙাও


আমাকে আবার লাইনে দাঁড় করালে


আবার আমাকে হাজির করেছো তোমার সামনে
এক লাইনে দাঁড় করালাম অনেকগুলি আমাকে
অনেক দূর চলে গেছে সেই লম্বা লাইন

তাকিয়ে দেখি কারো বয়স বারো, হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুলপ্যান্ট পরেছে
কেউবা আঠারো, ভিড় করে আছে তার মুখে একা থাকার চরম নির্যাতন
কারো বা ছাব্বিশ – অস্থিরতা, যন্ত্রণার মুখোশ পরা
কেউ তিরিশ – ক্লান্ত, পথহারা, সোনালি মাথায় কালো চুল

তুমি কি ন্যায্যমূল্য? তুমি কি বিকল্প বাজার?
আমার সাধ্যের জোর যখন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে
তুমি এলে ত্রাতা হয়ে?

আমাকে আবার লাইনে দাঁড় করালে
আমাকে আবার টেনে নিলে তোমার সাশ্রয়ী দোকানে!


ধারানি শোধানি


কেন তুমি আজ এতো বেশি চুপচাপ
বোরখায় ঢেকে রেখেছো মুখখানি
পাড়ার সবাই দিয়েছে কি অভিশাপ
হাতে কি হারাম হালালের তালিকাটা।

টাওয়ারে টাওয়ারে রচিছে ভবিষ্যৎ?
তোমার কোনো ধারানি শোধানি নাই।

তুমি এক নাও, আমারও ছোট্ট তরী
এই কাল বৈশাখে পাল তুলে দেবে নাকি
দুই পাল আর দুই হাল ধরে চলো
একই নদীতে বহু দূরে চলে যাই।

তোমার কাছে কি এ সবই কুল্লু হারাম
গণতন্ত্রেই শুধু ভোট দিয়ে যাবে?
মাঝিমাল্লারা যদি হয় বেশি লোভী
খেয়ে ফেলে যদি নদীটাই তীরসহ?


প্রথম আলিঙ্গন


রাত এলে ভাবি কখন হবে দিন
তোমার সাথে দেখা হলেও তো হতে পারে
যেখানে জীবন ছোট করেছে লোডশেডিং
তোমার ডাকেই সে শুধু প্রাণ পাবে

পনেরই মে, আজ আমার চুমু দিবস
তোমার না আজ প্রথম আসার কথা!
মনে হয় যেন অনেক জন্ম পর
আবার বসেছি আজকের হাহাকারে
বহু জীবনে যে সাধ মিটে নাই
বারবার চাই তোমাকে যে বাস্তবে।

তুমি কি রওনা হলে?
কখন পৌঁছাবে লালমাটিয়ায়
যখন সমস্ত শহর নিজেদের প্রয়োজনে
জট পাকিয়ে রাস্তায় গোঙায়?

তুমি কি আসছো বেলা এগারোটার আগে
আমার নিজেকে মেয়ে মেয়ে যেন লাগে

নাকি বিকালে? দ্বিধায় দুলছি এখন
প্রতীক্ষা কেমন আড়ষ্ট করেছে, কাজে নেই মন!
যখনই আসো, বীরপুরুষের মতো
আমাকে দিও প্রথম আলিঙ্গন!

১৫/৫/০৮


শাদাকালো


তুমি তো নিশ্চয়ই আজ কালো শাড়ি পরে ছিলে
আনন্দকে কখনো কখনো কালো রঙ দিয়ে ঢেকে ফেলতে হয়।
এখন আমাকে বলো তোমার কালো রঙের রহস্য!

তুমি বলেছিলে তোমাকে ঘিরে আছে তিনটা ঘোড়া
একটার নাম অভিমান
অন্যটার নাম রাগ
আর শেষটার নাম দিয়েছো যন্ত্রণা।

নিশ্চয়ই আজ কালো শাড়ির সাথে ছিল শাদার মিশেল
তোমার কালোর কাছে শাদা হতে পারতাম আমি
শাদা হতে পারতো রৌদ্র

আমাদের সব অভিমান বুজে যেতো
আমাদের সব রাগ বরফ যুগের আইসক্রীম হতো
আমাদের যন্ত্রণার ঘোড়া পিছু নিতো না আর।

সে যাক, যা হবার তা হয়েছে
শাদা আর কালো দিঘিতে তোমার নাভীপদ্মের সৌরভ
আজ সমস্ত শহর ছড়িয়ে পড়েছে
আমি ঘরে বসেই তার আকুল সুঘ্রাণ পাচ্ছি

ছোট্ট সোনা ব্যাঙ, তোমার কি বর্ষাকাল আসবে না?


কাজল শাহনেওয়াজ

কবি ও কথাশিল্পী।

জন্ম বিক্রমপুরের লৌহজং থানার দিঘলি গ্রামে (এখন পদ্মাগর্ভে বিলীন), ১৯৬১ সালের পয়লা জুন। পিতা আবু বকর সিদ্দিক পেশায় ভেটেরেনারী ডাক্তার ছিলেন। মায়ের নাম সুরাইয়া। শৈশব কাটে ফরিদপুরে। তারপর কৈশোর কিশোরগন্জে ও যৌবন ময়মনসিংহে। বর্তমানে ঢাকার ধানমণ্ডিতে একটা এপার্টমেন্টে স্থায়ী বসত।

ময়মনসিংহস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি প্রকৌশলে গ্রাজুয়েশন।

পেশা শুরু করেন সেচ প্রকৌশলী হিসাবে, দুই বছর পরে তথ্য প্রযুক্তিতে। পেশাগত দক্ষতা অর্জন করেন জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সিস্টেম বিষয়ে। বারো বছর একটা কন্সাল্টিং ফার্মে চাকুরি করার পর আরও বারো বছর কাজ করেছেন সাইবার শক্তি নামে নিজের সফটঅয়্যার প্রতিষ্ঠানে। এক সময় পছন্দ ছিল নতুন নতুন প্রোগ্রামিং ভাষা শেখা ও কোডিং করাতে।

জীবনের উচ্চ ও নীচ, সফল ও অসফল, সামান্য ও অসামান্য – সব কিছুতেই অপরিসীম আকর্ষণ নিয়ে বসবাস করেন। কবিতায় কল্পনা ও গদ্যে বাস্তবতা দিয়ে শুরু করেছিলেন লেখালেখি। বর্তমানে বাংলার ভূমি-ইতিহাস-রাজনীতি প্রধান আগ্রহ।

কাজ করেছেন গ্রাম ও নগর দুই ধরণের জগতেই।

প্রকাশিত বই:

কবিতা

ছাঁট কাগজের মলাট (১৯৮৪), জলমগ্ন পাঠশালা (১৯৮৯), রহস্য খোলার রেঞ্চ (১৯৯২), আমার শ্বাসমূল (২০০৭), কাঠকয়লায় আঁকা তোমাকে আমার (২০০৯), তালগাছ হাতির বাচ্চা (২০১১), একটা পুরুষ পেপে গাছের প্রস্তাব (২০১৫), একটা ব্যাঙনি আমাকে পিঠে চড়িয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে (২০১৯),কবিতাসমগ্র (২০১৮), জলমগ্ন পাঠশালা (২য় সংস্করণ ২০২৩)।

ছোটগল্প

কাছিমগালা (১৯৯৩), গতকাল লাল (২০০৭), কাছিমগালা ও গতকাল লাল (২০১১),

গল্পসমগ্র (২০১৮), কাছিমগালা (২য় সংস্করণ ২০২৩)

সাক্ষাৎকার

ঘোড়ার প্রেমপত্র (২০২০)

উপন্যাস

শে (২০২১)

সম্পাদনা

বিকল্প কবিতা, যৌথ সম্পাদনা, ১৯৮৯

ফৃ, লিটল ম্যাগাজিন, ১৯৯৫-৯৮

ফৃ গ্রন্থিকা সিরিজ (পাতলা মলাটের এক ফর্মার বই), ১৯৯৮-৯৯, ২০০৭, ২০১১, ২০১৫

সম্ভাব্য বই

দিঘলী (গদ্য বায়োগ্রাফি), ২০২৪

শেয়ার