নব্বই দশকের কবিতা এবং সেই সময় | মাদল হাসান

নব্বই দশকের কবিতা নিয়ে লিখতে ব’সে হুমায়ুন আজাদের একটি বইয়ের নাম মনে পড়ছে। সেটা কি কোনো বই? নাকি, কবিতার নাম, তা নিশ্চিত নই। কথাটি হলো, ‘আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে’। নব্বই দশকের কবিরা বেঁচেছিলেন আমার সময়ে। আজ এতদিন পরে ডিফাইন করতে হচ্ছে! তাঁরা বয়সে আমার অগ্রজ কিন্তু যা হয় না নয়ে, তা হয় না নব্বইয়ে! মানুষের অভিজ্ঞতা সবসময় বয়সসাপেক্ষ নয়! পয়ত্রিশ-চল্লিশ বছরের ম্যাজিস্ট্রেট সত্তর বছরের রিক্সাঅলাকে মানবে না! মানুষের অভিজ্ঞতা থেকেই অনুভূতির ফারাক হয়। যে ব্যক্তি যে-অভিজ্ঞতা লাভ করে না তাঁর সে-অনুভূতিও থাকে না! কবিতা পরমব্রহ্মেরই মতো। আর পরমব্রহ্ম অনুভূতি সাপেক্ষ!

নব্বই দশকের কবিকুল যখন কবিতা লিখতে শুরু করেছেন, অন্তত সচেতনভাবে, তখন সারা পৃথিবীতে কবিতার আনাজ-পাতি-মাল-মশলা আগে থেকেই তৈরি হয়ে আছে! কুটাবাছাও শেষ! মাখানোও শেষ! এ যেন এক পশলা মশলা-নুনের ছিটা মেরে রান্নার দাবির মিঠা বুলির মতো! এক ধরনের পুনরুৎপাদনের পথ পরিক্রমা যেন!

নব্বই দশক মানেই উৎপাদন-পুনরুৎপাদন! সনেট লেখা শুরু হলো তো সনেট চলতে থাকলো! অনুসনেট শুরু হলো তো অনুসনেট চলতে থাকলো! প্রতিকবিতা বা না-কবিতা শুরু হলো তো গুষ্টি ধ’রে হামলে পড়লো!

পোস্টমডার্নিজমের সাজ-সাজ রব উঠলো তো রক্ষা নাই, শুরু হয়ে গেল পোস্টমডার্ন হবার হ্যাংলামি! নব্বই দশকের উত্থানের শুরুর দিকে কোনো কোনো কবির একটা-দুটো বই কিনেছিলাম! সেটা সৌজন্যবশত! তারপর তাঁরা যে যা বই উপহার দিয়েছেন, তার বাইরে পড়া হয়নি! নতুন ক’রে তাদের সম্পর্কে আর আগ্রহ জাগেনি! এর একটি প্রধান কারণ, ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে জামালপুরের সরিষাবাড়িতে নিজ বাড়িতে প্রত্যাবর্তন; সেটা প্রত্যাবর্তনের লজ্জা না গৌরব, তা অন্যত্র বলা যাবে! কিন্তু কেন একজন সংসার খরচের টাকায় বই কিনবে? যখন ১০ বছর শিক্ষকতা করেও এম.পি.ও ভুক্তির সম্ভাবনা থাকে না! তখন নব্বই দশকের কবিতাকে শুধু সলভেন্সির বাইপ্রোডাক্ট মনে হওয়াই যৌক্তিক ও স্বাভাবিক! অন্যদিকে, নব্বই দশকের কবিতার সারপ্লাস ভ্যালু আমার তথাকথিত সমালোচনার গ্যাস!

নব্বই দশককে আমি কীভাবে চিনলাম? সে সম্পর্কে না বললে বাংলাদেশের সাহিত্যচর্চার ইতিহাস অপূর্ণ থেকে যায়! কারণ, এটা জীবনে জীবনযোগের ব্যাপার। শুরুর দিকে শাহবাগে এক ফর্মার ‘জীবনানন্দ’ এবং ‘উটপাখি’ লিটলম্যাগের সঙ্গে পরিচিত হই! মূল্য ছিল দশ টাকা! তারপর ডিমাই সাইজের এক ফর্মার ‘মঙ্গলসন্ধ্যা’ নাজিব তারিকের প্রচ্ছদে! চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত হ’তো ‘লিরিক’! নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ থেকে ‘হাওড়’, ‘অক্ষর’ ও ‘ময়মনসিংহ জং’! কিছুটা কট্টরধারার মধ্যে ‘দ্রষ্টব্য’ ও ‘শিরদাঁড়া’। তারপর শূন্যদশকে এসে শত শত লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হতে থাকলো! সেখানে, নব্বই দশক এবং শূন্যদশক জোড়াবলদের মতো সাহিত্যের জমিজমা কর্ষণ করেছে! অগ্রজের প্রভাব অনুজের লেখায় পড়েছে এবং অনুজের প্রভাবও পড়েছে অগ্রজের লেখায়! এ-যেন দুই দশকের রাম-লক্ষণ, কৃষ্ণার্জুন, গিলগামেশ-এনকুডু-র যুগলাবতার এবং যৌথলীলা! কখনো কখনো হরিহর আত্মা যেন!

বাংলাসাহিত্যে নব্বই দশকের কবিতা একধরনের পরিমাণকে নির্দেশ করে! গুণকে অতটা নয়! যেখানে কিছুটা গুণ রয়েছে, সেটাও পূর্ববর্তী কবির স্বল্পচর্চার পুনরুৎপাদন! নব্বই দশকের কবিকুল সারা পৃথিবীতে যা যা দেখেছে, সঙ্গে সঙ্গে তা-ই হতে চেয়েছে! আলাদাভাবে পথ নির্মাণ সেটি নয়! বরং লক্ষ্যহীন পথের পল্লবায়ন! ব্যক্তিগত জীবনে বস্তুগত লাভালাভের দিকে ধাবিত হবার প্রবণতার কারণে এমনটা হয়েছে! অনেকটা অর্থনৈতিক সচ্ছলতা হ’লে, বাকিটা কিনে নেওয়া যাবে, ধরনের বাস্তববুদ্ধি! যে-কারণে, নব্বই দশকে প্রোপাগান্ডা বেশি, আয়োজন বেশি! প্রতিষ্ঠা বেশি! তবে, এতে জনমনে একটি চমৎকার পরিবর্তন এসেছে! সেটি হ’লো, এ-যুগে কবি আর কোনো ব্যর্থজন নন! এ-যুগের কবি সফল! ঈর্ষার পাত্র! লেখায় না-হোক, দৈনন্দিন দেখায়! আর এদেশে লেখার মূল্যই বা কয়জন বোঝে? ফলে, নব্বই দশকের কবিদের কারণে, লেখকবৃত্তির মানসম্মান তৈরি হয়েছে! নব্বই দশকের কোনো কোনো কবি কারখানা মতো অর্ডারমাফিক কবিতা উৎপাদন-পুনরুৎপাদন করতে পারেন! আর সে কবিতার মান মিডিওকারের কাছাকাছি! ফলত, বিদ্দৎসমাজে এক ধরনের খাবি-খাওয়া দাবির দৌরাত্ম্য বলবৎ থাকে! এক ধরনের মননশীলতার মায়াবি মাকড়শৈলী জারি রাখেন তাঁরা! যা একটি স্বাধীন দেশকে নেতৃত্বের রূপাচ্ছন্নতায় মোহমুদগর ক’রে রাখে!

নব্বই দশকের কবিকৃতির মাধ্যমে আরেকটি অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, যেটাকে আমরা বলতে পারি, ব্যক্তি-পরিচয়ের বাতাবরণ।

অর্থ্যাৎ লেখার মান নয়, বরং ব্যক্তিজীবনে বস্তুগতভাবে সফল একজন মানুষ যা লিখেছেন, তাতেই মহত্ব আরোপের ট্রাডিশন! এতে চাপিয়ে দেওয়া চিন্তাপদ্ধতিটি হলো, যদি মানুষটি সফল থাকে, তবে তিনি ক্ষমতাবান এবং একজন ক্ষমতাবান সফল মানুষের কথাই মূল্যবান হবে! মূল্যহীন হবে বস্তুগতভাবে ব্যর্থ মানুষের লেখা! তাহলে, লেখার শিল্পমূল্যের কী হবে? নব্বই দশক সেই শিল্পমূল্য অর্জন করে আহরণবাদিতায়! এ যেন অন্যের লেখাকেই নিজের লেখা ব’লে দাবি করা! অনেকটা অনুবাদের অনুবাদ! ভালো-ভালো কথা, যা অন্যের, তা নিজের চিন্তাকারে চালিয়ে দেওয়া! আর কবিত্ব, উপমা, রূপক, চিত্রকল্প তো তৈরিই আছে! তাহলে, নতুন লেখার কী হবে? আদৌ কি তাঁরা নতুন কিছু লিখতে চেয়েছেন, কিংবা নতুন কিছু করতে চেয়েছেন? না, তা নয়! কারণ, তাঁরা নিজেরাই ক্ষমতায়! তাঁরা পরিবর্তন চাইবেন কেন? তাঁরা চান স্থিতাবস্থা! কিংবা বড়জোর তাদেরই আরোতর উত্তরণ-ঊর্দ্ধতন, বিশেষত ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির ক্ষেত্রে!

যে-কারণে, নব্বই দশকের কবিতায় শিল্পের স্থিতিজড়তামূলক শিল্পসুষমা থাকলেও তা প্রগতিশীল টেক্সট হয়ে ওঠেনি। একটি টেক্সট আঙ্গিক দাবি করে। নতুন নতুন আঙ্গিক। নিত্য-নতুন আঙ্গিক। সেই আঙ্গিককে কবিতাই হতে হবে, এমন তো কথা নেই! ফলে, বাংলাসাহিত্যে, বাংলাদেশের সাহিত্যে নব্বই দশক জবরদখলের নকল নন্দনবিশ্ব হয়ে থাকলো! আর এতদিন পরে নিজের নন্দনবিশ্ব নিয়ে নিভৃতি যাপনকালে, দুর্বহ সংসারযাপনে, পুনরুৎপাদিত পণ্য কেন গিলবো? এ তো অনুরোধে ঢেঁকি গেলা! মাগনা পেলেই বা আলকাতরা কেন খাবে একজন? তাহলে, নব্বই দশকের কবিকৃতির প্রধান অর্জন কী? এক কথায়, সেটি একটি জাতির মননশীলতায়; ‘দূরকে করিলে নিকট বন্ধু, পরকে করিলে ভাই অর্থে’। সে ভাই বৈমাত্রেয় হলেও হ’তে পারে! এটি ‘দেবো আর নেব, মিলিবো মেলাবো’ ধরনের। কিন্তু মিলতে গেলে, মিশতে গেলে, রামপ্রসাদেরও তীর্থে যাবার সম্বল থাকা লাগে। ঘরে অতিথি এলে, মুখ লুকানো থেকে বাঁচার বিত্ত-বৈভব লাগে। নইলে ঘৃণাতিথ্য হয়! নব্বই দশক এমন একটি শ্রেণী-আবহের সূচনাবিন্দু, যেখানে বই কেনা, নৌবিহার-প্রমোদভ্রমণে কবিতাপাঠ, নব নব বুকশপ কেন্দ্রিক তীর্থস্থান গড়ে তোলা, বিপুল আয়োজনের আনন্দযজ্ঞ, নির্ভয়ে অচেনাকে চিনে নেবার নাবিকী! এই দশক কবিতার বহু বর্ণিল শপিংমল যেন! অনেকটা আগের যুগের সম্ভাব্য সবরকম কবিত্বের পসরা সাজানো বিপণী-বিতান! এতে নতুন যুক্ত হয়েছে শুধু বাস্তব বিষয়বুদ্ধি ও বস্তুজ্ঞান! যা একটি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে শিল্পচর্চায়। নব্বই দশক যুগের সঞ্চিত পণ্যে লীন! অদ্ভুত আকাশলীনা!

দশক বিভাজনের ব্যাপারে কিছু বলা দরকার। যেমন, নব্বই সাল থেকে দুই হাজার সাল পর্যন্ত নব্বই দশক। কিন্তু এই সময়কালে তাদের কাব্যগ্রন্থ দুয়েকটির বেশি নয়। অথচ দুই হাজার সালের পরে, বিশেষত শূন্যদশক জুড়ে তাদের গ্রন্থবৃদ্ধি! একথা আগেই বলেছি যে, অগ্রজ-অনুজের পারস্পরিক প্রভাব এতটাই ওভারল্যাপিং যে, ব্যাপারটার শুদ্ধরূপ নির্ণয় করাই কঠিন! এক্ষেত্রে, দুই হাজার ছয় (২০০৬) সালটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ! এই বছর আশি-নব্বই-শূন্যের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলি প্রকাশিত হয়েছে!

ফলে, আমরা বিগত বিশ বছরকে (২০০০-২০২০) বাংলা সাহিত্যের রেঁনেসাকাল বলতে পারি!

এই সময়ে নব্বই দশকের ভূমিকা কখনো সংগঠকের, কখনো রচয়িতার, কখনো উভয়ই। নব্বই দশকের বিকাশে প্রধান ভূমিকা রেখেছিল দু’টি বিষয়। এক. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-আন্দোলন। দুই. শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটকেন্দ্রিক লেখক সংগঠন (‘ সমুত্থান’ ও ‘প্রতিরোধ পর্ব ) এবং পাঠচক্র। অন্যদিকে, লিটল ম্যাগাজিনের সংখ্যাধিক্য এবং লিবারেল হয়ে ওঠা। দৈনিক পত্রিকাগুলিও বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষত, স্টার ইমেজ তৈরির পেছনে তাদের অবদান অনস্বীকার্য!

আজ যখন দ্বিতীয় দশকও সমাপ্ত হয়ে গেল, তখনও নব্বই দশক অতিপ্রজতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমি আগেই স্বীকার করেছি যে, নব্বই দশকের অধিকাংশ কবিতাই আমার অপঠিত। তবে, দ্বিতীয় দশক ফেসবুকের রমরমা সময়ে শুরু হওয়ায়, নব্বই দশকের অনেকের কবিতাই পুনর্পঠিত হয়েছে, নতুন লেখাও পড়া হয়েছে! সবার সব লেখা তো পড়া সম্ভব হবে না! কিন্তু এটাও তো সত্য, আমি শুধু পাঠক নই, লেখকও বটে! তাই, সারা পৃথিবীর স্বাদ আমিও নিতে চাই। এ-প্রসঙ্গে জানাতে চাই, আমি কিঞ্চিৎ ক্লাসিকপ্রেমী। অবশ্যই অনুবাদে! নিজেকে ভ্যানগার্ড মনে করি! তাই অন্যের লেখা পড়ার অতটা সময় আমার নেই! কেউ অবশ্যই প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে আপনার লেখা পড়বে কে? সেটা ইবসেনের মিরাকল! যদি কারো কাছে আমার লেখা পৌঁছে, তবে তিনি পড়লেও পড়তে পারেন! নব্বই দশকের কবিতা সম্পর্কে আরো কিছু কথা ব’লে এই লেখা শেষ করতে চাই।

নব্বই দশকের কবিদের কবিতা-ভাবনাকে তাদের কবিতার সমান্তরালই মনে করি। তাদের কিছু কবিতা-ভাবনা এমনতর প্রশ্নের জন্ম দেয় এবং সেই প্রশ্নও উত্তরান্বেষী।
এক. কোনো মতাদর্শে-মতবাদে আবদ্ধ হ’তে না-চাওয়া। আপনি কি মতাদর্শ-মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার মতো পরিপক্বতায় বা যোগ্যতায় পৌঁছেছেন? মানে, পৌঁছেন নি, তাই এমনটা বলেন।

দুই. ছন্দ ও অলঙ্কারকে প্রয়োজনীয় কিছু মনে না করা। আপনি ছন্দালঙ্কার জানেন না কিংবা জানলেও সুন্দরভাবে প্রয়োগ করতে পারেন না। কিংবা নতুন ছন্দালঙ্কার আপনি প্রতিষ্ঠা করতেও পারেন নি।

তিন. আপনি সুন্দর মনের মানুষ হ’তে বলেন! কিন্তু আপনি কি সত্যবাদী? আপনি কী বৈধ উপায়ে আপনার পেশাটি পেয়েছেন? আপনার অন্নদাতা কে? অন্যদিকে, সম্মানজনক জীবিকা যদি যোগ্যতাসহ কোনো কবি-সাহিত্যিক পেয়ে থাকেন, তাহলে অযোগ্য লোকের পাওয়ার চেয়ে তা অবশ্যই ভালো! এটি বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব!

চার. আপনি আপনার পঠন-পাঠন-মননশীলতার জন্য যা লিখবেন, তাকেই ভালো বলতে বলেন, কিন্তু যে কিছুই লেখে নি, সে-ও তো সরাসরিই মানতে বলে! তাহলে লেখালেখির প্রয়োজনীয়তা কী?

পাঁচ. একজন মানুষ জন্মাবে, বেড়ে উঠবে এবং তারপর কর্ম শেষে মরে যাবে। এই পথপরিক্রমায়, ভালো-মন্দের ফারাক ছাড়া কীভাবে লিগাসি জারি থাকতে পারে?

ছয়. লেখালেখির লিগাসি বহন করবে তাঁরা, যাঁরা স্ট্রাগল করছে, সাধনা করছে, কিন্তু লেখকের টাকা-পয়সার উত্তরাধিকার বহন ক’রে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়াবে লেখকের রক্তের সম্পর্কের ওয়ারিশ! সেটাই বা কেমন?

সাত. এখন পৃথিবীতে কেউ বলে, কেউ শোনে। কোনো একটি স্থান কিংবা স্পেস। যে যেখানে থাকে, সেখানেই সে রচিত হয়। কোনো ভেন্যু, যৌনতা, কিছু পানাহার। এমন একটি স্থানিকতায় সম্পদের হাতবদল। পুঁজির স্থানান্তর। বস্তুবদল। কাজেই, আপনি যাঁর সঙ্গে চললেন সেই সেরা এবং অন্যে যাঁর সঙ্গে চললো সেই ভেড়া! ব্যাপারটা তা নয়!

নব্বই দশকের কবিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই কথাগুলি না ব’লে পারলাম না। কারণ, কোনো জীবসত্তাই শিল্পভোজী নয়!
কথা শেষ করার আগে বলতে চাই, একটা সময়ে আমরা জন্মেছিলাম, বেড়ে উঠেছিলাম। সুধাবিষেমিশে দ্বন্দ্বমধুর সম্পর্ক ছিল আমাদের। যতটা লিখতে শিখেছি, তা আগের ধারাবাহিকতারই ফল এবং শ্রম। জ্ঞাতে কিংবা অজ্ঞাতে। কবিতা অনেকরকম এবং অন্তহীন।
নমো! নমো! নমো! নব্বই দশক নমো!
চির মনোরম! চির মধুর!

‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’


মাদল হাসান

কবি

শেয়ার