নতুন কবিতার সন্ধানে | রেদওয়ান আহমদ

আমাকে জাগাবে নীলকন্ঠী পাখির গান

লুপ্তপ্রায় এক বনের কোণে আড়ত পেতে বসে আছি, আমাকে জাগাবে নীলকন্ঠী পাখির গানগত চল্লিশ বছর আমি তার অপেক্ষায় ইজারায় বসে আছি, ইজারা সে-তো এক বাহানা। ফাটা জমিনে পা ঢুকে আটকে থাকারে ইজারা ভাবতে হয়। মুরিদ বলি না খাজার তবু লোকে কতরকম গল্পে বাঁশ কাটে, টুকরি বানায়, স্বপ্নেও দেখে আমি আর খাজা বসে বসে তাসবিহ মারি। আমি যে স্থানে বসা তা নাকি খাজারও উপর, আহা! আদতে আউলিয়া নই

এক ভিন্ন দরবেশ যার ফুঁ লেগে বন মরে যাচ্ছে ধীরে।

 

মিশকাম্বরের ঘ্রাণ নিয়ে যত ফুল পাতা ফোটে

পাখিদের জিকিরে ঘুম ভাঙে, বসে বসে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলাম যেন লোকে ভাবে মশগুল। মিশকাম্বরের ঘ্রাণ নিয়ে যত ফুল, পাতা ফোটে এই বনে লোকে ভাবে কেরামতি অনন্য কুদরত

লোকে ভাবে

রাই-রাই করে বনের পাশ দিয়ে যে নদী ছোটে ফোরাত তা নাকি আমাকে গজল শোনায় এই হেতু বাতাস আসে বৃষ্টিও জমজম হয়ে ঝরে, প্রায়ই আমার সাথে এসে দেখা করে যান মহাত্মা খিজির।

আহা!

তাশাহুদ বলতে না পারা আমায় লোকে ভাবে আব্দুল কাদির।

 

বসে বসে ধানক্ষেতের লগে জিকির মারে সবাই

বসে বসে ধানক্ষেতের লগে জিকির মারে সবাই, জিকিরে ইল্লাল্লাহ। হাওয়াও তাল দেয়, গাছ দোলায়। ব্যাঙগুলাও খোদারে ডাকে, হাঁসের পকপক গাউসে পাক, ঘাসগুলা মোজাদ্দেদিয়া তরিকার পীর, বাহাউদ্দীন বাতাসের লগে দোলা পানি, মঈনুদ্দিন ফড়িং, শাহজালাল রইদ, লগে আমি ঘাসের গোছায়

পড়ে থাকা জোঁক, চীনা জোঁক জিকির মারি ইল্লাল্লাহ।

 

ফুল আর অস্ত্রের ট্রিগার চাপলে মানুষ মরে

প্রকৃত রাত কেটে গেলে দেখা যাবে বাবা জালাল এসে বসে আছেন আমার ঘরে, হাঁড়ের যে বাগান সাজিয়েছি তাবিজ আর খুন দিয়ে তা দেখে ফুলের গুরুত্ব নিয়ে বয়ান দেবেন তাফসিরে ফুল, ফুল আর অস্ত্রের ট্রিগার চাপলে মানুষ মরে প্রেমে ও অপ্রেমে তা বোঝাবেন, লণ্ঠন হাতে দাঁড়িয়ে থেকে আমি বাতাস করবোবুঝবো, শুনবো

সূর্যোদয়ের আগে

তারপর ঝাঁপ দিয়ে পুকুরে, ভেসে উঠবো মদিনায়।

 

বাঘের মুখে বসে কবিতা লেখা কবির

ভিমরুলের কামড় খেতে খেতে ফিরে আসেন আত্তার, সাধনা ছিলো এমন ভিমরুলের কামড় খেতে খেতে কবিতা লিখবেন , ফার্সি কবিতাউপরন্তু পলায়নপর হয়ে আত্তার ভাগছিলেন রাত্রির ফাঁক দিয়ে যেনবা কেউ দেখে ফেলে এই কাপুরোষিত কদম, ভয়ে কাঁপছিলো তাঁর নয়ন, আমরুল- আতা। ফেরেশতা যখন দিতেছিলেন এই খবর আমি হাসতেছিলাম

কেননা বাঘের মুখে বসে কবিতা লেখা কবির এ হাসার ই কথা।

শেয়ার