।।১।।
কোনা শেহেরের কবি মুহেমেত আব্দুশুকুর। ২০০৪ সাল থেকে সুইডেনে বসবাসকারী একজন উইঘুর। তার ছোট ভাইসহ নিকটজনদের অনেকেই শিনজিয়াং রিএডুকেশন ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে বন্দী আছেন। আর দশজন নির্বাসিত উইঘুর, কাযাখ কিংবা নর্থওয়েস্ট চায়নার কবিদের মতন মুহেমেতও কবিতা লিখে দুঃখ ভোলার অবিরাম চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
মুহেমেত আব্দুশুকুরের ক্লান্ত অপেক্ষা একটি চমৎকার ভোরের জন্য। ঝাঁকড়া চুলের তারুণ্যে যে অদেখা ভোরের জন্য তৃষ্ণা জমেছিল বুকের ভেতর, এই পড়ন্ত বেলাতে পৌঁছে দেখেন রাতের অন্ধকার এতটুকুও ম্লান হলো না।
রাত
চেয়েছিলাম সেই রাতটা আমার চুলের মত স্বল্পদীর্ঘ হোক,
আর আমার হৃদয়ের মতই দীপ্তি ছড়াক খুব চেয়েছিলাম,
আরও চেয়েছিলাম এই জীবনের সঙ্গে তোমার আমার দূরত্বকে একদম বেঁধে ফেলতে।
সমস্ত অশ্রুজল নিছক আমার চোখের জল হয়েই থাকুক চেয়েছিলাম,
অথচ সে জলে ক্রমাগত বাড়ে মরিচার ক্ষয়, জং ধরে ত্বকে।
এখনো সে রাত আমার অন্তহীন ভাবনাগুলোর মত দীর্ঘ থেকে যায়,
আর চমকে ওঠা অগণন স্বপ্নের মত আতঙ্কে ডোবায়,
দূরত্বও এখন আমার আকাঙ্ক্ষার মতন সীমাহীন।
সূর্যটা কেমন মোদো মাতাল,
লম্বা গিরিপথটার যে প্রান্ত থেকে আমি এসেছিলাম একদিন,
সেখানেও অনর্গল রাত্রির আলিঙ্গন।
আমার চুলগুলো একে একে ধূসর হয়ে পড়ে,
অথচ সে রাত অন্ধকারেই ঢেকে থাকে,
মাথা ভরা চুলের অর্ধেকটা ঝরে পড়ে আমার,
অথচ সে রাত আগের মতই ঘন থেকে যায়।
(ইংরেজী অনুবাদ: সুবহী)
Night
I wish, the night was short, like my hair,
And that it was bright, like my heart,
And that I could tie the distance between us with my life.
These tears are nothing but drops of my eyes,
And now I´m being rusted by them.
Yet the night is long, like my thoughts,
And horrifying, like my dreams,
And the distance as endless as my longing.
The sun is drunk, on the other side of the long pass where I come from,
Embraced by the night.
My hair has grayed,
But the night has remained dark.
Half of my hair is gone
But the night is as thick as before.
।।২।।
আব্দুলএহেদের ছদ্মনাম হেনদান। বর্তমানে তুরস্কে বসবাস করছেন, নির্বাসনে। ২০১৭ সালের পর থেকে আব্দুলএহেদের সাথে তার অধিকাংশ স্বজনের কোন যোগাযোগ নেই। তিনি জানেন না কিভাবে- কেমন আছেন তারা। প্রায়ই ফিরে যেতে চান সেই দুর্দশাক্লিষ্ট ভূমিতে। মাতৃভূমির বিপদাপন্ন স্বজাতির জন্য কিছু করতে না পারার আক্ষেপ তাকে তীব্র হতাশায় ফেলে দেয়। যন্ত্রণা উপশমের জন্য তার এমন কবিতার আশ্রয় নেয়া।
আগুনের কাছে প্রত্যাবর্তন
ফিরে যাব তার কাছে আমি
তাদের কাছেই ফিরবো,
চোখেরা আমার কোন কিছুতেই নিদ্রায় ডোবে না আর,
আমি শুধু একটি রাতকে দেখি আমার সারাটা দিন জুড়ে…
দেখি আঙুল বেয়ে তারারা যাচ্ছে দূরে সরে সরে।
তার পাশে বসব আমি একদিন
তারপর ঠিকঠিক চোখ দুটো বুজে ফেলবো,
নিঃসীম অন্ধকূপগুলোকে তাদের দুঃস্বপ্নে আকণ্ঠ ডুবতে দাও!
আমার যত অলীক কল্পনারা আছে সবাইকে অট্টহাসিতে ফেটে পড়তে দাও
তাদের পাশে……
কিছু মনে কোরো না, আমার হাত দুটোকে বেঁধে ফেলো,
আবারো এ হৃদয় জ্বলে না ওঠা পর্যন্ত।
সশব্দ চাবুকে ক্লান্ত করো আমার মুখ,
দমবন্ধ অন্তরাত্মা আর একটুও নিতে পারছে না
প্রকাণ্ড ফাঁসটাও এই ছিঁড়ে পড়লো বলে!
যদি আমার “চলে যাবার” খবর কানে আসে কোনদিন, কাঁদবে না!
বরং বলবে শীত, ক্ষুধা, তৃষ্ণা
এবং অস্তিত্বের প্রবল সঙ্কট
আমাকে মুক্তি দিয়েছে অবশেষে।
তোমার হৃদয় থেকে সে পাথর ছুঁড়ে ফেলে দাও
আমায় অন্য কোন ভাবনায় ফেলে দিও না।
টিকেট কিনে ফেলবে যে গোঙ্গানি, তাতে আমার অকুণ্ঠ ঘৃণা,
লটবহর টেনে চলবে যে অবিরাম অশ্রু বিসর্জন, তাতেও আমার অকুণ্ঠ ঘৃণা,
গোটা হৃদয়ের দখল নিয়ে নেবে সে শোক,
শিরা-উপশিরাদের দেবে অব্যাহতি, আর শিথিল করে দেবে সমূহ ভয়
আর আমার মাথার ওপর যখন ব্লক ব্যাগটা কেমন চিৎকার করে উঠবে “উড়ুমচি” বলে!
এটা তো কেবল মায়ের কবরের কাছে ধেয়ে যাওয়া আমার কাফনটাই
এর চেয়ে প্রশান্তিময় প্রত্যাবর্তন আর কোথায় থাকে!
আমার সকল ইচ্ছের নির্মম অনুমোদন হয়ে যাবে
চূড়ান্ত মৃত্যুর আগে।
“সে মরে গেছে”- এরকম কোন আচানক খবর শুনতে পেলে
বলে দিও “সে মৃত নয়।”
কেমন করে একজন মানুষ তার মাতৃভূমির মাটিতে এভাবে মরে যেতে পারে?
সে তো শুধু এখন মিটিমিটি হেসে যাবে
উজ্জ্বল সাদা এই পৃথিবীটাকে আঁকড়ে ধরে
যেটি তার জীবন এবং
জন্ম জন্মান্তরের ঘরবাড়ি।
***শিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানীর নাম উড়ুমচি।
(ইংরেজী অনুবাদ: কবি নিজে)
Returning to the fire
I will return to him
Return to them!
My eyes can’t sleep anyway,
I see a night through all my days…
Down my fingers my stars are seeping away.
I will sit beside him and close my eyes,
Let the dark dungeons have their nightmares!
Let my dreams laugh by their side….
Never mind, let my hands be tied,
As long as it is not my heart being burned again.
Whipes, please slash my face,
My strangled soul cannot take anymore,
The noose is about to break!
Don’t cry if you hear the news of my „passing”!
Say the cold, the hunger, the thirst,
And the crisis of identity,
Set me free.
Cast the stone from your heart,
Don’t give me another thought.
It is my hatred for sobbing that will buy the ticket,
It is my hatred for weeping that will pull my luggage,
It is the mourning which will seize my heart,
That will release my veins and relax my fears.
When the block bag over my head shouts, “urumchi”
It is just my burial shroud running for my mum’s tomb…
What ease to go back like this!
With cruelty to grant my wishes,
Before the final death.
When you hear the strange news “he died,”
Say “he is not dead,”
How can one die in the soil of one`s homeland?
His only duty now is to smile,
Clinging to the bright white earth that has been his home all the while.
।।৩।।
কবি এবং কবিতার ভেতর বেড়ে ওঠা আব্দুওয়ালী আয়ুপের কাছে কবিতা এখন বেঁচে থাকার অবলম্বন। স্বদেশ ছেড়ে আসতে হয়েছে তুরস্কে- প্রাণ বাঁচাতে। দুর্ভোগে- দুর্যোগে এতটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, তবু শান্তি মেলে না। নৈরাশ্যে ঝাপসা হয়ে আসা বাকি অনেকটা পথ হেঁটে যেতে তাই হয়ত তিনি কবিতায় আশ্রয় খোঁজেন, কবিতাতে কিছুটা কষ্ট জুড়াতে চান।
এ হৃদয় পূর্ণ এখন প্রতিশোধের বিলাসবহুল কাঁটায়
দর্প, তুমি তো তা নও যার থেকে আমি মুহুর্মুহু পালিয়ে বেড়াই,
খুব কাছেই আমার বসবাস তবু তোমায় আলিঙ্গনে দু হাত বাড়িয়ে দিতে পারি না।
আনন্দ, আমি যা খুঁজেছি এবং পেয়েছি তুমিও তা নও,
তোমার বাহুবন্ধনে আমি মাত্র একটি মিনিটও ঘুমাতে পারিনি।
দুর্ভোগ, আমার পাঁজরে সমাহিত করেছিলাম যাকে সে তুমি নও
এ হৃদয় পূর্ণ এখন প্রতিশোধের বিলাসবহুল কাঁটায়।
কোন সদুত্তর এখনো পর্যন্ত আবির্ভূত হলো না,
যদি আমি এর জন্য মরেও যাই, তবুও- না।
শোষণের তামাম রক্ত কেউ কোনদিন ধুয়ে নিতে পারেনি
রক্তে।
(ইংরেজী অনুবাদ: সুবহী)
My heart is filled with the luxuriant thorn of revenge
Pride, it is not you that I run away from,
I could not open my arms for you though I live next to you
Enjoyment, it is not you that I searched and found,
I did not sleep in your arms even for a mere minute.
Suffering, it is not you that I buried in my chest,
My heart is filled with the luxuriant thorn of revenge.
No answer has appeared, even though I die for it,
One cannot wash away the blood of humiliation with blood
।।৪।।
পেরহাত তুরসুন উইঘুর সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কবি হিসেবে খ্যাতি পাবার পর গদ্য সাহিত্যেও তুমুল জনপ্রিয় সেই সঙ্গে তিনি বিতর্কিত চরিত্রও বটে। স্বতন্ত্র এবং অকপট লেখনশৈলী ছাড়াও ডার্ক সারকাজমে বিশেষ সিদ্ধহস্ত। শিনজিয়াং-এর আতুশের মাটিতে জন্ম তার। পেরহাত তুরসুনের পাঠকপ্রিয় কিংবা বিতর্কের জন্ম দেয়া সাহিত্যকর্মের মধ্যে One Hundred Love Lyrics, Messiah Desert, The Art of Suicide এর নাম এসে যায় তালিকার প্রথম দিকে। উইঘুর এই সাহিত্যব্যক্তিত্বটি
২০১৭ সালের শিনজিয়াং-এর বর্বরোচিত বিচারবহির্ভূত গণগ্রেফতারের শিকার হন। শিনজিয়াং ছেড়ে চলে যেতে পারা কেউ কেউ পেরহাত তুরসুনকে ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে নিয়ে যেতে দেখেছেন। বর্তমানে তিনি কি অবস্থায় আছেন জানা যায়নি।
সকালের অনুভূতি
প্রতিদিন সকালবেলায়,
সংগ্রাহকের মোটা এবং কুৎসিত হাঁকডাক
দরজার ফাটলের মারফতে-
জানালার ফাটলের মারফতে-
তার মহাপ্রতাপী নিষ্পেষণের সবটুকু সাথে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে হুড়মুড়িয়ে।
তাই হয়ত কণ্ঠে কোন দরদ ফোটে না।
অথচ সে কণ্ঠের স্থূল কিংবা কদর্য
আওয়াজটাকে দয়াদ্র শোনায় বাস্তবে।
আমি পেছনে ফিরে দেখি,
ঠিক কতগুলো জায়গায় আমার ঠিকানা আর ফোন নম্বর ফেলে রেখে এসেছিলাম;
মনে করতে করতে বুঝতে পারি হঠাৎ,
আমি আসলে অনেক কিছুই হারিয়েছি- অনেক কিছু;
এমনকি টের পাই আমি আমাকেই হারিয়ে ফেলেছি,
আমার সবচাইতে গুরুতর নিগূঢ় গোপন
উন্মুক্ত পড়ে আছে পথের ওপর।
টের পাই আগাগোড়া নিরাবরণ আমি।
যেন কেউ আর এখন সাক্ষাতে আসে না,
কেউ আর জরুরী তলবে ডাকে না দূরালাপনে,
হতে পারে তারা আমাকে দেখতে পায় অলক্ষ্যে- সঙ্গোপনে।
লজ্জাহীনের মত আমার ফোন নম্বর আর ঠিকানার দিকে তাকিয়ে থাকে অপলক।
যেন আমার সমস্ত লুকানো রহস্যগুলোয় ইতর নজর বুলিয়ে যাচ্ছে কেউ।
বাইরে বেরোবার সাহস হয় না আমার।
এখানে বসেই শাপ-শাপান্ত করি তাদের,
টোকানেওয়ালার কুৎসিত- কর্কশ হাঁক,
দালানের ওপর সূর্যালোকের লাবণ্য,
কম্বল থেকে পাঁকিয়ে ওঠা বিছানার কড়া গন্ধ,
একজন মানুষকে ঘাড় ধরে কবুল করতে বাধ্য করে, আহা
নিশ্চয়ই সূর্য উঠেছে- সূর্য উঠেছে এখানে!
(ইংরেজী অনুবাদ: জশুয়া এল ফ্রিম্যান)
Morning Feeling
Every morning
The collector`s coarse and ugly voice
Through the cracks of the doors
Through the cracks in the window
With all its might squeezes into the house
Perhaps there`s nothing pitiful in the voice
Yet its coarseness and ugliness
Make it sound pitiful indeed
I recall
How many places
My address and phone number have been left
And with that I feel that I´ve lost many things
I even sense I´ve lost
My most vital inner secrets
On board streets
I feel myself stark naked
For no one comes to visit
And no one calls
Perhaps somewhere they watch me furtively
Shamelessly gawking at my phone number and address
As if gawking sordidly at my secrets
Not daring to go outside
I curse them all sitting here
The junk collector`s ugly and hoarse voice
The beauty of the sunlight on the buildings
The bed smell rising from the blanket
Force one to acknowledge
That the sun has come up
।। ৫।।
তারিমের কবিতারা
উইঘুর কবি ডঃ আবলেত আব্দুররিশিত বেরক্বি চায়নিজ ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পগুলোতে লক্ষ লক্ষ সাধারণ এথনিক সংখ্যালঘুদের সাথে বন্দী থাকা চিহ্নিত ৩৩৮ জন বুদ্ধিজীবীদের একজন। তার চায়নিজ ছদ্মনাম ‘তারিম’। ২০১৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব হাইফা, ইজরায়েল থেকে বিংশ শতকের উইঘুর সাহিত্যে পোস্ট ডক্টরেট শেষ করে শিনজিয়াং-এ ফিরে আসেন তিনি। ফেরার পর সে বছরই তাকে আটক করা হয়।
ডঃ বেরক্বির তিনটি কাব্যাংশের ইংরেজী অনুবাদ করেছেন চায়না ডিজিটাল টাইমস-এর কার্যনির্বাহী সম্পাদক আনে হনকভিকয।
পরমাশ্রয়
আমার কোন ছাড়পত্র নেই।
আমি এ দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে পারবো না।
আমার একমাত্র উপায় এখন নিজেকে পাচার করে দেয়া।
কিন্তু পেটাতে পেটাতে মেরে ফেলা হবে আমাকে, তাই ভেবে ভয় হয়;
আর কারবারীদের হাতে তুলে দেবার মত তেমন কোন অর্থও নেই আমার কাছে ।
আমি একজন ভালবাসার চোরাচালানকারী।
যদিও ভালবাসার কোন দেশ থাকে না।
কবিতা আমার পরমাশ্রয়;
কবিতায় আমি সবচাইতে বেশী স্বাধীন।
Refuge
I don’t have a passport
I can’t leave the country
My only choice is to smuggle myself
But I’m afraid I’ll be beaten to death at the border
And I don’t have money for the trafficker
I’m a smuggler of love
Though love has no country
Poetry is my refuge
Where I am most free
আমি বিশ্বাস করি
আমি বিশ্বাস করি,
তারা বলে, দুই “অপারগ অবিচ্ছেদ্য”র অস্তিত্ব অবশ্যই আছে।
হানেরা সংখ্যালঘুদের ছেড়ে যেতে পারে না,
সংখ্যালঘুরাও ছেড়ে যাবে না হানদের,
কী নধর শ্লোগান!
কী মধুর কাব্য!
বিশ্বাস করি,
পান্থশালাটি যখন আমাকে ফিরিয়ে দেয়,
আর আমি ফেব্রুয়ারি সেভেন স্কয়ারে ঘুমাতে যাই
দেখি, এই পৃথিবী এই আকাশ সব এক- সব এক।
তারাদের দল সেই জাতপাতহীন প্রসূনের মত
অমন জাঁকালোই রয়ে গেছে।
বিশ্বাস করি,
আমি ভাল চায়নিজ বলতে জানি।
চায়নিজে আমি পুলিশের কাছে পরিষ্কার ব্যাখ্যা বিবৃতি দিতে জানি
যে আমি একজন চায়নিজ।
আমি এটাও বিশ্বাস করি, যে পান্থশালাটি উইঘুরদের প্রত্যাখ্যান করেছে-
আমি চায়নিজে অনর্গল বলে গেলেও সেটার তেমন কিছুই করার থাকে না।
বিশ্বাস করি,
আমি পুলিশ থেকে কিছুতেই অব্যাহতি পাবো না।
আমার পরিচয় থেকেও পারবো না অব্যাহতি পেতে।
শিনজিয়াং ছেড়ে যেতে পারবো না আমি।
আমার সমূহ কাগজপত্রের বাজারদর
আমার চাইতে অনেক অনেক বেশি।
আমাকে দেখো,
আমার কাগজপত্রের চেয়ে গর্বিত আর কোন কিছুই নেই।
তাদের বিশ্বাসটা-
আমার চাইতেও বেশী
যে আমি একজন, উইঘুর।
I Believe
I believe
They say there are two “cannot-leaves”*
The Han Chinese can’t leave the minorities
The minorities can’t leave the Han
What a lovely slogan
What honeyed poetry
I believe
When the hotel refuses me
And I sleep in February 7 Square
The earth and the sky are the same
The stars are just as gorgeous
That fruit has no race
I believe
I speak good Chinese
In Chinese I clearly explain to the police
That I am Chinese
I believe that the hotel refusing Uyghurs
Has nothing to do with whether I speak Chinese
I believe
I can’t leave the police
I can’t leave my ID
I can’t leave Xinjiang
My papers are worth
More than myself
Facing me, nothing
Is prouder than my papers
They believe
More than I
That I’m Uyghur
আমি শিনজিয়াং থেকে এসেছি
দয়া করে আমায় এখানে তাঁবু খাটাতে দাও!
আমি কোন হোটেলকে বিপদে ফেলে দিতে চাচ্ছি না
আমার ত্বকে বিছানার চামড়া পুড়িয়ে ফেলতে পারি হয়ত,
এবং কলের পানিকে করে ফেলতে পারি কলুষিত- আমার ত্বকে;
ভয় হয়।
আমি শিনজিয়াং থেকে এসেছি।
এয়ারপোর্টে,
আমাকে সিক্যুরিটির পথে খালি পায়ে হেঁটে যেতে দাও দয়া করে।
খালি পায়ে মেষ তাড়ুয়া অভ্যাস আমার,
খালি পায়ে মাটি মাড়াবার অভ্যাস আমার,
ঘাসেরা আমার এ আদর আপন করে নেবে নিশ্চিত-
অগণন শস্য আমার তাবৎ কর্ষণে জানি অসুখী হবে না।
আমি শিনজিয়াং থেকে এসেছি।
আমার দিকে এমন সন্দেহের চোখে তাকিও না।
রান্নাঘরেই আমি আমার ছুরিটা রেখে এসেছি।
একজন অফিসারের হাতে দেখার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি
বন্দুকের আকার সম্পর্কে জানতাম না।
আমার পছন্দের অস্ত্র সবসময় নাশপাতি আর জমি খোঁড়ার জন্য রাখা ছোট্ট কুড়ালটা।
বোমা কাকে বলে?
এটা কি একটা নিরাশাক্লান্ত হৃদয় নয়?
আমি শিনজিয়াং থেকে এসেছি।
আমার হাত আর চরণ দুটো এই ভূমিকে
আনন্দে নাচিয়ে তোলার নেপথ্যে সৃষ্টি করা হয়েছিল।
আমার ঠোঁটের সৃষ্টি- গান গাইতে,
এ মাটির প্রশান্তির প্রার্থনায়-
আমার চোখেদের আজন্ম অভ্যাস ভালবাসার দীপ্তি ছড়ানো।
আমি শিনজিয়াং থেকে এসেছি।
আমার সম্ভ্রমকে কোন ঠাট্টা ভেবো না।
নৃত্যকে মনে কোরো না ভয়ে থরথর কোন দুর্বলচিত্ত,
গীতিকাব্যও সীমাহীন সহিষ্ণু নয় জেনে রেখো।
I Come from Xinjiang
Please let me camp out here
I don’t want to trouble the hotel
I’m afraid I’d burn the bed with my skin
and contaminate the water tap
I come from Xinjiang
at the airport
please let me go barefoot through security
I’m used to herding the sheep barefoot
I’m used to tilling the earth barefoot
the grass likes when I fondle it
the crops like when I trample them
I come from Xinjiang
Don’t look at me with doubting eyes
I left the knife in the kitchen
until I saw it in an officer’s hand, I never knew
the shape of a gun
my weapons of choice are the pear and the mattock
What is a bomb?
Isn’t it a hopeless heart?
I come from Xinjiang
My hands and feet were made to work the land
to dance
my mouth was made to sing
to pray for peace on earth
my eyes
are used to love-spreading light
I come from Xinjiang
Don’t treat my dignity like a joke
dance is not weak or cowardly
song is not endlessly patient
ছবি এবং তথ্যসূত্র:
⦁ The night is thick: Uyghur Poets Respond To The Disappearance Of Their Relatives; Darren Byler (supchina.com)
⦁ Uyghur Poetry in Translation: Perhat Tursun’s “Elegy”
⦁ Two Poems by Perhat Tursun: “Morning Feeling,” “Elegy”; JOSHUA L. FREEMAN
⦁ Three Poems By Detained Uyghur Poet TARIM; Josh Rudolph (China Digital Times)