বনের ক্যাসিনো
ওঠ অবগুণ্ঠন
দেখ আয়নার ভিতর ঝাঁকে ঝাঁকে
পাখি উড়ার শব্দ—
যেন নীল হরিণীর দল;
দরজায় কলিংবেল বাজাচ্ছে।
আমাদের উত্থান হবে বনের দিকে।
শিকারে যাব—
খুব সাবধান—
শুনেছি—মানুষ ও প্রেতের
জুতা বদল হয়ে গেছে আজ দুপুরে।
পিতা
শামুকের শব্দে নিড়িয়ে আছে
গ্রামের ধুলো—
বিরান মাঠ—
জলশূন্য পুকুর—
দূরে—কাঁচা ধোঁয়ায় উড়ছে মানুষের ঘ্রাণ;
শশ্মানের এই মৃদু-মন্দ বাতাসে।
এই যে আপনি সময়ের ট্রেনে বসে
পালটে নিচ্ছেন ইশটিশন;
আর লিখছেন সন্তানের আগত ভবিষ্যত—
আমিও হাঁটছি সেই গোপন পরিখায়
এবং আপনার মতো এঁকে ফেলছি গোরস্তানের নক্সা।
মাদুলি
তুমিও পাথুরে হৃদয়—সাদা সব মেঘের মতো ভাস;
ঘাষের শরীর নিয়ে সেখানে মরছি কেবল
হে সূর্য!
হে আমার আত্মভোগ!
আমার ছায়া নিয়ে কতদূর যাবে তুমি?
মাথার উপর টহল দিচ্ছে বক
আমি কী এখন খাদ্য হবো তাদের?
পাখি গুলো মায়ের আদর পেয়ে—
সুপারিদানার মতো তারা একটু একটু বাড়ছে।
আমারই পায়ের কাছে তার গোপন পরিখা যত
প্রসারিত করছে শরীর—
বাতাসে গলা বাড়িয়ে হাসছে;
নথের বিভায় তার সে ঘ্রাণ
কথার মাদুলি পেয়ে যাচ্ছে কোথাও।
নরকভেজা ফুল
তুমি কোথায় চলে গিয়েছ
এখন পাতালের দিকে নিঃস্ব হাহাকার।
ছোট ছোট ভাষা
মিলিয়ে যাচ্ছে নুড়ি পাথর মাঠে।
তুমি কোথায় চলে যাও?
মরুভুক সকালের প্রস্থানে কোন সে ফুলে
লুকিয়েছ আবির।
খুব ভীষণ অন্ধ হয়ে যাই!
খুব ভীষণ একা হয়ে আছি!
তোমার মুখের লাবণ্য
কার থেকে পেলে?
আমি ঝরে যাচ্ছি
আমি মরে যাচ্ছি ঘোরগ্রস্ত প্রেমে।
প্রাচীন বাতাসের মতো
যেখানেই রেখেছ হাত
সন্ধ্যা নেমে আসে
কাজলের গাঢ়তা মেপে বিষণ্ণ হই।
প্রকাশ্য হও
আজ বিরহের পাপে পবিত্র করেছি হৃদয়।
উপক্রমণিকা অথবা প্রতিবিম্ব
আমি কবি নই। কবি হতে পারবো না বলে কোনদিন কবিতা লিখিনি। আমি কেবল আড়াল হতে শিখেছি; কিছুটা প্রেমিক। শব্দের বুননে যা কিছু পাওয়া যায় ও আমার মরদেহ। আমি চিরকাল একা হতে চেয়েছি, কিছুটা ভিলেন। আমাকে অন্ধকার ভেবো আমি আড়াল হয়ে যাচ্ছি সমস্ত বিমূর্ত ভাষার ভিতর। ভাব এটি আমার বিজ্ঞাপন যদিও সুন্দরী কোন তরুণীর মতো লাস্যময়ী নয় আমার কথা। কিন্তু আমার এই দুর্ভিক্ষভাষা ফিরিয়ে দিতে জানে প্রতিঘাত। আমি কেবল রক্তক্ষরণের মতোই ঝরে যাচ্ছে। আমি বেদনার মতো ফিরাতে পারছি না প্রেমকে।