ছুরি রহস্যের আদি-অন্ত | জাকারিয়া প্রীণন

মন ও মননের সাথে যৌগিকতা তৈরি করে, জীবনকে বোঝার বা দেখবার যে কয়টা যোগাযোগ মানুৃষ নিজের ভেতর গড়ে তোলে, সেই জীবনবোধের একটি মাধ্যম হলো কবিতা। বাস্তবতার নানা অনুষঙ্গ যেখানে বোধকে সামগ্রিকভাবে চাওয়া-পাওয়ার সমন্বয় বিন্দু থেকে রচনা করে তাই মূূলত জীবন। আর এই জীবনের কিছু তিক্ত অথবা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা থেকে কিছু মৃদু-মন্দ অভিজ্ঞতা কবিকে তাড়িত করে। তখন কবি তার ভাবজগতের অনুুগামী হন। এবং এমন সব অনুুষঙ্গের সহযোগে আবেগের বসতি হয়ে কবিতা রচনা করে থাকেন। কখনও এই কবিতা হয়ে উঠে রোমান্টিক, কখনও বা ন্যারেটিভ। তাই নানান নৈরাশ্য প্রবলভাবে কবিকে হিপ্রোটাইস করে থাকে। প্রকৃতির এমন সমৃদ্ধ শক্তি সৃষ্টিকে অতিক্রম করতে যেয়ে, চিন্তার গহীনে সাজিয়ে নেয় কর্ষিত জমি। কবি তখন ডুবুরি; অনেকটা বালিহাঁসের পারসনিফিকেশন বলা চলে। সেখানে অব্যাহত পরিশ্রম করে, কবি যখন স্নান সেরে বেলাভূমিতে দাঁড়ান, তখন তার চুল থেকে টুপটুপ ঝড়ে পড়া জলকণা উত্থিত শব্দের কলধ্বনি বা কবিতা। শরীরে শিশিরবিন্দুর মতো লেগে থাকা জলকণা তখন উত্থিত শব্দের কলধ্বনি বা কবিতা। যেহেতু কবি প্রকৃতির সামগ্রিকতাকে ছুঁয়ে দেখতে চান। যে-জন্যে জীবনের পাশাপাশি মৃত্যুর ভেতর কবিকে নিমগ্ন হতে হয়। তাই কবি থাকে আত্মার নিগূঢ়ে বাস্তব ও অতিবাস্তবের বসতি হয়ে। তখন কবিতা হয় কিছুটা মূূর্ত কিছুটা বিমূূুুুর্ত। কবি তখন না চান নিজেকে প্রকাশ করতে, না চান লুকিয়ে রাখতে। ফলে কবিকে কিছু আইকন ব্যবহার করতে হয়, যা তার সৃৃষ্টিকে সর্বজনীন করে তোলে।

আমি সেই ছুরি, যার দিকে তাকিয়ে ভাবছো
সবচেয়ে ধারালো—এই আমি;
ঘাড় থেকে তোমার কেটে নেব মাথা,
দ্বিখণ্ডিত করে দেব দেহ, দেব মুক্তি।

বন্ধু, তবে শোনো
প্রায় অন্ধকার একটা কামারশালায় আমার জন্ম।
আমি জানি, হাফরের বাতাস কী করে ছড়ায় দাবানল!
আমি বুঝি, কাকে বলে দহন!

বন্ধু, এই আমিই সেই ছুরি, সবচেয়ে ধারালো
কামারশালায় সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছি।

(একটি আশাবাদের কবিতা—জহির রিপন)

কামারশালায় হাফরের বাতাসে নিভে গিয়ে জ্বলে উঠছে কয়লার টুকরো। তখন যেন সম্মিলিত কয়লা হয়ে যাচ্ছে দাবানল। যেন পৃৃথিবী পুড়াতে পারে এমন এক আগুনপাখি। পরক্ষণে যুুদ্ধক্লান্ত অশ্বারোহীর মতো নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে ক্রমে। কিন্তু তার নিচে পেতে রাখা শান্ত-শীতল লোহা অগ্নিস্নানে লাল হয়ে যায়। যেন রক্তমাখা পারদের টুকরো বা অস্তমিত র্সূযের আলো লেগেছে লোহার শরীরে। গেরুয়া সন্ন্যাসির মতো গম্ভীর রূপ তার, অথচ ঝলসে দিতে পারে এমন শক্তি তার গমগমে উত্তাপ ছড়ানো। অতঃপর হাতুড়ি পিটিয়ে শান্ত সে লোহাকে বানানো হয় ছুরি। সেই ছুরি একজন ডাক্তারের কাছে প্রাণরক্ষার তাবিজ। সেই ছুরি একজন কসাইয়ের কাছে অন্নদেবতা। এভাবে পেশাভিন্ন মানুষের কাছে তার ভিন্ন পরিচয় মিলে। কিন্তু একজন কবির কাছে এই ছুরির ভূমিকা কী? কবিতা যেহেতু প্রথমত শিল্প, অতঃপর সামাজিক সংবেদ্য ও আস্বাদ্য— তাই কবিতাকে নির্ভেজাল ও সূক্ষ্ম অনুুভূতির প্রকাশক্ষম হতে হয়। Poetic Diction বলে একটি প্রচলিত কথা আছে কবিতা বিশ্লেষক মহলে। এই মর্মে প্রশ্ন আসে এই কবিতা Thought and content না কি Languages and words? মিনিং-এর দিক থেকে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। মূূূলত ভাব ও ভাষা একে অপরের পরিপূূরক। কেননা ভাব ছাড়া যেমন ভাষার জন্ম হয় না, তেমনি ভাষা ছাড়া ভাবের প্রকাশ ঘটে না। কবিতার ক্ষেত্রে তাদের আবার বিস্তর ফারাগ- Thought and content এর সাথে Text এর সম্পর্ক এবং Languages and words এর সাথে Syntax এর সম্পর্ক। কবিতায় যখন Thought and content এর প্রকাশ ঘটে তখন কবিতায় অর্থব্যঞ্জনা আসে, আবার অনেক সময় একটা ভাবার্থ ধরে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। এইসব কবিতা বাহ্যত সরল হয়, কিন্তু তার ভেতর লুকিয়ে থাকে রহস্য নদী। সে নদী প্লাবিত হয় বোধে; আর জোৎস্নার মতো কোমল তিরতিরে তার ঢেউ হয়ে উঠে দৃৃষ্টি নন্দন। পাঠককে রত্ম-সন্ধানীর মতো তলিয়ে যেতে হয় সে রহস্যনদীর আরো গভীর রহস্যে।

‘শুধু বিঘে-দুই ছিল মোর ভূঁই, আর সবই গেছে ঋণে।/ বাবু বলিলেন বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘে জমি কবিতাটি পড়তে গেলে অর্থ-অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন পড়ছে না। খুব সহজেই আমরা অর্থাতিরিক্ত অর্থ ছাড়াই এই কবিতার ঘটনাপ্রবাহ বুঝতে পারি। কিন্তু আমরা যখন পড়ছি,

জানি—তবু জানি
নারীর হৃদয়—প্রেম—শিশু—গৃহ-নয় সবখানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয়—
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তরগত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;

জীবনানন্দ দাশের এই কবিতাংশে প্রতিটি শব্দ নিতান্তই সাদামাটা কিন্তু আমরা যখন ‘বিপন্ন বিস্ময়’ এর কাছে পৌঁছি ব্যাপারটি কোনোভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় না। বরং তা বহু অর্থবোধক ও ভাবার্থক। এখন ফিরে আসি আলোচিত কবিতার ‘ছুরি’র রহস্যে। এখানে পুরো কবিতা জুড়ে ছুরি একটি রহস্য। যার কূল না করতে পারলে এটি কেবল রহস্য নয় বরং মিনিংলেস কবিতা বা দুর্বোধ্যতার অভিযোগ ওঠে। অবশ্য কিছু কবিতা অর্থহীনভাবেই পড়তে ভালো লাগে। কিন্তু সেই অর্থহীনতার একটা অর্থ থাকে কবিতায়। আপাত চোখে এই কবিতা ডিসফাংশনাল ইউনিভার্স মনে হতে পারে। কিন্তু Thought and content ধরে যখন এই কবিতাটি পড়া হয় তখন অর্থারিক্ত অর্থের প্রয়োজন পড়ে বা তখন একটি ভাবার্থ নিয়ে প্রবেশ করতে হয় কবিতার জগতে। কবিতা তখন অনেকটা কল্পনাশ্রিত বিমূর্ত ভাব। সেই বিমূর্ততাকে মূর্ত করতে কবিকে অনেক কিছুর আশ্রয় নিতে হয়। অনেক সময় তা আসে Symbol হয়ে অথবা ম্যাটাফোর বা অন্য কোনো অলংকারের মাধ্যমে। কিন্তু ছুরি এখানে ম্যাটাবোল এবং এই ম্যাটাবোল কবিতাটিকে বাঙালির ইতিহাসে প্রবেশ করিয়ে ফেলে। এখন কবিকে ‘বস্তুবাদী কবি’ বলে একটা তকমা হয়তো লাগানো যায়। তবে Conventional poems বাদ দিয়ে কবিকে যেহেতু Individuality of a poet হিসেবে পাওয়া যায় তাই একটু ভিন্নভাবে ভাবার দরকার আছে বলে মনে করি। যেহেতু প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত করাবার ঝোঁক কবিতায় পাওয়া যায়নি বরং কবিতাটি Vague Generalities এবং শরীরগতভাবে Blurred or Indefinite তন্ময়তা।

প্রকাশক: চন্দ্রবিন্দু

এখানে ধারালো পর্যন্ত (আমি সেই ছুরি, যার দিকে তাকিয়ে ভাবছো সবচেয়ে ধারালো) লাইনটি কবিতার মূল (point)। তারপর লক্ষ্য করার বিষয় হলো অসমাপ্তিসূচক ড্যাশচিহ্নে। এই ড্যাশচিহ্নটি পাঠককে বিহ্বল করে দেয়, যেন খানিক দাঁড়িয়ে কোনো এক সম্ভাবনার ইশারা খুঁজে নেয়। না, কবিতা এখানে কোনো কনসেপ্ট তৈরি করছে না বরং Counterpoint হয়ে ছুরির ডেফিনিশন করছে। Thought বা ভাব ও কল্পনানুভূতিকে ভাষাশিল্পে মূর্তিদান করার জন্যেই প্রয়োজন পড়ে শব্দের। এই মূর্তিত অবয়বে বিরূপের সন্ধান করে কবিতা। এখানে আমি শব্দটি সর্বজনীন। ‘ছুরি’ শব্দটি স্বাধীনতার ভাবার্থ যে এখন তার তীক্ষ্ণতার কথা বলছে। অর্থাৎ এটি এখন কবিতার মূল (point) যাকে ঘিরে আছে বহুবিধ শাখা-প্রশাখা। ‘ধারালো’ শব্দটি শক্তি, চেতনা ও চৈতন্যের পারসনিফিকেশন। (‘এই আমি; ঘাড় থেকে তোমার কেটে নেব মাথা, দ্বিখণ্ডিত করে দেব দেহ, দেব মুক্তি।’) এই লাইনটি অনেকটা ডিসফাংশনাল ডেফিনিশন কিন্তু সে Counterpoint হিসেবে (‘দ্বিখণ্ডিত করে দেব দেহ’) এখানে দেহ দ্বিখণ্ডিত হবার ব্যাপারটি দেশভাগের পারসনিফিকেশন যা আমাদের অতীত। “এই আমি; ঘাড় থেকে তোমার কেটে নেব মাথা” কবিতা এখানে বর্তমান কিন্তু বলতে চাওয়া কথাটি অস্পষ্ট থেকে যায় বারবার। তার এই নীরবতা কোনো এক অপার সম্ভাবনার ইশারা— যা খুঁজে নিতে হবে স্বয়ং পাঠককে। এই যে কবিতাকে শূন্যে ছেড়ে দিলো, এই শূন্য পাঠককে বিশাল এক জগতের পথে চলতে ইশারা করে। এটা একটা স্পেস; অপার সম্ভাবনাময় অর্থের ইশারা। এই যে বর্তমানের সাথে অতীত গেঁথে নিয়ে মুক্তির ইশারা দিচ্ছেন, এটাই এখানে কবির প্রথম মুনশিয়ানা। “বন্ধু, তবে শোনো প্রায় অন্ধকার একটা কামারশালায় আমার জন্ম।’ কবি এখানে ৭১-এর যুদ্ধলিপ্ত সময়ের কথা বলছেন। প্রায় অন্ধকার একটা কামারশালা মানে ৭১-এর বাংলাদেশ, যেখানে জন্ম হয় স্বাধীন একটি বাংলার। কবি এবার ইশারা দিচ্ছেন ‘ছুরি’ শব্দের দিকে। কামারশালায় ছুরি তৈরি হওয়া মানে বাজারজাত পণ্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখা যায় স্বাধীনতা একটি রাজনৈতিক পণ্য। না, এখানে কোনো নাইটমেয়ার কাজ করছে না এবং তার কোনো শঙ্কা নেই এখানে। কিন্তু ইঙ্গিতে কোনো এক বিপ্লবের আহ্বান কবি করছেন। সেই বিপ্লব বোধকে জাগানোর, সেই বিপ্লব ইতিহাস সচেতনতার বিপ্লব। কবি আমাদের ভাবাতে চাইছেন। নানারকম ইশারা দিয়ে যাচ্ছেন। যুক্তির নিরিখে কোনো সিদ্ধান্ত চাপাতে চাচ্ছেন না পাঠকের উপর। স্বাধীনতা দিচ্ছেন, কারণ যুক্তি তো দাসত্ব আর কবিতার কাজ হলো দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়া।

আধুনার সাথে চৈতন্যের এই যে জাগরণ তার অভ্যুদয় হতে পারে বিবিধ। যে কারণে কবিতা এতো বৈচিত্র। এবং এই বৈচিত্র আরো নান্দনিক হয়ে ওঠে কবির অভিজ্ঞতার বুননে। তখন কবিতা বলার ধরন কবিতাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে অন্যের থেকে আলাদা করতে সক্ষম হয়। এই যে উচ্চারণ তা কখনো হয় জাগতিক কখনো বা মহাজাগতিক। মহাজাগতিক মানে কবিতা ঈশ্বর-প্রলুব্ধ, এমন নয়। তাহলে কবিতা কোথায় থাকে এই জগত বৈচিত্র্যের ভিতর? না অন্য কোনো আধারে লুকিয়ে নিয়েছে তার পরশ? বহির জগতের অনুরণনে মানুষের ভিতর জগত চিরকাল প্রভাবিত হয়ে আসছে। তাই কবিতাকে বস্তুজগতের অনুলিপি বলা যায়। কিন্তু এই বস্তুজগতের বাহিরে জীব ও মহাজগৎ বা মানবজগৎ তাড়িত হয়ে জহির রিপনের কবিতাগুলোর আবির্ভাব।

তোমাদের উৎসব থেকে দূরে
আমি সেই শামুক,
নির্জন এক দ্বীপের মালিক।
সৈকতে পড়ে থাকি

রাত আর দিন, চুপচাপ
গিলে ফেলি সমুদ্রের চিৎকার।

আমাকে বাজাতেই পারো শঙ্খ ভেবে
যদি সইতে পারো সমুদ্রের হাহাকার।

(শঙ্খ — জহির রিপন)

কবি এখানে ইউনি কিন্তু তার চৈতন্য চিরকাল ইউনিভারসাল। যে বারবার ঘুরে ঘুরে জগতকে প্রশ্ন করে নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে চায় তার ভিতর। এই যে প্রকৃতির ভিতর লুকিয়ে ফেলা তার যেই অর্থ আমরা পাই, তাই মূলত জহির রিপনের কবিতা। কথার নান্দনিকতার চেয়েও তার কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় Emotion। বাংলা কবিতায় আবেগকে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় ও উল্লেখ করে তুলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবি ঠাকুর মূলত বাস্তবতাকে Emotion-এ রূপ দিয়েছেন; আর সেই Emotion আসে বহুবিধ কল্পনায়। কিন্তু জহির রিপন ইমোশনকে এমন করে ব্যবহার করেন যা সমস্ত জগতকে একই আধারে বর্ণনা করে। কারণ জহির রিপন যখন বলে “পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বাড়িটি ময়মনসিংহে কেননা সেখানে আমার মা থাকেন” তখন ময়মনসিংহ সিম্বল হিসেবে পুরো পৃথিবীকে ধারণ করতে সক্ষম হয়। ময়মনসিংহ তখন ইউনিভারসাল সিম্বল যেখানে প্রত্যেকে নিজেকে চিন্তা করে নিতে পারে, অথচ কবি এখানে ইউনি। এই যে নিজেকে সর্বপ্রাণে ছড়িয়ে দেয়া- এটাই হচ্ছে কবিতা। এটাই আমার দেখা জহির রিপন। হ্যাঁ, তার কিছু দুর্বল কবিতা ঈশ্বরগঞ্জে আছে; কিন্তু আমার কাছে আজ যা দুর্বল অন্য কারো কাছে তা সবলতার মুগ্ধতা নিয়ে আসবে। যে কবিতা দুর্বল তা মৃত নয় বরং সময় ও পরিবেশে সে-ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তার জন্যে শুধু একটু অপেক্ষা প্রয়োজন। অবশ্য কবিতা কোনো প্রত্যাশার বস্তু নয়। তবু একটু একটু আশা কবিতায় জমতে থাকে।


ঈশ্বরগঞ্জ

প্রচ্ছদশিল্পী: আল নোমান
প্রকাশকাল: ২০২২
প্রকাশক: চন্দ্রবিন্দু

মূল্য: ২০০ টাকা

শেয়ার