আম্মা নদী
সবকিছু থাকি বার অইছি
বন্ধুত্ব নাশ অইল
পিরিত নাশ অইল
চুদাচুদিও ট্যাশ নায়
ভাই বইন ছাড়ছি
তান তান লগে কথা কওয়া ছাড়া দিন রাইত যায়
অনেক সমুন্দর গাং খাল হাকম পারইছি
আম্মারে পার অইতাম পাররাম না
আম্মা থাকি বারইছি
কিন্তুক তানরে ছাড়াইয়া যাইতাম পাররাম কই
হজ্ব যাত্রীর মত
হজ্ব যাত্রীর মত এ সফর
পরানের মদীনা মক্কায়
যমযম কূপের পাশে
পানি খাই ঢেঁকুর তুলি
বদ্দু আরব হই
বকরির পিছে
যাই
হেরা গুহায়
আসহাবে কাহাফের গর্তে
ঘুমাই
জগৎ সংসারে আমি কবি
জগৎ সংসারে আমি কবি
আমার কে বাপ কে মা
ভাই বইন নিত নিত ডাকি
মুই কারে রে বান্ধব কই
দেশো যাওয়া
দেশো যাওয়া এখটা সংগ্রামর নাম
এরে দেশর বায় যাওয়া খওয়া যায়
দেশো গেলে দেশরে ফাইন!
দেশর বায় যাওয়া মানে আফনার বায় যাওয়া
আফনার খোঁজে
লাউ কিত্তা হইরো খেত ফারইয়া
জেরুজালেম আরাকান অইয়া
বিদেশ
চউখর ঝাঁঝরির ভিত্রে কান্দন জমি রইছে
ঠান্ডায় কান্দন ফোঁটার আকার লইছে
কেউরে জড়াইলে ফোটাগুইন ঝরত
মাইয়ো মুখ দিলে ফোঁটাগুলা পড়ত
দেশো থাকলে কুনু মেয়ে হুত্তে দিত আমারে
দেশর কালা ফুড়িন্তর চকুত মেগ
কেউ বারিষা মাস আনত
আবু তাহের তারেকের প্রকাশিত বই: ফের্নান্দ পেসোয়ার নির্বাচিত কবিতা (অনুবাদ, ২০১৬), আইয়ো রেগো ময়না (কবিতা, ২০১৮), প্রকাশিতব্য বই: আম্মা নদী (কবিতা, ২০২০)
আপনার কাব্যগ্রন্থ ইউনিক
প্রিয় তারেক ভাই,
আপনার মেইল পেয়েছি। ধন্যবাদ পাণ্ডুলিপি পাঠানোর জন্য।
যেকোন নতুল লেখা পড়াই একটা অভিজ্ঞতা আমার জন্য। আসল কথা হলো, পড়ে শেষ করা গেল আপনার কবিতা। এবং আবার পড়বো হয়তো। একটা বিস্ময় তো কাজ করেছেই এই কবিতার বই পড়ার সময়। আপনার কবিতার প্রথম পাঠক বিস্মিত হবে নিশ্চয়ই। দ্বিতীয়বার পড়তে পারলে আমি একে কাটিয়ে উঠবো। কবিতা পড়ে আমি আসলে চমকে উঠতে চাই না, একটু ধ্যান চাই বোধ হয়।
আমি প্রকৃতপক্ষে যে চিন্তার লোক বা আমার যেরকম আর্ট কালচারের প্রতি অভ্যস্ততা বা স্কুলিং, আপনার লেখাগুলো তা না কোনভাবেই। এ শুধু আমি না, আরো আরো যারা বাংলায় লেখালেখি কারে, তাদের রেজিস্টারে কবিতার এই ভাষিক রূপ নাই বললেই চলে। তবে একদমই যে নাই তা বলা যাবে না। শুধু এর ভাষা না, চিন্তার সাথেও আমাদের স্বস্তিমূলক সম্পর্ক কম। এটা বলা যায়, নিজের ভাষার জন্য আপনার প্রস্তুতি অপার। তবে আমার হিসাবে ভাষা শেষ পর্যন্ত কবিতার টুলস হিসাবেই গত হয়। ভাষা জন্ম নেয়, মারা যায়, নতুন ভাষা জাগে, কবিতাটা রয়ে যায় শুধু। কতো মহৎ কবির ভাষা মৃত, এমনকি জীবিতদেরও। তাতে কী আর আসে যাচ্ছে? চিন্তা যাদের আলাদা, তারা যে ভাষাতেই লিখুক তাদের ভাষার অন্তরাত্মাটা কেমন যেনো অন্য রকম হয়ে যায়। কেমন হয় তা বলতে পারছি না এখন, তবে অনু্ভব করা যায়। চিন্তা ভাষাকে, ভাষা চিন্তাকে ছাপিয়ে ওঠে। আলাদা কোন জোরাজুরির ব্যাপর নাই। আপনার কাব্যগ্রন্থ ইউনিক। তবে ইউনিকনেস, নিরীক্ষা, নতুনত্ব কবিতার শেষকথা/ মহত্ব যেমন না, তেমন এগুলোই হয়তো আর্টকে এগিয়ে নিয়ে যায় বহুদূর। কবিকে ঠিকানাও দেয় মে বি।
আপনার কবিতার প্রতি আমার সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। আমার এমনই মনে হয়। তবে আমার এই সন্দেহের পোড়া মাটি যেকোন মহীরূহের বীজের জন্মকে বাঁধা দিতে পারে না। এটা আমি তীব্রভাবেই বিশ্বাস করি।
ভালো থাকবেন। আপনার কবিতার বইয়ের সাফল্য কামরা করি।
— মৃদুল মাহবুব।